সংক্ষিপ্ত

  • ব্যাটিং পাওয়ারে ফের এক দুরন্ত ম্যাচ
  • উপভোগ্য ম্যাচের সাক্ষী থাকল ক্রিকেটপ্রেমীরা
  • পঞ্জাব প্রথমে ব্যাট করে ২২৪ রানের টার্গেট রাখে
  • রাজস্থান ১৯.৩ ওভারেই জয়ের প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয়

রেকর্ড গড়ে ম্য়াচ জিতে নিল রাজস্থান। আর সেই সঙ্গে আইপিএল সাক্ষী হল এক ইতিহাসের। কারণ, পরে ব্যাট করে এত বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড আর কোনও দলের নেই। বলতে গেলে, শারজায় এদিন এক দুরন্ত ব্যাটিং-এর ম্যাচ চাক্ষুষ করলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। 

রাজস্থানের এই দুরন্ত জয়ে অবশ্যই একটি নাম শেষ পর্যন্ত নায়কের তকমা পেল। আর সেই নামটি হল রাহুল তেওয়াটিয়া। যিনি একাই বীরদর্পে ম্যাচ বের করে নিয়ে চলে গেলেন কিং ইলেভেন পঞ্জাবের হাত থেকে। ৩১ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে রাহুল বোঝালেন তিনিও কম যান না। কারণ, ১৫ ওভারের শেষে রাহুলের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১৯ বলে ৮ রান। সেখান থেকে তিনি যখন রাজস্থানকে প্রায় জেতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন তখন তাঁর নামের পাশে ৭টি ওভার বাউন্ডারিও উজ্বল হয়েছিল। এই ৭টি ওভার বাউন্ডারির মধ্যে ৫টি তিনি মারেন ১৮ ওভারে বল করতে আসা পঞ্জাবের পেসার কটওয়েলকে। 

রাহুল তেওয়াটিয়া ব্যাট করতে নামার আগে রাজস্থানের সংগ্রহ ছিল ৮.৬ ওভারে ১০০ রান। ২৭ বলে ৫০ রান করে স্মিথ প্যাভিলিয়নে ফিরছিলেন আর মাঠে প্রবেশ ঘটছিলো রাহুলের। এদিন পিঞ্চ হিটের ভূমিকাতেই রাহুলকে দলে নেওয়া হয় যশস্বী জয়সওয়ালকে বসিয়ে। রাহুল নামার পরও সঞ্জু স্যামসন একার হাতে রাজস্থানের ইনিংসকে টানছিলেন। রাহুলের ব্যাটিং-এর বিধ্বংসী মেজাজটা তখনও প্রকাশ পায়নি। ১৭ ওভারের শুরুতেই সঞ্জু স্যামসন প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরলে এবার খোলস ছেড়ে বের হন রাহুল। 

রাজস্থানকে তখনও ২৩ বলে ৬২ রান করতে হত। ১৮ ওভারে স্ট্রাইক পান রাহুল। এবার কটওয়েলকে পুরো ছুড়ে ফালা-ফালা করে মাঠের বাইরে ফেলতে থাকেন। রাহুলের ব্যাটিং-এর সেই বিধ্বংসী মেজাজ ওই ওভারেই ছয় থেকে ৩০ রান ওঠে। ১৯ ওভারে শেষে রাহুল যখন আউট হন, তখন রাজস্থানতে জয়ের জন্য ২ রান করলেই চলত। সেই জায়গায় ১৯.৩ ওভারে চার মেরে ২২৬ রানে পৌঁছে যায় রাজস্থান। সেই সঙ্গে এক ঐতিহাসিক জয়ের রেকর্ডও গড়ে ফেলে তারা।  

এদিন টসে জিতে প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের দুই ওপেনার ময়াঙ্ক এবং কেএল রাহুল এদিনও যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্যাট করছিলেন। ছিন্নিভিন্ন করে দিচ্ছিলেন রাজস্থানের বোলিং-কে। মায়াঙ্ক আগরওয়াল শতরানও করে ফেলেন। ময়াঙ্ক ও কেএল রাহুলের জুটিতে পঞ্জাব বিনা উইকেটে ১৮৩ রানও তুলে ফেলে ১৬.৩ ওভারে। ময়াঙ্ক ৫১ বলে ১০৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। কেএল রাহুল ৫৪ বলে ৬১ রান করে আউট হন। এরপর পঞ্জাব ২০ ওভারের শেষে ২২৪ রানের বিশাল টার্গেট রাখে রাজস্থানের সামনে। সকলেই মনে করেছিল এক রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে রাজস্থানকেই পরাজিত হতে হবে। কিন্তু, ক্রিকেটে যে রোমাঞ্চের শেষ নেই তা কে না জানে। আর সেই  রোমাঞ্চের হাত ধরে রাহুল তেওয়াটিয়া নামে এক তরুণের বিস্ফোরক ব্যাটিং। যা বহুদিন বাদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অজয় শর্মার ২৬ বলে ৫১ রানের ইনিংসকে খেয়াল করালো। নব্বই-এর দশকের শুরুতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে সকলকে অবাক করে একদিনের ম্যাচে স্লগ ওভারে এক বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছিলেন অজয় শর্মা। আর এরপর ভারতীয় ক্রিকেট দলে বেশ কিছুদিন তাঁর জায়গাটা পাকা হয়েগিয়েছিল। রাহুলও তেওয়াটিয়া এদিন যে ইনিংসটা খেললেন তা তাঁকে আইপিএল-এ আরও কিছু ম্যাচে খেলার সুযোগ করে দিল, এতে কোনও সন্দেহ নেই।