সংক্ষিপ্ত


প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের (Imran Khan) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল বিরোধীরা। আগামী সাত দিনে ঘটতে পারে বড় বদল। 

চরম বিপাকে পড়লেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)।  মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধে, অর্থনীতির অব্যবস্থাপনা এবং দুর্বল শাসনের অভিযোগে, পাক সংসদে (Pakistan National Assembly) অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করল বিরোধীরা। এদিন পাক সংসদের স্পিকার তাঁর অফিসে না থাকায়, সচিবালয়েই প্রস্তাবটি জমা দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, জাতীয় সংসদের মোট ৮৬ জন সদস্য এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন। পাক সংসদের নিয়ম অনুযায়ী অন্তত ৬৮ জন এমএনএ-র স্বাক্ষর লাগে অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য। আগামী ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে এই অনাস্থা প্রস্তাবের ভিত্তিতে ভোটের জন্য অধিবেশন ডাকতে হবে স্পিকারকে। 

পাক বিরোধী দল, পিএমএল (এন)-এর (PML (N)) সাংসদদের আগামী ৩ সপ্তাহ রাজধানী ইসলামাবাদেই (Islamabad) থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এর মধ্যেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে অনেক কিছু ঘটতে পারে। এদিন অনাস্থা প্রস্তাব পেশের আগে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার বিরোধী দলের সমর্থকরা, ইসলামাবাদের ঠিক বাইরে সমাবেশ করেন। সেই সমাবেশে, বেনজির ভুট্টোর (Benjir Bhutto) পুত্র তথা পিপিপি (PPP) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো (Bilawal Bhutto) বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইমরান খানকে পদত্যাগ করতে হবে। নাহলে তাঁকে অনাস্থা প্রস্তাবের নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি এবং মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর এই প্রচারে পারমাণবিক শক্তিধর দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। 

তবে, আশ্চর্যজনকভাবে এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী (Pakistani Army)। সেই দেশে প্রায়শই শাসন ক্ষমতা নির্ধারণ করে সামরিক বাহিনী। এমনকী ইমরান খানও সেনার হাতের পুতুল বলেই দাবি করে বিরোধী দলগুলি। তবে, স্পষ্টতই, এবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, ইসলামাবাদের এই রাজনৈতিক পাওয়ার-প্লেতে কোনও পক্ষ গ্রহণ করছে না। অতীতে বারবার ইমরান খানের মসনদ সুরক্ষিত রাখলেও, এবার তারা ইমরানের থেকে নিজেদের দূরে রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাক সেনাবাহিনী এবং গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ISI) এই রাজনৈতিক ছবির কোথাও না থাকায়, আরও সমস্যায় ইমরান খান।

২০১৮ সালে সাধারণ নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ইমরান খান। তবে, সমালোচকরা দাবি করেন, তার পিছনে সেনাবাহিনীর সমর্থনই বড় কারণ ছিল। তা অবশ্যই অস্বীকার করেছিলেন ইমরান এবং পাক সামরিক বাহিনী। তবে, এখন প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা সেনাবাহিনীর সমর্থন হারিয়েছেন বলেই দাবি করছে বিরোধী দল এবং পাক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গত বছরও ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়েছিল, মাত্র ৬ ভোটে জিতেছিলেন তিনি। এবার বিরোধীদের দাবি, অনাস্থা ভোটে জিততে তাদের ১১ জন সাংসদ দরকার। পাকিস্তানের পরের নির্বাচন ২০২৩ সালে। তার আগেই কি উল্টে যাবে ইমরানের গদি? এর জবাব মিলবে আগামী কয়েকদিনে।