সংক্ষিপ্ত
ব্যপক বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে ভয় সৃষ্টি করার জন্যও মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বেড়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে।
ক্রমশ ফাঁসির কলে পরিনত হচ্ছে ইরান। দু'টি মানবাধিকার গোষ্টীর তত্ত্ব অনুসারে ২০২২ সালে ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। এরই মধ্যে গতবছর মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিল প্রশাসন। ব্যপক বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে ভয় সৃষ্টি করার জন্যও মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বেড়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। নরওয়ে ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (IHR) এবং প্যারিস ভিত্তিক টুগেদার এগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি (ECPM) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ২০২২ সালে ইরানে কমপক্ষে ৫৮২টি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২১-এও এই সংখ্যা ছিল ৩৩৩টি।
২২ বছর-বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ঠিকমতো হিজাব না পড়ার অপরাধে ইরানের নীতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয় তাঁকে এবং পুলিশি হেফাজতেই মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুঁসে ওঠে ইরানের মহিলারা। এই বিক্ষোভেও চারজনকে ফাঁসি কাঠে ঝুলিয়েছিল ইরান সরকার। আইএইচআর পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগাদ্দাম বলেছেন যে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া প্রতিবাদ-সম্পর্কিত মৃত্যুদণ্ড নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তবে ইরান এখনও বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখানোর জন্য অন্যান্য অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে। তাঁর কথায়,'বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পক্ষে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা কঠিন করে তুলেছে। ক্ষতিপূরণ দিতে এবং জনগণের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, কর্তৃপক্ষ অরাজনৈতিক অভিযোগের জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।'
প্রসঙ্গত, ঠিকভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' ইরানের ২২ বছরের তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ইরানি পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবারের সঙ্গে তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। যথাযথ ভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' নীতি পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন আমিনি। কয়েকজন স্থানীয় মহিলা আমিনির পথ আটকে হিজাব পরার জন্য বারবারই চাপ দিতে থাকে। রাজী না হওয়ায় বাড়তে থাকে বাগবিতন্ডা। ধীরে ধীরে তর্কাতর্কি ধস্তাধস্তির রূপ নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইরানি পুলিশ। হিসাব নেই দেখে তরুণীকে 'উচিত শিক্ষা' দিতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমিনিকে টানতে টানতে গাড়িতে তোলার পর পুলিশের গাড়িতেই তাঁকে বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিনির পরিবার জানতে পারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তরুণীকে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কোমায় চলে যান তরুণী। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ২২ বছরের আমিনি। পরিবারের অভিযোগ থানায় নিয়ে গিইয়ে বেধরক মারধর করা হয় আমিনিকে। হিজাব পরা শেখানোর নামে মেরে ভেঙে দেওয়া হয় মাথার খুলি। যদিও পুলিশের তরফ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে যাবতীয় অভিযোগ। তাঁদের দাবি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল তরুণী এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের এই যুক্তি কোনওভাবেই মানতে রাজী নন আমিনির পরিবার।
আরও পড়ুন -
বিশ্ব সমস্যা সমাধানে দিল্লিতে বসছে বিশ্ব বৌদ্ধ আলোচনা সভা
মুসলিমদের জন্য ৪% কোটা বাতিল করার কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পিটিশন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট