সংক্ষিপ্ত
সূত্র জানিয়েছে এদিন পোখরা উপত্যকায় বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল। ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণের পরই দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে। চিনের সহায়তায় নির্মিত নেপালের তৃতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি মাত্র কয়েকদিন আগে উদ্বোধন করা হয়েছিল।
ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী নেপাল। সেদেশের পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে ৭২ আসনের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভেঙে পড়ে। প্রত্যেক যাত্রীরই মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। নেপাল এভিয়েশন অথরিটির এক সূত্র জানিয়েছে বিমানটি এটিআর ৭২ টার্বো ক্রপ ভার্সনের প্লেন ছিল। এটির গতিবেগ ছিল সর্বাধিক ৫০০ কিমি প্রতি ঘন্টা। ইয়েতি এয়ারলাইন্স সবচেয়ে পুরোনো বিমানগুলি ব্যবহার করত।
যাত্রীবাহী বিমানটি অবতরণের মাত্র দশ সেকেন্ড আগে ভেঙে পড়ে বলে জানা গেছে। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) কর্মীদের মতে, পোখারার রানওয়ে পূর্ব-পশ্চিম দিকে তৈরি। প্রাথমিকভাবে, পাইলট আগে অবতরণের জন্য অনুরোধ করেছিলেন এবং অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে পাইলট পশ্চিম দিকে অবতরণের অনুমতি চাইলে ফের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু অবতরণের দশ সেকেন্ড আগে বিমানটি আচমকা দুর্ঘটনার শিকার হয় ও ভেঙে পড়ে।
সূত্র জানিয়েছে এদিন পোখরা উপত্যকায় বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল। ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণের পরই দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে। চিনের সহায়তায় নির্মিত নেপালের তৃতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি মাত্র কয়েকদিন আগে, ২০২৩ সালের পয়লা জানুয়ারি তারিখে উদ্বোধন করা হয়েছিল। উদ্ধার অভিযান চলছে এবং বিমানবন্দর আপাতত বন্ধ করা হয়েছে।
সরকারী তরফে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ
মর্মান্তিক ঘটনার পর, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবি লামিছনে বিমান দুর্ঘটনার কারণ বুঝতে এবং উদ্ধার অভিযান পর্যবেক্ষণ করতে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে পৌঁছন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পোখরার উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে দুঃখপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী দাহাল। এই বিষয়ে নেপাল ক্যাবিনেট এমারজেন্সি বৈঠক ডাকে। সেখানে উদ্ধারকাজের প্রতিকূলতা ও বিমান দুর্ঘটনার পিছনে টেকনিক্যাল কারণ থাকার সম্ভাবনার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়।
নেপাল সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ, নেপাল পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং স্থানীয়রা আগুন নেভাতে কাজ করছে।
ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য এম সিন্ধিয়া বলেছেন, নেপালে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, বিমান দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নেপালের রেকর্ড সবচেয়ে খারাপ। গত ১২ বছরে নেপালে আটটি বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৬৬ জনেরও বেশি মানুষ এখানে মারা গেছে। প্রকৃতপক্ষে, এখানকার খারাপ আবহাওয়া এবং পাহাড়ের মাঝখানে নির্মিত প্রতিকূল এয়ারস্ট্রিপ এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।