সংক্ষিপ্ত
- মন্ডপ তো নয় যেন আস্ত কলকাতা মেডিকেল কলেজ
- পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছেন কোভিড ওয়ারিয়র্স
- পুজোর বাজেট মাত্র ৪ লক্ষ টাকা
- দেবী দুর্গা নীল পাড়ের শাড়ি পরিহিত করোনারূপী অসুর বধ করছেন
উত্তম দত্ত, জিরাট : মন্ডপ তো নয় , এতো পুরও কলকাতা মেডিকেল কলেজ। এবারে ৫৫ বছরে পড়েছে বলাগড় থানার অন্তর্গত জিরাটের কালিয়াগড় পুর্বপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। আর এই মহামারী কালে উদ্যোক্তারা পুজোর থিম বেছে নিয়েছেন কোভিড ওয়ারিয়র্স। অর্থাৎ পুরও পুজোটাকেই বর্তমান পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে করা হয়েছে । তাই মন্ডপও তৈরি হয়েছে কলকাতা মেডিকেল কলেজের আদলে। প্রতি বছর যেই পুজোর বাজেট থাকে ১৩-১৪ লক্ষ সেই পুজোর বাজেট নেমে এসেছে মাত্র ৪ লক্ষ টাকায় । সরকারি অনুদান ও তাঁরা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- ৩০০ বছরের পুরনো এই বনেদী পুজো, ভট্টাচার্য পরিবারের দেবী দুর্গা নিকষ কালো গাত্রবর্ণ
প্রায় হাজার স্কোয়ার ফিট জায়গা জুড়ে তৈরি হয়েছে এই পুজোর আয়োজন। মূল প্রতিমাকে সামনে রেখে পেছনে মডেলের মাধ্যমে ঠাকুরকে আবাহন করা হয়েছে। এই পুজোয় দেবী দুর্গা হয়েছেন নার্স, নীল পাড়ের শাড়ি পরিহিত করোনারূপী অসুর-কে তিনি বধ করছেন। এখানে সিংহ করোনা ভয়ে ম্রিয়মাণ। কার্তিক হয়েছেন ডাক্তার । তাঁর গলায় স্টেথো, তিনি মানবসেবায় রত। সরস্বতী দেবীকে এখানে শিক্ষিকা রূপেই পূজিত হয়েছেন। অতিমারিতে স্কুল বন্ধ তাই তিনি অনলাইনে ক্লাস করছেন আবার মিড ডে মিল ও দিচ্ছেন। দেবী লক্ষী এখানে ব্যবসার প্রতিনিধি। লকডাউনে ব্যবসা লাটে উটেছে, তাই লক্ষীদেবীর মুখ ভার। তাঁর একহাতে তালা আর এক হাতে চাবি। তিনি কারখানা খুলতে চাইছেন। গণেশ সেজেছেন পুলিস, তাঁর চার হাতে চার অস্ত্র। কোনও হাতে লাঠি আবার কোনও হাতে মাস্ক। এই অভিনব ভাবনা এসেছে ওই ক্লাবের সভাপতি তপন কুমার দাসের মাথা থেকেই। পেশায় শিক্ষক এই সৃজনশীল মানুষটির চিন্তাভাবনা বরাবরই অন্যরকম ।
ক্লাবের সভাপতি তপন কুমার দাস জানিয়েছেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনামা যথাযথ মেনেই তাঁরা পুজো করছেন । আসল মূর্তি পাঁচ ফুটের। মন্ডপের ভেতরে থার্মকল দিয়ে বাক্স করে করা হয়েছে গোটা বারো মডেল। তাদের মধ্যে সুইপার থেকে সাংবাদিক সবাই ঠাঁই পেয়েছেন। আছেন আশাকর্মী থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্স চালক থেকে বিজ্ঞানী পর্যন্ত। তৈরি করা হয়েছে সংসদ ভবন থেকে নবান্ন। তপন বাবু জানান , তাঁদের শ্রদ্ধার্ঘ্য তাঁদের প্রতি যাঁরা এই করোনা পিরিয়ডে সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন । তবে পরিচালনা যেখান থেকে হচ্ছে যেমন নবান্ন বা সংসদ ভবন সেটাও দেখানো হয়েছে । রয়েছে ডিএম অফিস , পঞ্চায়েত ভবন । আর এই অভিনব ভাবনা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের । মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় চুচূড়া রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত বিশ্ব বাংলা শারদ সন্মান ২০২০-এর অন্যতম সেরা মণ্ডপের পুরস্কার জিতে নিয়েছে বলাগড় ব্লকের কালিয়াগড় সার্বজনীন দুর্গোৎসব।