সংক্ষিপ্ত

মনসা পূজার অঙ্গ হল অরন্ধন। রাঢ়ে চৈতন্যদেবের সময়ে মনসাকে মা দূর্গার এক রূপ মনে করা হত। তাই কোনও কোনও জায়গায় পূজায় বলি দেয়া হত।

 

বাংলার গ্রামে পুরো শ্রাবণ মাস মনসা পূজা হয়। পুজো উপলক্ষে হয় পালা গান ‘সয়লা’। পুরুলিয়ায় মনসা পূজায় হাঁস বলি দেওয়া হয়। রাঢ বাঁকুড়ায় জ্যেষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে দশহরা ব্রত পালন করে মনসা পূজা করা হয়। মনসা পূজার অঙ্গ হল অরন্ধন। রাঢ়ে চৈতন্যদেবের সময়ে মনসাকে মা দূর্গার এক রূপ মনে করা হত। তাই কোনও কোনও জায়গায় পূজায় বলি দেয়া হত।

বাংলা অঞ্চলেই মনসার পূজা সর্বাধিক জনপ্রিয়। এই অঞ্চলে অনেক মন্দিরেও নিয়ম মেনে মনসার পূজা হয়। বর্ষাকালে যখন সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়, তখন মনসার পূজা মহাসমারোহে হয়ে থাকে। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে মনসার সঙ্গে নেতিধোপানি, নেতলসুন্দরী ইত্যাদি নামেও পরিচিত তাঁরও পূজাও করা হয়।

এই দেবীর পুজোয় দুধ কলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ, এর সঙ্গে পুজোর অন্যান্য উপকরণ তো থাকেই। আর যেই দুই উপকরণ ভুলেও ব্যবহার করবেন না তাহল ধূপ ও ধূনো। কথাতেই আছে "একে মা মনসা তায়ে আবার ধূনোর গন্ধ"। তাই যখন পুজো দেবেন এই বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন।

উত্তরবঙ্গ অঞ্চলে রাজবংশী জাতির কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দেবদেবীদের অন্যতম হলেন মনসা। প্রায় প্রত্যেক কৃষক গৃহেই মনসার ‘থান’ বা বেদী দেখা যায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের ফুলঘড়ায় শরৎকালে দূর্গাপূজার পরিবর্তে মনসা পূজা হয়। ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে এ পূজা হচ্ছে। হিন্দুদের মধ্যে আজও মনসাপূজা বিশেষ জনপ্রিয়।