সংক্ষিপ্ত
সেবাইতদের অভিযোগ, নিয়ম মেনে ট্রাস্টির নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে অনেক বেআইনি কাজকর্ম চলছে পরিষদকে ঘিরে। মন্দির তহবিলের টাকাও নয়ছয় করার অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ট্রাস্টির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মন্দিরের সেবাইতদের একাংশ এই মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ভুয়ো নির্বাচন করে একটানা ৫০ বছর ধরে সম্পাদক পদে রয়েছেন একজনই। ট্রাস্টির কোনও বৈঠক ছাড়াই ভুয়ো নির্বাচন করা হচ্ছে। ফলে মন্দিরের যে টাকা রয়েছে তার হিসেব সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছেন না সেবাইতরা। আর সেই কারণেই বর্তমান সম্পাদক কুশল চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরব হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
সেবাইতদের একাংশের অভিযোগ, নিয়ম মেনে ট্রাস্টির নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে অনেক বেআইনি কাজকর্ম চলছে পরিষদকে ঘিরে। মন্দির তহবিলের টাকাও নয়ছয় করার অভিযোগ করেছেন তাঁরা। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুশল।
আরও পড়ুন- নবীনবরণ ঘিরে তোলপাড় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, খোদ তৃণাঙ্কুরের বিরুদ্ধেই অভিযোগ টিএমসিপি-র
মন্দিরের বয়স প্রায় ২৫০ বছর। ১৮৭২ সালে রানি রাসমণি তাঁর আটজন নাতির জন্য একটি অর্পণ নামা তৈরি করেনছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, তাঁর আট নাতির উত্তরসূরিরাই মন্দিরের সেবাইত হবে। আর তাঁরাই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের দায়িত্ব পাবেন। এরপর এই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর বড় নাতি বলরাম দাস। তাঁর অনুমান ছিল, যে আগামীদিনে এই বিষয়টি নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই অর্পণ নামা কীভাবে চালানো হবে সেই বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন। আর তার জন্য একটি একটি স্কিম তৈরি করার অনুরোধ করেছিলেন।
আরও পড়ুন, অনুব্রত-র দেহ রক্ষীর গাড়ি দুর্ঘটনাকে ঘিরে 'ষড়যন্ত্র' ? সিবিআই তদন্তের দাবি অনুপম হাজরার
পরে ১৯২৯ সালে ওই মামলার রায় দিয়ে আদালতের তরফে জানানো হয়, মন্দিরের সেবাইত কারা হবেন তা নিয়ে ভোট করতে হবে। এরপর ১৯৭২ সালে আশুতোষ দাস নামে এক সেবাইত ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলেছিলেন। তখন আদালত তিন বছর অন্তর ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। আর এনিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বর্তমান সেবাইতরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই নিয়ম ঠিক মতো মানা হলে এখনকার সম্পাদক কুশল কীভাবে ৫০ বছর ওই পদে থাকেন?
২০২১ সালে অছি পরিষদের নির্বাচন করতে চেয়ে আদালতে আসেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। গত বছর ভোটার তালিকা তৈরির জন্য বিশেষ অফিসার হিসাবে প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যকে নিয়োগ করে হাই কোর্ট। অভিযোগ, বিশেষ অফিসারকেও ভোটার তালিকা দেওয়া হয়নি। এখন সেই তালিকা চেয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ সেবাইতদের একাংশ।