সংক্ষিপ্ত

ইয়েমেনের এক নাগরিকের হত্যার অভিযোগে ফাঁসির মুখোমুখি ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়া। তাঁর সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে ইরান। ইরানি কর্মকর্তারা প্রিয়ার সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

ইয়েমেনের এক নাগরিকের হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়া বর্তমানে সানার জেলে বন্দী। এবার এই মামলায় ভারতীয় নার্স নিমিষা প্রিয়াকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান। একজন ইরানি আধিকারিক বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন যে তেহরান এই বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সামনে উত্থাপন করবে। তিনি জানিয়েছেন, এই মামলায় তারা প্রিয়ার সর্বোচ্চ সহায়তা করবেন। এই মুহূর্তে প্রিয়ার মা প্রেমা কুমারী ইয়েমেনের রাজধানী সানায় রয়েছেন এবং তিনি মেয়ের জীবন বাঁচাতে ভারত সরকার ও জনগণের কাছে আবেগঘন আকুতি জানিয়েছেন।

কে এই নিমিষা প্রিয়া?

নিমিষা কেরালার পলক্কড় জেলার কোলেনগোড়ের বাসিন্দা। ২০০৮ সালে তিনি তার কেরিয়ার শুরু করেন এবং ইয়েমেনে চলে যান। ২০১১ সালে তিনি টমি থমাসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ইয়েমেনে নার্স হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার স্বামী ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। কিছুদিন পর স্বামী-স্ত্রী মিলে নিজেদের ক্লিনিক খোলার পরিকল্পনা করেন, কিন্তু এর জন্য তাদের স্থানীয় কারও সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। এর জন্য তারা ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি প্রিয়া এবং তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।

মাহদি নাকি প্রিয়ার আস্থার সুযোগ নিয়ে ক্লিনিকের আয় বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি প্রিয়াকে তার স্ত্রী বলে দাবি করে জাল দলিল তৈরি করেন এবং তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি প্রিয়ার সব দলিলও জব্দ করে নেন, যার ফলে ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধের সময় তিনি আটকা পড়েন।

কেন হলো ফাঁসির আদেশ?

২০১৭ সালে প্রিয়া এবং আরেকজন নার্স তাদের দলিল ফেরত পেতে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদিকে অচেতন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ দেওয়ার ফলে মাহদির মৃত্যু হয়। এরপর তারা ভয় পেয়ে যান এবং অভিযোগ অনুযায়ী তারা মৃতদেহ কেটে জলের ট্যাঙ্কিতে লুকিয়ে রাখেন। এরপর ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রেপ্তার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ২০২০ সালে একটি নিম্ন আদালত প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং ইয়েমেনের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় পরিষদ ২০২৩ সালের নভেম্বরে রায় বহাল রাখে।

প্রিয়ার মা’র আকুতি

প্রিয়ার মা বর্তমানে ইয়েমেনে রয়েছেন, মাহদির পরিবারের সঙ্গে 'ব্লাড মানি' প্রদানের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করার জন্য আলোচনা করছেন, যা ইয়েমেনি আইন অনুযায়ী অনুমোদিত ক্ষতিপূরণ। নিমিষার মা তার মেয়ের জীবন বাঁচাতে ভারত সরকার এবং জনগণের কাছে আবেগঘন আকুতি জানিয়েছেন এবং মেয়ের জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্য চেয়েছেন।