সংক্ষিপ্ত
শাস্ত্র মতে এই পানীয় পান করার সময় ব্যক্তির মধ্যে ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। পুজোয় চরণামৃত উৎসর্গ করা হয়। অভিষেকের সময় ব্যবহৃত হয়।
প্রায় প্রত্যেক হিন্দু বাড়িতেই নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোঅর্চনা করা হয়। ধর্মীয় আচারগুলি আপনার বাড়িতে বা কাছাকাছি মন্দিরে পালন করা হয়। পূজার পর পুরোহিত একটি পাত্রে জল আনেন। এগুলি অনুষ্ঠানের সময় উপস্থিত সবাইকে দেওয়া হয়। একে বলা হয় চরণামৃত, যার অর্থ পায়ের অমৃত। চরণামৃত বা পঞ্চামৃত-এর আক্ষরিক অর্থ হল পাঁচ অমৃত। যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন পার্বণ ও মাঙ্গলিক কাজে ব্যবহার করা পাঁচটি উপাচারের এক মিশ্রণ। যেগুলি হল প্ৰধাণত মধু, তরল গুড়, গরুর দুধ, দই ও ঘি। বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে এই মিশ্রণ প্রক্রিয়া ভিন্ন হতে দেখা যায় এবং এর সঙ্গে অন্য খাদ্যও মিশ্রিত করতে দেখা যায়। দক্ষিণ ভারতের বহু জায়গায় পাকা কলা দেওয়া হয় করা হয় চরণামৃতে।ধর্মের পাশাপাশি এই চরণামৃতের বৈজ্ঞানিক গুরুত্বও রয়েছে। আসুন আমরা আপনাকে বলি এটি কী।
আমাদের সনাতন ঐতিহ্য অনেক পুরনো। আজ যে ঘটনাগুলো সামনে আসছে তা আমাদের ঋষিরা আগেই বলে গেছেন। আমরা তাকে অনুসরণ করে চলেছি। বিজ্ঞানীরাও এসব মানতে শুরু করেছেন। শাস্ত্র মতে এই পানীয় পান করার সময় ব্যক্তির মধ্যে ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। পুজোয় চরণামৃত উৎসর্গ করা হয়। অভিষেকের সময় ব্যবহৃত হয়। আবার বিবাহকাৰ্যেও ব্যবহার করা হয়। ধর্মীয় তাৎপর্য থাকলেও এর আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।
বিজ্ঞানীরাও বিশ্বাস করেছেন যে প্রভুর পবিত্র চরণে লুকিয়ে আছে কিছু রহস্য। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগবত ভক্তির পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও আমাদের সুবিধা রয়েছে যে, শালিগ্রাম মূর্তি পাথরের তৈরি হওয়ায় তাতে সোনার একটি অংশ রয়েছে।
সেই শালিগ্রামের মূর্তিকে গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়, তাতে চন্দন ও জাফরান ইত্যাদির মিশ্রণ রাখা হয়, তুলসী নিবেদন করা হয় – এইভাবে সোনা, চন্দন, তুলসী, জাফরান এবং গঙ্গাজলের সমন্বয়ে এক অনন্য শক্তি রয়েছে। এটিতে প্রণয়ন করা হয় যা বয়স বৃদ্ধিকারী এবং নিরাময়কারী। রস, রক্ত, মাংস, চর্বি, হাড়, মজ্জা এবং শুক্র বৃদ্ধি করে দেহ শক্তিশালী হয়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রামক প্রতিরোধ করতে পারে।
শালিগ্রাম গন্ডকী নদীর একটি পদার্থ যাতে সোনার ছোট কণাও থাকে। যাই হোক, সোনার জীবন বর্ধক, সতেজ শক্তি আছে, তাই চিকিৎসকরা সোনার ছাই ইত্যাদি ব্যবহার করেন। এছাড়া তামার পাত্রে চরণামৃত রাখা হয়। তামার নিরাময়কারী, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাও বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত এবং বিখ্যাত। এছাড়া পঞ্চমৃত সব সময় কাঁচের বা রৌপ্যের পাত্রে রাখলে এটি বহু রোগকে পরাস্ত করতে পারে। এতে থাকা তুলসী পাতা তার গুণমানকে আরও বাড়ায়।