সংক্ষিপ্ত

পার্লারে গিয়ে গ্যআটের কড়ি খরচ করার দিন শেষ। একেবারে ঘরোয়া জিনিস দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানিয়ে ফেলুন কেরাটিন ট্রিটমেন্টের প্যাক। আর পেয়ে যান স্যালন স্টাইল হেলদি অ্যান্ড স্মুদ হেয়ার
 

অতিমারি করোনার জেরে আজকাল অনেকেই বিউটি পার্লারকে একটু এড়িয়ে চলছেন। কিন্তু তার মানে তো এই না যে, আপনি আপনার সাধের চুলের যত্ন করতে পারবেন না। নিশ্চই পারবেন। তাও একেবারে বিউটি পার্লার স্টাইলেই। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই কিন্তু সত্যি। পার্লারে গিয়ে কয়েক হাদার টাকা খরচ করে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট (Keratin treatment) তো অনেকেই করে থাকেন। হাল ফ্যাশনের যুগে কেরাটিন ট্রিটমেন্টের জুড়ি মেলা ভার। আপনি যদি ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে একেবারে সেলুন টাইপ কেরাটিন ট্রিটমেন্ট (Keratin Treatment) পেয়ে যান, কতাহলে নিশ্চই আর পার্লারে গিয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি গ্যাটের কড়ি খরচা করবেন না। আসুন আজ তাহলে জেনে নেওয়া নেওয়া যাক, ঘরোয়া পদ্ধতিতে (Home made Keratin pack) কীভাবে নিজের চুলকে কেরাটিন ট্রিটমেন্টের (keratin Treatment) মাধ্যমে  স্মুদ  আর হেলদি লুক দেবেন। 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে কেরাটিন ট্রিটমেন্টের জন্য কী কী লাগবে দেখে নিন। 
যে কোন সাদা চালের ভাত –৩ টেবিল চামচ
কোকোনাট মিল্ক –৬ টেবিল চামচ
ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল, কোকোনাট অয়েলের মত যে কোন একটি তেল  –২ টেবিল চামচ
তবে কেরাটিন ক্রিমের জন্য অলিভ অয়েল সবচেয়ে উপকারী। নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করা যায়। চুল বেশি ড্রাই হলে তেলের পরিমান আরও এক বা দুই চামচ বাড়ানো যায়। এই জিনিসগুলোর মিশ্রমে কীভাবে কেরাটিন মাক্স তৈরি হবে এবার সেটা দেখে নিন। একেবারে আপনার ঘরের সমস্ত উপকরণ দিয়েই বানিয়ে পেলতে পারবেন কেরাটিন মাক্স। 

কেরাটিন মাস্ক বানানোর পদ্ধতি

ভাত এবং কোকোনাট মিল্ক প্রথমে গ্রাইন্ডারে ঢালতে হবে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী উপাদানের পরিমাণ কম-বেশি করতে হবে। চুলের পরিমাণ যাই হোক না কেন,কোকোনাট মিল্ক চালের দ্বিগুণ পরিমাণের হতেই হবে। এমনভাবে গ্রাইন্ড করতে হবে যাতে ভাতের একটা দানাও না থাকে। অর্থাৎ মিশ্রণটি একদম মসৃণ ক্রিমের মতো হবে । এরপর এতে প্রয়োজনমতো অলিভ অয়েল বা অন্য যেকোন তেল মিশিয়ে দিতে হবে। তাহলেই তৈর হয়ে যাবে কেরাটিন মাক্স। 

আরও পড়ুন-Hair straightener- ঘরে বসেই পান স্যালোনের এক্সপিরিয়েন্স, লনিক হেয়ার স্ট্রেইটনার বাজারে আনল Syska

কেরাটিন মাস্ক লাগানোর পদ্ধতি

ক্রিম বানানোর পর্ব শেষ। এবার পালা চুলে লাগানোর। হাতে যতটা পরিমান চুল আটে সেই মত অল্প করে গোছা ধরে নিতে হবে। তারপর হাত বা হেয়ার ব্রাশ দিয়ে ক্রিম লাগিয়ে নিতে হবে। তবে ক্রিম লাগানোর সময় একটা কতা মনে রাখবেন, একসঙ্গে অনেকটা করে ক্রিম লাগাবেন না, সামান্য পরিমাণে ক্রিম নিয়ে প্রতি গোছায় ভালভাবে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখা ভাল, কেও যদি চুলে এই মাস্কটা লাগিয়ে দেয় তাহলে সেটা আরও ভালভাবে লাগান যায়। যদি আপনার চুল ছোট হয় তাহলে মাস্ক লাগানোর পর চুলে খুলে রাখলেও অসুবিধা নেই, কিন্তু যদি চুল লম্বা হয় তাহলে সামনের দিকটা হেয়ারব্যান্ড দিয়ে বেঁধে রাখলে ভাল। কেরাটিন মাস্ক লাগানোর পর কিন্তু খুব বেশী প্যাঁচ দিয়ে চুল কখনই বাঁধা উচিত নয়। মাস্কটি চুলে ২০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট অভধি রাখতে হবে। তারপর ব্র্যান্ডেড কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে পেলতে পারে। 

আরও পড়ুন-Heath Tips: করোনা মুক্ত হলে সবার আগে টুথ ব্রাশ বদল করুন, এই ব্রাশ থেকে ছড়াতে পারে জীবাণু

চুলে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কখন প্রয়োজন


কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কি এবং কিভাবে কাজ করে?
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বা হেয়ার স্মুদেনিংয়ের সাহায্যে চুলে কেরাটিন প্রবেশ করানো হয়। কেরাটিন মূলত এক ধরণের অদ্রবণীয় প্রোটিন, যা আমাদের চুলে, দাঁতে, এবং নখে থাকে। চুলের মূল উপাদানই কেরাটিন।
চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকলে চুল দেখায় ঝলমলে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। আর প্রোটিনের ঘনত্ব কম থাকলে চুল আর্দ্রতা হারায়, ভেঙে যায়, ঝরে যায়, এবং স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায়।
প্রফেশনাল কেরাটিন ট্রিটমেন্টে ফরমালডিহাইড নামক এক ধরণের কেমিক্যালের মাধ্যমে চুলে কেরাটিন ঢোকানো হয়। প্রথমে এই কেমিক্যালকে ব্লো-ড্রাই করে চুলে লাগানো হয়। এরপরে ফ্ল্যাট আয়রন হিটার দিয়ে চুলে হিট দেয়া হয়।
ব্লো-ড্রাইয়ের ফলে চুলের কিউটিকল খুলে যায় এবং ফরমালডিহাইড চুলের ভিতরে ঢুকতে পারে। আর উচ্চ তাপমাত্রার হিট দিয়ে সিল করে দেয়া হয় যাতে চুল কেরাটিন শুষে নিতে পারে।
হিটের কারণে চুলে কেরাটিন দ্রুত ও গভীরে প্রবেশ করে এবং চুলকে স্মুদ বানায়। কিউটিকল এরপরে স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। কেরাটিন ট্রিটমেন্টে চুল ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

কিভাবে বুঝবেন চুলে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন?

চুলের টেক্সচার দেখলেই সহজেই বুঝতে পারা যায় যে চুলের জন্য কখন কেরাটিন ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। যখন দেখবেন চুল অতিরিক্ত উসখোখুসকো হয়ে রয়েছে, চুলে কোনও প্রাণ নেই, বাইরে বেড়নোর আগে কিছুতেই চুলটা ঠিক মত সেট করতে পারছেন না, তখই বুঝবেন আপনার চুলের কেরাটিন ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। এই কেরাটিন ট্রিটমেন্টের ফলে চুলে ময়শ্চেরাইজারের পরিমান বাড়ে আর ন্যাচরাল সাইন ও হেলদি স্মুদ লুকে নিজেই নিজের চুলের প্রেমে পড়ে যাবেন। তাই এবার থেকে পার্লারে আর অযথা টাকা নষ্ট না করে ঘরে বসেই একেবারে স্যালন টাইপের স্লিকি অ্যান্ড সাইনি চুল পেতে মেনে চলুন ঘরোয়া পদ্ধতির কেরাটিক ট্রিটমেন্ট। ঘরোয়া পদ্ধতিতে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট এতটাই ভাল হয় যে কেউ ধরতেই পারবে না যে এটা প্রফেশনাল কেরাটিন ট্রিটমেন্ট না একেবারে হোমমেড কেরাটিন ট্রিটমেন্ট।