সংক্ষিপ্ত

ভারতীয় দলের জয়ের নায়ক ছিলেন কে এল রাহুল, বিরাট কোহলি এবং স্পিনার কুলদীপ যাদব। কোহলি ও রাহুল অপরাজিত শতরান করেন, অন্যদিকে কুলদীপ যাদব পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের তার স্পিনের জালে আটকে দেন।

Asia Cup 2023: এশিয়া কাপ ২০২৩-এ সুপার-ফোর রাউন্ডের একটি ব্লকবাস্টার ম্যাচে, ভারতীয় দল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২২৮ রানে জিতেছে। কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভারত পাকিস্তানের কাছে ৩৫৭ রানের লক্ষ্য রেখেছিল, যা তাড়া করতে গিয়ে বাবর আজমের দল ৩২ ওভারে ১২৮ রানে গুটিয়ে যায়। পাকিস্তানের শেষ দুই খেলোয়াড় নাসিম শাহ ও হ্যারিস রউফ চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি।

 

কুলদীপ, রাহুল ও কোহলির জাদুতে মাত পাকিস্তান

এই ম্যাচে ভারতীয় দলের জয়ের নায়ক ছিলেন কে এল রাহুল, বিরাট কোহলি এবং স্পিনার কুলদীপ যাদব। কোহলি ও রাহুল অপরাজিত শতরান করেন, অন্যদিকে কুলদীপ যাদব পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের তার স্পিনের জালে আটকে দেন। কোহলি ৯৪ বলে ১২২ রান করেন, তার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের ৭৭তম সেঞ্চুরি করেন, যার মধ্যে ৯টি চার এবং তিনটি ছক্কা ছিল। কে এল রাহুল ১০৬ বলে ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। রাহুল তার ইনিংসে ১২টি চার এবং দুটি ছক্কা মারেন। তৃতীয় উইকেটে ১৯৪ বলে ২৩৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন কোহলি-রাহুল।

কুলদীপের ৮ ওভারে মোট ২৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বিরাট কোহলি। আজ মঙ্গলবার পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে। যদিও বৃষ্টির ভ্রুকুটি এই ম্যাচেও রয়েছে। তবে এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে, কুলদীপ যাদব, কেএল রাহুল এবং বিরাট কোহলিও কিছু বড় রেকর্ড গড়েছেন।

বিরাট কোহলি প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে টানা চতুর্থ ওয়ানডে ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন। এর আগে ২০১২ ও ২০১৭ সালেও শতরান করেছিলেন তিনি। এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে এটি ছিল কিং কোহলির চতুর্থ শতরান। এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির নিরিখে এখন তিনি যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি (৬টা) করেছেন সনথ জয়সূর্য।

 

বিরাট কোহলির শেষ চার ওয়ানডে ইনিংস

১২৮* বনাম শ্রীলঙ্কা, ৩১ জুলাই ২০১২

১৩১ বনাম শ্রীলঙ্কা, ৩১ আগস্ট ২০১৭

১১০* বনাম শ্রীলঙ্কা, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

১২২* বনাম পাকিস্তান, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

 

এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি (ODI ফর্ম্যাট)

৬- সনথ জয়সূর্য (শ্রীলঙ্কা)

৪- বিরাট কোহলি (ভারত)

৪- কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা)

৩- শোয়েব মালিক (পাকিস্তান)

বিরাট কোহলি একদিনের ক্রিকেটে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করলেন। সচিনকে সরিয়ে দ্রুততম ১৩ হাজার ওয়ানডে রান পূর্ণ করেন তিনি। সচিন ৩২১ ইনিংসে ১৩ হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন। যেখানে বিরাট এই কীর্তি গড়তে মাত্র ২৬৭ ইনিংস সময় নিয়েছেন। কোহলি পঞ্চম ব্যাটসম্যান যিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৩ হাজার রান স্পর্শ করলেন।

 

ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৩ হাজার রান

বিরাট কোহলি- ২৬৭ ইনিংস

সচিন তেন্ডুলকর- ৩২১ ইনিংস

রিকি পন্টিং- ৩৪১ ইনিংস

কুমার সাঙ্গাকারা- ৩৬৩ ইনিংস

সনাথ জয়সূর্য- ৪১৬ ইনিংস

বিরাট কোহলি এবং কেএল রাহুল তৃতীয় উইকেটে 233 রানের অপরাজিত জুটি গড়েন। এটি ছিল এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে যে কোনও উইকেটে সবচেয়ে বড় রানের জুটি। কোহলি-রাহুল পাকিস্তানের মহম্মদ হাফিজ এবং নাসির জামশেদকে পেছনে ফেলেছেন, যারা ২০১২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ২২৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। এটি তৃতীয়বারের মতো ঘটেছে যখন ভারতের নম্বর-3 এবং নম্বর-4 ব্যাটসম্যানরা ওডিআই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন।

 

এশিয়া কাপে সবচেয়ে বড় জুটি (ODI ফর্ম্যাট)

২৩৩- বিরাট কোহলি এবং কেএল রাহুল বনাম পাকিস্তান, ২০২৩

২২৪- মহম্মদ হাফিজ এবং নাসির জামশেদ বনাম ভারত, ২০১২

২২৩- শোয়েব মালিক এবং ইউনিস খান বনাম হংকং, ২০০৪

২১৪- বাবর আজম এবং ইফতিখার আহমেদ বনাম নেপাল, ২০২৩

কুলদীপ যাদব ২৫ রানে পাঁচ উইকেট নেন। এটি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওডিআই আন্তর্জাতিকে ভারতীয় স্পিনারের তৃতীয় সেরা পারফরম্যান্স। কুলদীপ যাদব দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার যিনি এশিয়া কাপের ওডিআই ফরম্যাটে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। আরশাদ আইয়ুবের রেকর্ড স্পর্শ করেছেন কুলদীপ। আরশাদ ১৯৮৮ সালে ঢাকায় ২১ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন।

 

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় স্পিনারের সেরা পারফরম্যান্স

৫/২১- আরশাদ আইয়ুব, ঢাকা ১৯৮৮

৫/৫০- সচিন তেন্ডুলকর, কোচি ২০০৫

৫/২৫- কুলদীপ যাদব, কলম্বো ২০২৩

৪/১২- অনিল কুম্বলে, টরন্টো ১৯৯৬

একদিনের আন্তর্জাতিকে রানের পরিপ্রেক্ষিতে এটি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ২০০৮ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সবচেয়ে বড় জয় এসেছিল। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ১৪০ রানে পরাজিত করে ভারত। পাকিস্তানের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের দিক থেকে এটি ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাজয়। শুধু তাই নয় প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে ওডিআই ক্রিকেটে রানের নিরিখে এটি ছিল যে কোনও দলের সবচেয়ে বড় পরাজয়। পাকিস্তান দল ১২৮ রানে গুটিয়ে যায়, যা ওডিআই ইতিহাসে ভারতের বিরুদ্ধে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ছিল।

 

ওয়ানডেতে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় পরাজয় (রানে)

২৩৪ বনাম শ্রীলঙ্কা, লাহোর ২০০৯

২২৮ বনাম ভারত, কলম্বো ২০২৩

২২৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া, নাইরোবি ২০০২

১৯৮ বনাম ইংল্যান্ড, নটিংহাম ১৯৯২

 

এশিয়া কাপে সবচেয়ে বড় জয় (ODI ফর্ম্যাট)

২৫৬ রান- ভারত বনাম হংকং, করাচি ২০০৮

২৩৮ রান- পাকিস্তান বনাম নেপাল, মুলতান ২০২৩

২৩৩ রান- পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ, ঢাকা ২০০০

২২৮ রান- ভারত বনাম পাকিস্তান, কলম্বো ২০২৩

 

ওডিআইতে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর

৮৭ রান, শারজাহ, ১৯৮৫

১১৬ রান, টরন্টো ১৯৯৭

১২৮ রান, কলম্বো ২০২৩

১৩৪ রান, শারজাহ ১৯৮৪