সংক্ষিপ্ত
তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের নেপথ্যে ছিলেন যে মানুষটি সেই ঐতিহাসিক কার্টারের বাড়ি দর্শকদের পরিদর্শনের জন্য সম্প্রতি খুলে দেওয়া হলো শনিবার। শোনা যায় মিশরের ফারাওদের নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে চালাতে তিনি সেখানেই থেকে গেছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
৪ঠা নভেম্বর ছিল তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের ১০০ বছর পূর্তি। ব্রিটিশ ইজিপ্টোলজিস্ট হাওয়ার্ড কার্টার এবং তার দল ১৯২২ সালে 'তুতেনখামেন' লেখা বন্ধ দরজা থেকে প্রথম তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কার করেছিলেন। শোনা যায় তুতেনখামেন লেখা দরজায় পৌঁছনোর আগে একটি তীর চিহ্ন দেখতে পান তারা। সেই তীর চিহ্ন বরাবর এগোতে এগোতেই কার্টারের দল অন্ধকারে পান ১২ টা সিঁড়ি নেমে গেছে এক অজানা এক পাতাল গহ্বরে ।সাহস নিয়ে সেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে যেতেই চোখে পরে সৌধে ঢোকার বিশাল এক ফটক । সেই ফটক ভেঙে সৌধে প্রবেশ করেই তারা বুঝতে পারেন যে তারা চলে এসেছেন ইতিহাসের অন্যতম এক অজানা পরতে।যা তুলে ধরতে পারে মিশরের ইতিহাসের অজানা নানান রহস্য।এই রহস্য উন্মোচনেই কার্টারের দল সেখানে থেকে গেলেন প্রায় আরও ১০ বছর। এই ১০ বছর ধরে চলে নানা কাটা-চেরা , বিশ্লেষণ ও প্রন্ততাত্বিক গবেষণা। এর পরের গল্পটা হয়তো প্রায় সকলেরই জানা। ৫০০০ টিরও বেশি প্রত্ন বস্তু সংরক্ষণ করে সেই সংরক্ষিত বস্তুগুলি নিয়ে সেখানে চলতে শুরু হয় নানান প্রত্নতাত্বিক পড়াশুনা। কিন্তু ভাবছেন এই গল্প আপনাদের কেন বলছি ? আসলে এই পুরো ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন যে মানুষটি সেই ঐতিহাসিক কার্টারের বাড়ি দর্শকদের পরিদর্শনের জন্য সম্প্রতি খুলে দেওয়া হলো শনিবার। শোনা যায় মিশরের ফারাওদের নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে চালাতে তিনি সেখানেই থেকে গেছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। এই মানুষটির অপরিসীম অবদানকে স্মরণ করতেই সম্প্রতি তার বাসস্থানকে মিউজিয়ামের আকারে খুলে দেওয়া হলো দর্শনার্থীদের জন্য।
ঐতিহাসিক কার্টার মিশরে গবেষণা শুরু করেছিলেন ১৯০৭ এ। তিনি প্রধানত ব্রিটেন থেকেই যাতায়াত করতেন তখন। কিন্তু ১৯১১ নাগাদ তিনি ভাবেন মিশরেই স্থায়ীভাবে বাসস্থান গড়ার কথা। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। ১৯১১ তে একটি বাড়ি কিনে মিশরেই চিরদিনের মতো থেকে গেলেন এই বিখ্যাত ঐতিহাসিক।১৯৩৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি বসবাস করতেন ওই বাড়িতেই। নয় বছরের রাজত্বকালে তুতেনখামেন ঠিক কি কি করেছিলেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা তিনি দিয়েছিলেন তার লেখা বেশ কিছু জার্নালে।
বালক রাজার ৩০০০ বছরের পুরোনো সমাধি পুনরুদ্ধার উপলক্ষ্যে সম্প্রতি এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ওই উপত্যকায়। এবং সেই উপলক্ষ্যে আবিষ্কারের ১০০ তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য শুক্রবার ভ্যালি অফ টি কিংস এ জড়ো হন বেশ কিছু সাধারণ মানুষ। তাদের উদ্দেশ্যেই মূলত উন্মুক্ত করা হয় কার্টারের বাড়িটি। তারা পরিদর্শন করেন ঐতিহাসিক কার্টারের বাড়ি। বাড়িটির কেন্দ্রীয় হল, অধ্যয়ন ঘর এবং তার ফটোগ্রাফিক গবেষণাগারটি এখনও পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে । এবং তিনি যে যে আইটেমগুলি নিজের সংগ্রহে রেখেছিলেন সেগুলি ১০০ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে মিশর সরকারের তরফ থেকে।
তরুণ ফারাও তুতেন খামেনের প্রাচীন সমাধি ও তার মধ্যে রাখা ঐশ্বর্য্যপূর্ণ শিল্পকর্মগুলো কোথাও আজও মুগ্ধ করে বর্তমান প্রজন্মকে। মিশরীয় পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রকের সহযোগিতায়, এই সৌধ মেরামত করার ভার এক ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টকে দেওয়া হয়েছিল এবং আদিনা লেই সাভিন ফ্যামিলি ট্রাস্ট দ্বারাও এটি সমর্থিত ছিল।মিশরে আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের মতে, দুই দেশের কৌশলগত জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মিশরের সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য আমেরিকার সমর্থন।
আরও পড়ুন
ঠাকুমার গর্ভে নাতনির জন্ম ,মেক্সিকোর হক পরিবারের এই ঘটনা ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়
রাশিয়ার কোস্ট্রোমা শহরের এক ক্যাফেতে ভয়াবহ আগুন, নিহত ১৫ , আহতের সংখ্যাও ৭
এলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স তাদের প্রথম স্যাটেলাইট উত্থাপন করলো কক্ষপথে