সংক্ষিপ্ত

  • আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে করোনা
  • লকডাউনের কড়াকড়িতে শিথিলতা নিয়ে সতর্কতা
  • অল্প সময়ের মধ্যে ফের  চরম শিখরে পৌঁছবে সংক্রমণ
  • দেশগুলিকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'হু'

মহামারী  কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে গোটা বিশ্বে সংক্রমণের সংখ্যা ৫৬ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। দ্রুত সেই সংখ্যা পৌঁছচ্ছে ৫৭ লক্ষের গণ্ডি ছুঁতে। এখনও পর্যন্ত কোভিড ১৯ প্রাণ কেড়েছে বিশ্বের ৩ লক্ষ ৫২ হাজার মানুষের। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন না মেলা পর্যন্ত মারণ ভাইরাসকে কব্জা করা যাবে না বলেই মনে করছেন অধিকাংশ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু লকডাউনে থাকা দেশগুলি এবার নিজেদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবার তা শিথিল করার দিকে এগোচ্ছে। আর তাতেই অশনি সঙ্কেত দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'হু'। 

বিশ্বব্যাপী লকডাউন শিথিল করার প্রবণতা শুরু হয়েছে। আর তাতেই এই মহামারীর প্রকোপ দ্বিতীয় দফায় আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলেই আশঙ্কা করছে 'হু'। টানা লকডাউনের কারণে অনেক দেশেই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমেছে গত কয়েক সপ্তাহ।  ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রথম সারির করোনা আক্রান্ত দেশগুলির পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। জাপান, কোরিয়াতেও নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে সংক্রমণ। তাই আশার আলো দেখছিল বিশ্ব। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে তাই লকডাউন শিথিল করার পথে এগোচ্ছে বিভিন্ন দেশ। ভারতও সেই পথে এগিয়েছে। ইতিমধ্যে দেশে চতুর্থ দফার লকডাউন চললেও অনেক ক্ষেত্রেই বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। নিয়ন্ত্রত ভাবে দেশের মধ্যে  চালু করা হয়েছে রেল ও বিমান পরিষেবাও। বিশ্বজুড়ে তৈরি হওয়া এই  শিথিলতার কারণে করোনাভাইরাস আবার ছড়িয়ে পড়তে পাড়ে বলে সতর্ক করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনার তীব্রতা কমেছে দেখে যে সব দেশ কড়াকড়ি শিথিল করেছে, সেখানে অল্প সময়ের মধ্যে সংক্রমণ দ্বিতীয়বার চরম শিখরে পৌঁছতে পারে, এমন হুঁশিয়ারি দিচ্ছে  'হু'। তবে এই প্রবণতাকে 'সেকেন্ড ওয়েভ' বলতে নারাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বরং 'হু'-র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর মাইক রায়ান বলেছেন, ‘‘আমরা এখন সবে সংক্রমণের প্রথম ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছি। দ্বিতীয় ঝড়ের ঢের বাকি রয়েছে। এখন প্রথম ঝড়ের দাপট সামলানোটাই চ্যালেঞ্জের।’’ তিনি সতর্ক করে জানিয়েছেন, আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিম্নগামী দেখে বিশ্বের দেশগুলি লকডাউন শিথিল করলে ফল ভুগতে হতে পারে আগামী দিনে।

বর্তমান বিশ্বে করোনা আক্রান্তের দুই-তৃতীয়াংশই ইউরোপের। আবার কেবল মার্কিন মুলুকেই সংক্রমিতের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা এক লক্ষের বেশি। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আমেরিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার করোনা পরিস্থিতি নতুন করে চিন্তার ভাজ ফেলছে। বিশেষত ব্রাজিল ও ভারতে ক্রমেই ছড়াচ্ছে সংক্রমণ।  বিশ্বে করোনা সংক্রমণের নতুন হটস্পট হয়ে উঠেছে লাতিন আমেরিকা। আর এই পরিস্থিতিতেই স্পেন, ইতালি, গ্রিস, ফ্রান্সের মত ইউরোপের দেশগুলি লকডাউন শিথিল করার পথে এগিয়েছে। জার্মানিতে ফের শুরু হয়েছে ফুটবল লিগ। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনেও চলাচলের ওপর কড়াকড়ি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবে কমান হয়েছে কারফিউ.ের সময়। দক্ষিণ কোরিয়ায় চলতে শুরু করেছে গণপরিবহণ।  পূর্ব ঘোষণা মাফিক বেথলেহেমের 'চার্চ অফ দ্য নেটিভিটি' খুলে দিয়েছে প্যালেস্তাইন। এই পরিস্থিতিতেই 'হু' দেশগুলিকে মনে করিয়ে দিয়েছে , সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি উধাও হয়নি। এর ফল যে খুব আশাব্যঞ্জক নাও হতে পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।