সংক্ষিপ্ত

এই শুল্ক আরোপ মুদ্রাস্ফীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে পারে। যারফলে গড় মার্কিন পরিবারের বার্ষিক হাজার হাজার ডলার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা। বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজার উল্লেখযোগ্য মন্দার সম্মুখীন হয়েছে, ডাও, এসএন্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক সকলেই ক্ষতির মুখে।    

Donald Trump: দ্বিতীয় বারের জন্য মার্কিন মসনদে বসে একের পর এক কর্মকাণ্ডে সমলোচিত হয়েছেন তিনি বহুবার। সেসবের অবশ্য থোড়াই কেয়ার! ফের সমলোচনার মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার নতুন শুল্ক নীতি আরোপ করলেন তিনি। সমস্ত আমদানিজাত দ্রব্যের উপর ১০% বেসলাইন শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প।

পাশাপাশি বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপরেও উচ্চ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তাঁর এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্বের আর্থিক বাজারে তীব্র পতন ঘটে। সেই সঙ্গে যারা কয়েক দশক ধরে বাণিজ্য উদারীকরণের বিপরীতে যাওয়ার সতর্কতা করেছেন এদিন তাঁরাও সমালোচনায় উঠে আসেন বলে জানা গিয়েছে।

মার্কিন ভোক্তাদের উপর এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে যা মূলত একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই শুল্ক আরোপের ফলে গাঁজা এবং রানিং জুতা থেকে শুরু করে অ্যাপলের আইফোন সহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোজেনব্ল্যাট সিকিউরিটিজের মতে, অ্যাপল যদি তাদের অতিরিক্ত খরচ ক্রেতাদের উপর চাপিয়ে দেয়, তাহলে একটি উচ্চমানের আইফোনের দাম প্রায় ২,৩০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি ইতিমধ্যেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন। অটোমেকার স্টেলান্টিস কানাডা এবং মেক্সিকোতে অস্থায়ী ছাঁটাই এবং কারখানা বন্ধের ঘোষণা করে দিয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন উৎপাদন বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে জেনারেল মোটরস।

এই বিষয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন যে, ''এটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা পরিত্যাগের ইঙ্গিত দেয়।'' এরপরই কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। চিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ই প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপীয় বিনিয়োগ স্থগিত করার কথা জানিয়েছেন।

অর্থনীতিবিদদের মতে ,এই শুল্ক আরোপ মুদ্রাস্ফীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে পারে। যারফলে গড় মার্কিন পরিবারের বার্ষিক হাজার হাজার ডলার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজার উল্লেখযোগ্য মন্দার সম্মুখীন হয়েছে, ডাও, এসএন্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক সকলেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের আধিকারিকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে, মার্কিন উৎপাদন রক্ষা এবং নতুন রফতানি বাজার খোলার জন্য শুল্ক আরোপ করা জরুরি। তবে ট্রাম্প সমালোচকরা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা এবং ভোক্তা মূল্যের উপর এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স আবার আমেরিকায় উৎপাদন, বিশেষ করে ইস্পাত এবং ওষুধের মতো খাতে ও জাতীয় নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছেন।

সূত্রের খবর, আগামী ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে পারে এই শুল্ক নীতি। যা ভোক্তা এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান উভয়ের মধ্যেই অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। শুল্ক আরোপের ফলে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া সহ মার্কিন মিত্রদের বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে পণ্যের উপর শুল্ক চাপিয়ে দেওয়া এবং গাড়ি আমদানিতে নতুন শুল্ক আরোপের ফলে ক্রমেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।