সংক্ষিপ্ত
সম্ভবত তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো, পাকিস্তান সেনাবাহিনী সোমবার ওই জঙ্গির দেহ গ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয় নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকারও করে।
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের মুখোশ আবারও ফাঁস হয়ে গেল। পাকিস্তান সাধারণত ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের পর নিহত ব্যক্তিদের নাগরিক হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে, কিন্তু এই প্রথম কোনো জঙ্গির দেহ গ্রহণ করেছে ইসলামাবাদ। সোমবার পুঞ্চ জেলার বাণিজ্য কেন্দ্র চাক্কা দা বাগে সন্ত্রাসী গাইড তবারক হুসেনের দেহ পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এই জঙ্গির দেহ পাক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে সোমবার সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে। উভয় সেনাবাহিনীর সম্মতিতে লাইন অব কন্ট্রোলে অবস্থিত চাক্কা দা বাগের প্রধান ফটকগুলো খুলে দেওয়া হয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে জঙ্গির মরদেহ চক দা বাগ হয়ে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেনা হাসপাতালে মারা যায় পাকিস্তানি জঙ্গি। দুই সপ্তাহ আগে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ধরা পড়ে সে। শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরির একটি সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ওই জঙ্গি। তার নাম তবরাক হুসেন বলে জানায় ভারতীয় সেনা। ওই জঙ্গি গত মাসে রাজৌরি জেলার নওসেরা সেক্টরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণরেখা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হয় ওই জঙ্গি। হাসপাতালে জবানবন্দীতে জঙ্গি জানিয়ে ছিল যে তাকে জম্মু ও কাশ্মীরে ফিদায়েঁ জঙ্গি হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের সবজকোট গ্রামের বাসিন্দা হুসেন ভারতীয় সেনা পোস্টে হামলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে নেয়। তবারক হুসেন বলেছিল যে তাকে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার কর্নেল ইউনুস চৌধুরী নামে একজন কর্নেল পাঠিয়েছিলেন, যিনি তাকে তিরিশ হাজার পাকিস্তানি মুদ্রা দেন। জবানবন্দিতে তবারক আরও প্রকাশ করেছেন যে তিনি, অন্যান্য জঙ্গিদের সাথে মিলে উপযুক্ত সময় দেখে ভারতীয় সেনা পোস্টে হামলা করার পরিকল্পনা করা হয়।
ভারতীয় পোস্টকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২২ সালের ২১ শে আগস্ট কর্নেল ইউনুস চৌধুরী অর্থ দিয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে, এই জঙ্গি এর আগে ২০১৬ সালে একই সেক্টর থেকে তার ভাই হারুন আলীর সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল এবং ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে মানবিক কারণে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সেনার কাছে খবর আসে তবারক হুসেন লস্কর-ই-তৈবার একজন প্রশিক্ষিত সদস্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন এজেন্ট।
তথ্য অনুযায়ী, অনুপ্রবেশের সময় ভারতীয় সেনারা তাকে আটক করতে গিয়ে গুলি করলে ওই জঙ্গি গুরুতর আহত হন। এরপর তাকে একটি সেনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় যেখানে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। ভারতীয় সেনা তার জীবন বাঁচাতে তিন ইউনিট রক্ত দান করে। শনিবার গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সে মারা যায় বলে এক সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।সম্ভবত তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো, পাকিস্তান সেনাবাহিনী সোমবার ওই জঙ্গির দেহ গ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয় নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকারও করে।