পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করেও লাভ হল না, অবশেষে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতেই নেওয়া হল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে

স্টর্মি ড্যানিয়েলস, আসল নাম স্টেফানি ক্লিফর্ড, তিনি আমেরিকার বিখ্যাত পর্ন তারকা যাঁর প্রেমে মজেছিলেন স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাও আবার বিবাহিত থাকাকালীন। সেসময় তিনি ছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের আগে তাঁর এই কীর্তি ফাঁস হয়ে গেলে প্রভূত বিপদে পড়বেন, এই ভয়ে সেই পর্ন তারকাকেই মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাঁকে দিতে হয়েছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। সেই অপরাধের জন্য আত্মসমর্পণ করার আগেই গ্রেফতার করা হল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। মঙ্গলবার রাতে নিউ ইউর্কের ম্যানহাটন আদালতে আত্মসমর্পণের কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আদালতের নির্দেশে আগেই আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে হেফাজতে নিল পুলিশ। এর পর শুরু হয়েছে শুনানি।

পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির অনুগামীদের দাবি, পুরোটাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ট্রাম্পের ভারতীয় সময় রাত পৌনে ১২টা নাগাদ নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল। কিন্তু বিচারক নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশ সূত্রের খবর।

এই পরিস্থিতিতে, দেশের রাজধানী জুড়ে ট্রাম্প-ভক্তদের দ্বারা ব্যাপক হিংসা এবং অশান্তির সৃষ্টি হতে পারে, সেই কথা মাথায় রেখে সমগ্র নিউ ইয়র্কে পুলিশি নিরাপত্তা দারুণ জোরদার করা হয়েছে। রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হলে তাঁর অনুগামীরা হিংসাত্মক প্রতিবাদের পথে হাঁটতে পারেন বলে আশঙ্কা আমেরিকার সাংবাদমাধ্যমের একাংশেরও। ইতিমধ্যেই নিউ ইয়র্কের কয়েকটি রাস্তায় ট্রাম্প সমর্থকরা জমায়েত হতে শুরু করে দিয়েছেন। যদিও, গ্রেফতার হওয়ার পর ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি মোটেই দোষী নন। কিন্তু,  তাঁর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন তাঁর বিরোধীরাও। অন্য দিকে, ট্রাম্পের আইনজীবী হাজিরার ভিডিয়ো প্রকাশ্য আনা নিষিদ্ধ করতে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন।

পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের দাবি, ২০০৬ সালে তিনি এবং ট্রাম্প শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০০৬ সালে নেভাদায় তারকাদের গলফ প্রতিযোগিতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়।  সেই সময় ট্রাম্প স্টর্মিকে নামকরা টিভি তারকা বানিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারপর দুজনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এর পর ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাঁর মুখ বন্ধ রাখতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার আমেরিকান ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ঘুষ মামলায় গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগ অভিযোগের তদন্ত করেছিলেন। তিনি ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য। ফলে ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের’ অভিযোগ জোরালো হয়েছে।