সংক্ষিপ্ত

বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, হিমালয় অঞ্চলে 'যেকোনও সময়ে' একটি বিরাট বড় ভূমিকম্প আঘাত হানবে, কারণ, ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি উত্তর দিকে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ তৈরি হবে।

ভারত এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সীমানার প্রায় মাঝখানে অবস্থান করছে নেপাল। প্রায়শই ভূমিকম্পের কারণে কেঁপে ওঠে ভারতের উত্তরে এবং হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট দেশ। শুক্রবার রাতে আবার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পার্বত্য দেশটি, শনিবার সকালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি নজরে এসেছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২৮ জন মানুষ মারা গেছেন, বহু অঞ্চল একেবারে যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে, এখানেই শেষ নয়, শুক্রবারের পরেও ভয়ঙ্কর আশঙ্কার বার্তা দিলেন ভূবিজ্ঞানীরা। 

শুক্রবার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে নেপাল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৪। গতকাল, রাত ১১টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ ভূকম্পন অনুভূত হয়। কলকাতা, বিহার, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি- এনসিআর-সহ প্রায় সমগ্র উত্তর ভারত জুড়ে এই ভূমিকম্প টের পাওয়া গেছে। এরপরেও, ভূ- বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, নেপালের কেন্দ্রীয় বেল্টটি বর্তমানে সক্রিয়ভাবে শক্তি নির্গমন স্থল হয়ে রয়েছে। এই কারণে, মানুষকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। 

আগামি দিনে, অথবা , খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নেপালে বিরাট বড়সড় ‘মেগা’ ভূমিকম্প আসতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সিসমোলজিস্ট অজয় পাল, যিনি আগে হিমালয়ান জিওলজির ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউটে কাজ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের ডোটি জেলার নিকটবর্তী অঞ্চল। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে, অর্থাৎ, ঠিক প্রায় ১ বছর আগেই এই জেলাতে একটি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেই কম্পনের জেরে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছিল। 

বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, হিমালয় অঞ্চলে 'যেকোনও সময়ে' একটি বিরাট বড় ভূমিকম্প আঘাত হানবে, কারণ, ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি উত্তর দিকে সরে যাওয়ার  সঙ্গে সঙ্গেই ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ তৈরি হবে। 

প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মিলিয়ন বছর আগে, ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল বলেই ভারতীয় প্লেটটি ভারত মহাসাগর থেকে উত্তর দিকে সরে গিয়ে হিমালয় পর্বত তৈরি হয়েছিল।

বিজ্ঞানীদের মতে, হিমালয়ের নীচে চাপ তৈরি হচ্ছে,  কারণ ভারতীয় প্লেট তার উত্তর দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে এর বিরোধ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে , হিমালয়ের উপর চাপ সম্ভবত এক বা একাধিক বড় ভূমিকম্পের কারণ হবে। রিখটার স্কেলে যে কম্পনের মাত্রা ৮ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

তবে ঠিক কবে, অথবা কত বছর পরে এত বড় ভূমিকম্প ঘটবে, তা সঠিকভাবে অনুমান করার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনও উপায় নেই।

শুক্রবার রাতে নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্প, টের পেল কলকাতাও

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।