সংক্ষিপ্ত
মার্কিন নির্বাসন: আমেরিকা থেকে ১১৯ জন ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে আমেরিকার একটি সামরিক বিমান আসছে। এটি শনিবার রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকা সফর শেষে ফিরে এসেছেন। তাই, ভারতে প্রেরিত অভিবাসীদের প্রতি আমেরিকার আচরণে কোনও পরিবর্তন আসবে কিনা, তা নিয়ে লোকেরা মনোযোগী। গতবার ভারতীয়দের হাতে হাতকড়ি এবং পায়ে শিকল পরিয়ে পাঠানো হয়েছিল। এ নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ হয়েছিল। সংসদ পর্যন্ত বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। সূত্র মতে, এবার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অভিবাসীদের ৫ গুণ বেশি খরচ করে সামরিক বিমানে পাঠাচ্ছেন ট্রাম্প
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে বেসামরিক বিমানের পরিবর্তে সামরিক বিমান ব্যবহার করছেন। এই বিমানগুলি যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্য এবং অস্ত্র সরবরাহের জন্য তৈরি। এগুলিকে অভিবাসীদের পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে আমেরিকান সরকারকে ৫ গুণ বেশি খরচ করতে হচ্ছে। একজন অভিবাসীকে পাঠাতে যত টাকা খরচ হচ্ছে, তাতে বিমানে ৫ টি ফার্স্ট ক্লাস টিকিট কেনা যাবে।
আমেরিকা সাধারণত বাণিজ্যিক চার্টার্ড ফ্লাইটে অবৈধ অভিবাসীদের নির্বাসিত করে। এগুলি নিয়মিত যাত্রীবাহী বিমানের মতো। এগুলিকে আমেরিকান অভিবাসন এবং সীমান্ত শুল্ক প্রয়োগকারী (ICE) দ্বারা পরিচালিত হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এবার এই কাজের জন্য দুটি C-17 এবং দুটি C-130E বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
সামরিক বিমানে প্রেরণে জনপ্রতি ৪ লক্ষ টাকার বেশি খরচ
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ICE চার্টারের তুলনায় সামরিক বিমান ব্যবহার অনেক ব্যয়বহুল। গুয়াতেমালার জন্য সাম্প্রতিক ১০ ঘন্টার সামরিক নির্বাসন ফ্লাইটের খরচ "প্রতি অভিবাসী কমপক্ষে ৪.০৭ লক্ষ টাকা"। একই রুটের জন্য আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একমুখী ফার্স্ট ক্লাস টিকিটের দাম প্রায় ৭৩,৮৮৬ টাকা। এভাবে দেখলে, প্রতি অভিবাসীর জন্য আমেরিকাকে পাঁচগুণেরও বেশি খরচ করতে হচ্ছে।
তুলনামূলকভাবে, ICE ফ্লাইটগুলি অনেক সস্তা। ICE-এর কার্যকরী পরিচালক টাই জনসন এপ্রিল ২০২৩ সালে জানিয়েছিলেন যে নির্বাসন ফ্লাইটের খরচ ১৩৫ জন নির্বাসিতের জন্য প্রতি ফ্লাইট ঘন্টায় $১৭,০০০ (প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা)। ফ্লাইটটি সাধারণত ৫ ঘন্টার। জনপ্রতি প্রায় ৫৪,০০০ টাকার বেশি খরচ হয়েছে।
অন্যদিকে, C-17 সামরিক বিমান উড়াতে প্রতি ঘন্টায় ২৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়। আমেরিকা থেকে ভারতের ফ্লাইটটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ ফ্লাইট। এতে ১২ ঘন্টারও বেশি সময় লাগে। এর ফলে একটি ফ্লাইটে ২.৮৮ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়।
কেন সামরিক বিমানে অভিবাসীদের পাঠাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
৫ গুণ বেশি টাকা খরচ করে ট্রাম্প কেন সামরিক বিমানে অভিবাসীদের পাঠাচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তর হল বার্তা। ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক বিমানে অবৈধ অভিবাসীদের পাঠিয়ে তার দেশের জনগণ এবং বিশ্বকে কঠোর বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্প বারবার অবৈধ অভিবাসীদের "বিদেশী" এবং "অপরাধী" বলে অভিহিত করেছেন, যারা আমেরিকায় "আক্রমণ" করেছে। হাতকড়ি এবং শিকলে বাঁধা অভিবাসীদের সামরিক বিমানে তোলার দৃশ্য দিয়ে ট্রাম্প এই ধরনের "অপরাধের" বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন।