সংক্ষিপ্ত

World News: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা চালিয়েছিলো মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টার। তাদের গবেষাণাতেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পিউ রিসার্চ সেন্টারের জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যে বর্তমানে ধর্

World News: ধর্ম নিয়ে দেশে-দেশে হানাহানি। প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে, টিভির পর্দায় ভেসে ওঠে ধর্ম নিয়ে টানাপোড়েনের ছবি। মারধর, হুমকি, খুন কতকিছুই না ঘটছে। কিন্তু এসবের মধ্যে আপনি কী জানেন ধর্ম সংকটে ভুগছে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ? তবে এখানে মানুষ বলাটা ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত হবে তা হলফ করে বলা না গেলেও বিশ্বের অধিকাংশ ধর্মই এখন ভুগছে ধর্মসঙ্কটে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা চালিয়েছিলো মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টার। তাদের গবেষাণাতেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পিউ রিসার্চ সেন্টারের জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যে বর্তমানে ধর্মান্তরের ফলে বৌদ্ধ ও খ্রিস্ট ধর্ম ব্যাপক সঙ্কটের মুখে। জানা গিয়েছে, মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক পিউ রিসার্চ সেন্টারের তরফে বিশ্বের প্রায় ৩৬টি দেশের ৮০ হাজার মানুষের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিলো। সেই সমীক্ষার রিপোর্টেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পৃথিবীতে ক্রমেই বাড়ছে কোনও ধর্মে বিশ্বাস না করা এবং ধর্মীয় কোনও সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত না থাকা মানুষের সংখ্যা।

মার্কিন রিপোর্টে আরও দাবি, এই ধর্ম পরিবর্তনের গ্রাফচিত্র পৃথিবীর এক এক দেশে একেক রকম। কারণ, সমীক্ষা উঠে এসেছে যে, ভারত ও ইজরায়েল, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ডের ৯৫ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন তারা এখন যে ধর্মে আছেন ছোটো থেকে সেই ধর্মেই বেড়ে উঠেছেন। ফলে এই দেশগুলিতে ধর্মত্যাগের ঘটনা বিরল বললেই চলে। তবে সব থেকে বেশি ধর্ম ত্যাগের ঘটনা ঘটছে- পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা। যেমন- দঃ কোরিয়ায় ৫০ শতাংশ নেদারল্যান্ডসে ৩৬ শতাংশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৮ শতাংশ ও ব্রাজিলে ২১ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষরা তাঁদের শৈশবের ধর্ম পরিবর্তন বা ত্যাগ করে ফেলেছেন।

সবথেকে মজার বিষয় হল- সমীক্ষা যে সমস্ত দেশের নাগরিকরা শৈশবের ধর্মের সঙ্গে আর যুক্ত নন, তাঁরা নিজেদেরকে নাস্তিক বা অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে সমাজে পরিচয় দেন। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে সুইডেনের ২৯ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক খ্রিস্ট ধর্মে বেড়ে উঠলেও এখন তাঁরা নিজেদেরকে নাস্তিক বা অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে সমাজে পরিচয় দেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের আরও দাবি, ধর্ম সঙ্কটে খ্রিস্ট ধর্ম একা নয়। পৃথিবীতে কমছে বৌদ্ধ ধর্মের সংখ্যাও। জাপানের ২৩ শতাংশ, দঃ কোরিয়ার ১৩ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক জানিয়েছেন, তাঁরা এখন আর ছোটোবেলার ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নেই। আগে বৌদ্ধ থাকলেও এখন তাঁরা নাস্তিক। জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহন ও ত্যাগের অনুপাত হল- ১১.৭.১।

তবে ধর্মানন্তর বা ধর্ম থেকে দূরে সরে যাওয়া মানুষের পাশাপাশি দঃ কোরিয়ার ৯ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক জানিয়েছেন, তাঁরা ছোটোবেলা থেকে কোনও ধর্মে বিশ্বাস না করলেও এখন একটি ধর্মের প্রতি তাঁরা বিশ্বস্ত। সিঙ্গাপুরে এই হার হল ১৩ শতাংশ, দঃ কোরিয়ায় ১১ শতাংশ, দঃ আফ্রিকায় ১২ শতাংশ মানুষ তাঁদের ধর্ম পরিবর্তন করেছেন।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের আরও দাবি, খ্রিস্ট ধর্ম হল পৃথিবীর একক বৃহত্তম ধর্ম। তারপরেই প্রভাবশালী ধর্ম হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইসলাম ধর্ম। এই ধর্ম পৃথিবীর ছয়টি দেশ- বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, মালয়শিয়া, নাইজেরিয়া, টিউনেশিয়াতে সবথেকে বেশি প্রভাবশালী। বৌদ্ধ ধর্ম জাপান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, দঃ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডে। হিন্দু ও ইহুদি ধর্মের লোক সবথেকে বেশি রয়েছে ভারত ও ইজরায়েলে।

তবে এই ধর্ম পরিবর্তনকারীদের সবথেকে বড় সুবিধা হল, তাঁরা কোনও ধর্মে বিশ্বাস না রেখে নিজেদের নাস্তিক ঘোষণা করছেন। যদিও এই ধর্ম ত্যাগ বা ধর্ম পরিবর্তন ধর্মীয় ভূখণ্ড পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছে গবেষকরা। আর এই প্রবণতার হার বাড়ছে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।