সংক্ষিপ্ত

প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফরের পূর্বেই ট্রেড ওয়ারের ইঙ্গিত। হোয়াইট হাউসের পর ট্রাম্পও সোশ্যাল মিডিয়ায় 'পারস্পরিক শুল্ক' নীতির ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্ক: আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Modi) সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক ঘন্টা আগে 'পারস্পরিক শুল্ক' নিয়ে বড় বিবৃতি দিয়েছেন। এই বিবৃতি এমন সময় এল যখন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বাণিজ্য যুদ্ধ (Trade War) তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

ট্রাম্পের 'পারস্পরিক শুল্ক'র উপর জোর

বৃহস্পতিবার সকালে (আমেরিকান সময় ৬.৪৬ AM, ভারতীয় সময় ৫.১৬ PM) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Truth Social-এ লিখেছেন: THREE GREAT WEEKS, PERHAPS THE BEST EVER, BUT TODAY IS THE BIG ONE: RECIPROCAL TARIFFS!!! MAKE AMERICA GREAT AGAIN!!!

এই পোস্ট বুধবার দেওয়া তার বিবৃতিরই বিস্তার যেখানে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে আমেরিকা যেসব দেশ আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করে, তাদের উপর 'Tit for Tat' শুল্ক নীতি প্রয়োগ করবে।

হোয়াইট হাউসও করলো দাবি

হোয়াইট হাউস বুধবার জানিয়েছে যে ট্রাম্পের 'পারস্পরিক শুল্ক' পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই লাগু করা হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর আমেরিকা সফর: কি থাকবে মূল এজেন্ডা?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আমেরিকায় পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি দুই নেতার প্রথম বৈঠক।

  • ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি: ট্রাম্প ভারতকে "বাণিজ্যের বড় অপব্যবহারকারী দেশ" বলেছিলেন। ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম শুল্ক (Steel & Aluminium Tariff) নিয়ে আলোচনা হবে, যার উপর আমেরিকা ২৫% শুল্ক আরোপ করেছে। ভারত সম্প্রতি Tesla, Apple এবং Harley-Davidson-এর মতো আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক কমিয়েছে।
  • আমেরিকা থেকে ভারতীয়দের নির্বাসন (Deportation Issue): সম্প্রতি ১০৪ জন ভারতীয়কে আমেরিকা থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে, যাদের অনেককে হাতকড়া পরিয়ে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে ভারতে বেশ অসন্তোষ দেখা গেছে।
  • চীন এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল: ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা এবং সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে দুই দেশের কৌশল গুরুত্বপূর্ণ হবে।

 

ট্রাম্প এবং ভারত: বাণিজ্যে সংঘাতের ইঙ্গিত?

২০১৭-২০২১ সালে ট্রাম্পের শুল্ক কৌশল: ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যার ফলে আমেরিকার উৎপাদন ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ২০১৯ সালে আমেরিকায় উৎপাদন কর্মসংস্থান কমেছে, যদিও শিল্প উৎপাদনে মন্দা দেখা দিয়েছে। কানাডা, মেক্সিকো, ব্রিটেন এবং জাপানকে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছিল।

কি ট্রাম্প ২.০-তে আবার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করছেন?

ট্রাম্প সম্প্রতি ভারত, চীন এবং ব্রাজিলকে এমন দেশ বলেছেন যারা আমেরিকার ক্ষতি করছে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি আবার রাষ্ট্রপতি হলে ভারত সহ অনেক দেশের উপর আরও কঠোর শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

যাইহোক, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ট্রাম্পের সাক্ষাতের পর দেখার বিষয় ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্কে উন্নতি হবে, নাকি শুল্ক বিতর্ক আরও বাড়বে? কি ট্রাম্পের 'পারস্পরিক শুল্ক' নীতি ভারতের উপর প্রভাব ফেলবে? কি মোদীর ট্রাম্পের সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক এবার সব ঠিক করতে সক্ষম হবে।