সংক্ষিপ্ত
জঙ্গলের ভাঙা ডালপালা আর শুকনো পাতার ঝোপঝাড়ের ভেতর থেকে তীক্ষ্ণ আওয়াজ আসতেই সতর্ক হন ভিক্টোরিয়া। তারপরেই তিনি খুঁজে পান কালো রঙের জীবটিকে।
এ যেন সত্যজিৎ রায়ের লেখা ‘বৃহচ্চঞ্চু’ গল্পের ছোটোখাটো প্রতিরূপ! জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন রাশিয়ান নাগরিক ভিক্টোরিয়া। হঠাৎ ভাঙা ডালপালা আর শুকনো পাতার ঝোপঝাড়ের ভেতর থেকে একটা তীক্ষ্ণ আওয়াজ শুনেই থেমে গেলেন তিনি, ঝোপঝাড়ের ভিড়ের মধ্যেই মাটির ওপর চাপা পড়ে ছিল একটি কালো রঙের ছোট্ট জীব, আয়তনে ভিক্টোরিয়ার হাতের তালুর সমান। সেটিকে সযত্নে হাতে তুলে নেন রাশিয়ান মহিলা।
আগে থেকেই তাঁর বাড়িতে একটি রটউইলার প্রজাতির কুকুর মজুত ছিল। এবার কালো রঙের প্রাণীটিকে বিড়ালছানা ভেবে আদরে স্নেহে বড় করতে লাগলেন ভিক্টোরিয়া। বিড়ালছানা খাবার খায় এবং বড় হতে থাকে। আকারে সে বেশ হৃষ্টপুষ্ট, হাবেভাবে স্ফূর্ত। যত দিন যেতে থাকে, তার সেই স্ফূর্তি ততই তেজ-এ পরিণত হতে পারে। আদুরে বিড়ালছানা একটি তেজি বড়সড় প্রাণীতে পরিণত হয়।
ক্রমশ ভিক্টোরিয়ার আদরের মার্জার-শিশু মার্জারের সাধারণ আকার আয়তন ছাড়িয়ে বাড়ির পোষা রটউইলার কুকুরটিকেও পেরিয়ে যেতে থাকে। তখন ভিক্টোরিয়ার সন্দেহ জাগে। তিনি পশু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সম্পূর্ণ বিষয়টি জানান। ভিক্টোরিয়ার খুব ন্যাওটা এই কালো বড়সড় প্রাণীটি আসলে যে যে-সে ‘বেড়াল’ নয়, তা অতি সহজেই বুঝতে পারেন পশু বিশেষজ্ঞরা।
দেখা যায় যে, এতদিন ধরে যাকে সস্নেহে, সমাদরে খাইয়েদাইয়ে বড় করে তোলা হয়েছে, সেই পশুটি আসলে একটি বিরাট আকারের প্যান্থার, অর্থাৎ, কালো চিতা। আকারে সে প্রায় একটি চিতাবাঘের সমান, একটি সজোর থাবায় প্রাণ কেড়ে নিতে পারে যেকোনও পূর্ণবয়স্ক মানুষের! এই কথা জানতে পারার পরেও প্রিয় পোষ্যকে ত্যাগ করেননি ভিক্টোরিয়া। তিনি নিজের কুকুরের সঙ্গেই ভালোবেসে বাড়িতে রেখে দিয়েছেন ব্ল্যাক প্যান্থারটিকে। কালো বিকটাকার জন্তুটিও তাঁকে অতীব ভালোবাসে, তার সর্বক্ষণের সঙ্গী ওই কালো রটউইলার কুকুরটি। ভিক্টোরিয়ার কারণে মানুষের সাথে এবং কুকুরের সাথে এক সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বিশাল বুনো জীবটির।