সংক্ষিপ্ত

সচিনের জীবনে সবচেয়ে বড় সম্পদ তাঁর দাদা অজিত। যিনি ভাই-এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেরার সেরা হওয়ার ঝলক দেখেছিলেন। আর নিজের সারাটা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন ভাই সচিন-এর জন্য।

 

ইচ্ছে করলেই গড়তে পারতেন নিজের বিশাল এক কেরিয়ার। কোনও বড় চাকরি নিয়ে চলে যেতে পারতেন বিদেশের কোনও খ্যাতনামা মাল্টিন্যাশনালে। কিন্তু, যেদিন থেকে ভাই সচিন-এর মধ্যে ক্রিকেটের অসামান্য প্রতিভা নজর করেছিলেন সেদিন থেকে ভুলে গিয়েছিলেন নিজের সবকিছু। ভাই সচিন-ই হয়ে পড়েছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। মধ্যবিত্ত পড়াশোনা করার বাড়ির ছেলে হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে ক্রিকেট খেলবে এটা মেনে নেওয়াটা সহজ ছিল না। কিন্তু সবকিছু-কে সহজ করে দিয়েছিলেন অজিত তেন্ডুলকর। ভাই সচিন-এর ক্রিকেটের পথে কেউ যাতে বাধা না হয় তার জন্য বাবা-মা, সচিনের অন্য দিদি ও দাদা-দেরকে বুঝিয়েছিলেন অজিত। ৫০-এ পৌঁছেছেও তাই দাদা অজিতকেই নিজের জীবনের মেন্টর বলে ফের একবার স্মরণ করিয়ে দিলেন সচিন। অজিত ছাড়া তিনি যে কিছুই নন, তাও জানালেন দ্বর্থ্যহীন ভাষায়।

টাটা গ্রুপের স্বনামধন্য হীরে ও স্টাইলিস্ট ফ্যাশনেবল জুয়েলারি বিক্রেতা রিটেল তানিশক সম্প্রতি বাজারে নিয়ে এসেছে সচিনের নামে হীরে। তানিশক সিলেট নামে এই বিশেষ ধরনের হীরে-তে রয়েছে সচিন লিমিটেড এডিশন। মাস্টার ব্লাস্টারের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই হীরে বাজারে ছেড়েছে তানিশক। আর সেই সঙ্গে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় তানিশক প্রকাশ করেছে সচিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার পর্ব। ছোট ছোট অংশে এই সাক্ষাৎকার পর্ব তারা তথ্যচিত্রের আদলে প্রকাশ করেছেন। যেখানে সচিনের মুখোমুখি হয়েছেন বিখ্যাত স্পোর্টস প্রেজেন্টের ঋদ্ধিমা পাঠক।

সচিনের উদ্দেশে ঋদ্ধিমার প্রথম প্রশ্ন ছিল, এই পঞ্চাশে পৌঁছেছেও কার নাম আপনি নিতে চাইবেন, যিনি আপনার মধ্যে ক্রিকেটের ঝলক দেখতে পেয়েছিলেন? উত্তরে সচিন- একটাই নাম নেন দাদা অজিত তেন্ডুলকরের। সচিন জানান, অজিত-ই প্রথম ব্যক্তি যে মনে করেছিলেন ভাই-এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার গুণ রয়েছে। বাড়ির লোককে বোঝানো থেকে শুরু করে রমাকান্ত আরচেকরের কাছে নিয়ে যাওয়া সবই করেছিলেন অজিত। এমনকী, সমানে নজর রেখে গিয়েছিলেন ভাই-এর ক্রিকেটার হিসাবে উন্নতির রাস্তাতেও। ভাইকে আগলে রাখা থেকে শুরু করে শুধু ক্রিকেটের মধ্যে তার মন যাতে বসে থাকে সব কিছুই করতেন অজিত। সচিন জানাচ্ছেন, অজিতের সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধান অনেকটা। সবসময় তিনি চেষ্টা করতেন দাদা অজিত ও তাঁর বন্ধুদের সামনে নিজেকে প্রমাণ করতে। আর সেই কারণেই ছোট থেকে দাদা অজিতের দেখাদেখি ব্যাট নিয়ে বল পেটাতেন। ব্যাট দিয়ে বল-কে যেভাবে নিখুত ভঙ্গিমায় সচিন মারছিলেন তা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন অজিতের বন্ধুরা। এমনকী অজিতও খুব অবাক হয়েছিলেন। ভাই সচিনের এই গুণ তাঁকে ভুল করেনি হীরাকে চিনে নিতে।

সচিন মনে করেন, আজ ক্রিকেট খেলে যে প্রতিপত্তি ও খ্যাতি হয়েছে তা সবই দাদা অজিতের জন্য। তিনি না থকলে যে আদৌ তিনি পেশাদার ক্রিকেটের ময়দানে আসতে পারতেন কি না তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। দাদা অজিত না থাকলে আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে বসেও ৫০ বছর বয়সেও এমন সাক্ষাৎকার নাকি দিতে পারতেন না সচিন। বলতে গেলে দাদা অজিত-যেন সচিনের জীবনের এক ভগবান। যিনি সচিন তেন্ডুলকর নামক ক্রিকেটের ভগবানকে লালন-পালন করতে নিজেকে উজার করে দিয়েছিলেন।

তানিশকের সচিন লিমিটেড এডিশন নামে এই বিশেষ হীরার মূল বৈশিষ্ট্য হল এর কাটি। এতে এমন কিছু কাটিং রয়েছে যার উপরে মোট ৬টি পেটেন্ট নিয়ে রেখেছে তানিশক। তাঁর নামে এমন এক হীরার কালেকশন বের করায় তানিশকের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন সচিন।