সংক্ষিপ্ত

পেডং শব্দটির অর্থ -ফার গাছের দেশ
পেডং থেকে কাছে পিঠে অনেক জায়গা ঘুরে আসা যায়- ঋশপ, মূলখারকা হ্রদ, ঋষিখোলা, আরিতার।
মুদুং নদী, মুদুং ঝরনা ছাড়াও এখানে প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায় আকাশজোড়া রামধনু
শিলিগুড়ি থেকে তিন চার ঘন্টার পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবেন পেডং

 

উত্তরবঙ্গ কক্ষনো, কোনদিনও পুরনো হয় না। যতবার যে পথেই যাওয়া হোক না কেন নতুন করে ধরা দেয় উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গল, নদী- সব মিলেমিশে সমগ্র প্রকৃতি। এইভাবে উত্তরবঙ্গের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে একদিন ঠিক যাওয়া হয়ে যায় প্রাচীন রেশম পথের দিকে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে চীন অবধি যে  প্রাচীন রেশম পথ ছিল, সে পথের আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে চিরকালীন।  ওই পথের কাছেই আছে পেডং- ফার গাছের দেশ।  শান্ত ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটি এখনও অনেকটাই অপরিচিত। পেডং- এ দু এক দিন জিরিয়ে নিয়ে আবার শুরু করতে পারেন রেশম-পথ যাত্রা। পেডং বেশ ফাঁকা, নিরিবিলি। জনবসতি কম। পর্যটকও কম।  শিলিগুড়ি থেকে তিন চার ঘন্টার পথ।

পাহাড়ের ধাপ কেটে বাড়িগুলিকে ঘিরে আছে রঙিন ফুল। আর প্রচুর গাছ। গাছ বেশি মানেই দূষণ নেই আর তাই রাস্তা ধরে হাঁটলেই শুনতে পাওয়া যায় পাখির ডাক। দূরবীন ছাড়াই দেখতে পাওয়া যাবে পাখি ও প্রজাপতি।  শোনা যায় কালিম্পং জেলার সবথেকে প্রাচীন বৌদ্ধ গুম্ফাটি এখানেই আর এই গুম্ফাতেই নাকি বহু প্রাচীন পুঁথি সংরক্ষিত আছে।
পেডং থেকে কাছে পিঠে অনেক জায়গা ঘুরে আসা যায়। যেমন, বহুল জনপ্রিয় জায়গা, ঋশপ। যেতে সময় লাগে একঘন্টা।  পেডঙের কাছেই আছে মুদুং নদী। সঙ্গে মুদুং ঝরনা। বৃষ্টির পর রোদের আভাস দেখা দিলেই পেডং -এর আকাশে প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায় বিশাল বড়ো রামধনু। পাহাড়েই  এমন সব অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় যা আমাদের বারবার তাড়িয়ে বেড়ায় আর ডাক পাঠায় পাহাড়ে ফেরার।
পেডং থেকেই যাওয়া যায় মূলখারকা হ্রদ। যার অপর নাম মনস্কামনা হ্রদ। অনেকে ট্রেক করেও মূলখারকা যান। বেশ দুর্গম পথ। এ পথে অন্য রকমের রোমাঞ্চ আছে।  এই প্রাকৃতিক হ্রদের চারিদিক বিরাট বিরাট সবুজ গাছ দিয়ে ঘেরা। নুড়ির ওপর নুড়ি সাজিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা কিংবা বুদ্ধের ভক্তরা তাঁদের মনস্কামনা জানিয়ে গেছেন হ্রদের পাড়ে, তাও চোখে পড়বে। হ্রদের জলে ওপর দেখতে পাওয়া যাবে আকাশের ছায়া, সাদা সাদা মেঘের ছবি আয়নার মতো তুলে ধরে এই হ্রদ। ঘন সবুজ বিরাট বিরাট গাছের রঙে রঙ মিলিয়ে এই হ্রদটি কেমন ঘন সবুজ রঙ গায়ে মেখে নেয় তা দেখে আরাম লাগে চোখে। রঙবেরঙের  বৌদ্ধ পতাকা ঝোলানো আছে হ্রদের চারপাশে তারা হাওয়ায় দুলতে দুলতে অভ্যর্থনা জানায় পর্যটকদের।

পেডং থেকে মূলখারকা যাওয়ার পথেই পড়বে আরও দুটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট- ঋষিখোলা আর আরিতার। ইচ্ছে হলে ঘুরে নিতে পারেন।

কিভাবে যাবেন :- শিয়ালদা বা হাওড়া থেকে যেকোনও উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি পৌছে, সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে সরাসরি পৌছে যেতে পারেন পেডং।  বাস বা শেয়ার জিপে প্রথমে কালিম্পং পৌছে তারপর সেখান থেকে আবার শেয়ার জিপেও চলে যেতে পারেন পেডং-এ। শিলিগুড়ি বাসস্ট্যান্ড-এর কাছ থেকেই পাওয়া যায় কালিম্পংগামী বাস বা শেয়ার জিপ। কালিম্পং থেকে যে রাস্তা ঋষিখোলার দিকে যাচ্ছে সে রাস্তা ধরতে হবে। 

কোথায় থাকবেন :-পেডং-এ থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোম-স্টে, রিসর্ট এবং গেস্ট হাউস আছে- সাই লক্ষ্মী হোম স্টে, ডামসাং গেস্ট হাউস, পেডং ভ্যালি রিসর্ট, সিল্ক রুট রিট্রিট, প্রধান গেস্ট হাউস, ইত্যাদি।