সংক্ষিপ্ত
পুতিনের গলায় যুদ্ধের অবসানের বার্তা কি নেহাতই কোনও কৌশল? নাকি চাপের মুখে এবার সুর নরম করতে বাধ্য হচ্ছে রাশিয়া?
বুধবার মার্কিন সফরে গিয়ে জো বাইডেনের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে চলে দীর্ঘক্ষণের বৈঠক। মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দেন,'রাশিয়ার কাছে মাথা নত করবে না ইউক্রন।' এই ঘটনার কিছু সময় পরই সুর নরম করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবারই পুতিন জানিয়েছেন 'যুদ্ধের অবসানই লক্ষ্য'। উল্লেখ্য এর আগেও যুদ্ধ শেষ করার বার্তা দিয়েছিলেন পুতিন। কিন্তু তারপরেই আবারও ইউক্রেন অভিযানের গতি বাড়িয়েছিল রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের গলায় যুদ্ধের অবসানের বার্তা কি নেহাতই কোনও কৌশল? নাকি চাপের মুখে এবার সুর নরম করতে বাধ্য হচ্ছে রাশিয়া?
গত সেপ্টেম্বর মাসে সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বার্তা দিয়েছিলে 'যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ শেষ করার'। কিন্তু তারপরই ঠিক উল্টো কাজ করতে দেখা যায় রাশিয়াকে। আরও তীব্র হতে থাকে যুদ্ধের গতি। এই ঘটনার তিন মাসের মাথায় ফের একবার যুদ্ধ শেষ করার কথা বললেন পুতিন। শুক্রবার পুতিন বলেন, 'যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য নয়। এই যুদ্ধ শেষ করতে আমরা যত তারাতারি সক্রিয় হব, ততই ভালো। আমরা চাই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে।' উল্লেখ্য পুতিনের এই মন্তব্যের কয়েক ঘন্টা আগেই মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়া নতি স্বীকার না করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। অন্যদিকে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনের পাশেই থাকবে তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন জো বাইডেন। শুধু তাই নয় যুদ্ধের জন্য সরাসরি পুতিনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন বাইডেন। এই ঘটনার একদিনের মধ্যেই অন্য সুর সোনা গেল রুশ প্রেসিডেন্টের গলায়।
বুধবারই হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক চলে জেলেনেস্কির। আমেরিকা যে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে এদিন তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন বাইডেন। প্রসঙ্গত, আগেই ইউক্রেনকে ১৮৫ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। বুধবার 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর' তা আরও একবার স্পষ্ট করেন বাইডেন। এই আবহে মার্কিন কংগ্রেসে দাড়িয়ে,'ইউক্রেন কখনও রাশিয়ার কাছে মাথা নত করবে না। মস্কোর কাছে আত্মসমর্পণ করবে না', বলে হুঙ্কার দিলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। পাশাপাশি এদিন মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দিতে গিয়ে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন জেলেনেস্কি। মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে জেলেনেস্কি জানান,'আমেরিকার থেকে পাওয়া অর্থ কোনও অনুদান নয়। বরং বিশ্ব নিরাপত্তার স্বার্থে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে করা বিনিয়োগ।'
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। দীর্ঘ ৩০০ দিন কাটলেও মাথা নোয়াতে রাজি নয় ইউক্রেন। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করতে বিদেশ সফরে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি। বুধবার দুই রাষ্ট্র নেতার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। এই বৈঠকের পরই বড় ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান,'প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কির সঙ্গে দেখা করে আমি অভিভূত। যুদ্ধ চলাকালীনও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল বহুবার। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আলাপচারিতা সত্যিই ফলদায়ী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর তা জেলেনেস্কিকে আমরা জানিয়েছি।'
আরও পড়ুন -
আচমকা আমেরিকা সফরে জেলেনস্কি, রুশ যুদ্ধবিমানের হামলা এড়াতে যাত্রাপথে কড়া নজরদারি নেটোর