সংক্ষিপ্ত
চুল ভালো রাখতে ভরসা করতে হয় ঘরোয়া উপায়ের ওপর। এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের হাতের সামনেই রয়েছে, যেগুলি নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়া তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের ঘনত্বও হবে দেখার মতো।
চুল পড়া নিয়ে নাজেহাল আমরা কমবেশি সবাই। কপালের কাছ থেকে প্রায় যেন টাক পড়ে যাচ্ছে। শুধু ছেলেদের টাক হয়, এই প্রবাদ বাক্য এখন বোধহয় আর চলে না। মেয়েরাও চুলের নানা সমস্যায় জর্জরিত। এজন্য বাজার চলতি নানা হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে থাকেন মহিলা ও পুরুষরা। বলাই বাহুল্য তাতে বিশেষ কোনও কাজ হয় না। বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আরও চুল নষ্ট হতে থাকে।
এই অবস্থায় চুল ভালো রাখতে ভরসা করতে হয় ঘরোয়া উপায়ের ওপর। এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের হাতের সামনেই রয়েছে, যেগুলি নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়া তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের ঘনত্বও হবে দেখার মতো। আর সেসব উপাদানকে মিলিয়ে যদি একটি ঘরোয়া হেয়ার অয়েল বানিয়ে নিতে পারেন, তাহলে দিন কয়েকের মধ্যে পাবেন উপকার। পুজোর আগেই সুন্দর চুল তো পাবেনই, সেইসঙ্গে চুলের নানা সমস্যাও মিটতে পারে।
নারকেল তেল এবং কারি পাতা
আয়ুর্বেদিক চুলের যত্নে নারকেল তেলকে সবচেয়ে ভালো বলে মনে করা হয় এর পুষ্টিগুণের কারণে। এতে লৌরিক অ্যাসিড রয়েছে, যা চুলের খাদ ভেদ করে এবং প্রোটিনের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, কারি পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। একটি প্যানে নারকেল তেল গরম করুন এবং এই প্রতিকারটি ব্যবহার করতে এক মুঠো তাজা কারি পাতা যোগ করুন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হতে দিন এবং তারপরে এটি দিয়ে আপনার মাথার ত্বক এবং চুল ম্যাসাজ করুন। একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে এটি কমপক্ষে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
ভৃঙ্গরাজ তেল
ভৃঙ্গরাজ তেল ভৃঙ্গরাজ উদ্ভিদ থেকে উদ্ভূত হয়, যা চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন ই এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান যা চুলের ফলিকলকে পুষ্টি জোগায় এবং শিকড় মজবুত করে। এই তেলটিতে আমলা, ব্রাহ্মী এবং নিমের মতো অন্যান্য আয়ুর্বেদিক ভেষজও রয়েছে যা মাথার ত্বককে প্রশমিত করতে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। রাতে ঘুমানোর আগে এই তেল আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে ম্যাসাজ করুন এবং পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার যা বহু শতাব্দী ধরে চুলের বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে সালফার থাকে, যা কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং চুল মজবুত করে। নারকেল তেল এবং অন্যান্য আয়ুর্বেদিক ভেষজ যেমন হিবিস্কাস এবং কারি পাতার সাথে মিশিয়ে পেঁয়াজের রস লাগালে চুলের ফলিকলগুলি পুষ্ট হয়, চুল পড়া কমে যায় এবং পুনঃবৃদ্ধি হয়। এই তেলটি আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে ম্যাসাজ করুন এবং ধুয়ে ফেলার আগে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
আমলা গুঁড়ো
আমলা, ভারতীয় গুজবেরি নামেও পরিচিত, এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং চুল পড়া রোধ করে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা কোলাজেন গঠনে এবং স্বাস্থ্যকর চুল বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহার করতে, জলের সাথে কিছু আমলা গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে পেস্টটি প্রয়োগ করুন এবং এটি ধুয়ে ফেলার আগে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এছাড়াও আপনি নারকেল তেলের সাথে আমলা পাউডার মিশিয়ে আপনার মাথার ত্বক এবং চুল ম্যাসাজ করতে পারেন।