সংক্ষিপ্ত
ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে পরতে পরতে জড়িয়ে আছে মোহনবাগানের নাম। ১৯১১ সালে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আইএফএ শিল্ড জয় মোহনবাগানকে অমরত্ব দান করেছে।
মোহনবাগানের দীর্ঘ ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণীয় সাফল্য ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ড জয়। ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে সেই জয় কোনও একটি ক্লাবের ছিল না, সারা ভারতের সাফল্য ছিল। ফুটবল মাঠে ব্রিটিশদের দর্পচূর্ণ হওয়ায় আনন্দে মেতেছিল সারা দেশ। সেদিন ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মোহনবাগানের অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ির হাত ধরে এক বৃদ্ধ ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক দেখিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, 'মোহনবাগান তো ব্রিটিশদের হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতল। এবার ওটা কবে নামবে?' জবাবে শিবদাস বলেছিলেন, 'মোহনবাগান আবার যখন আইএফএ শিল্ড জিতবে।' ঘটনাচক্রে ১৯৪৭ সালেই দ্বিতীয়বার আইএফএ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয় মোহনবাগান।
ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সালের আইএফএ শিল্ড ফাইনাল হয়েছিল ১৫ নভেম্বর। ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার ৩ মাস পর দ্বিতীয়বার আইএফএ শিল্ড জেতে মোহনবাগান। সেদিন ফাইনালে সবুজ-মেরুনের প্রতিপক্ষ ছিল ইস্টবেঙ্গল। তীব্র লড়াইয়ের পর ১-০ জয় পায় মোহনবাগান। ঝন্টু দাসগুপ্তর ক্রস থেকে একমাত্র গোল করেন সেলিম। তাঁর গোলেই স্বাধীন ভারতে প্রথম আইএফএ শিল্ড জেতে মোহনবাগান। পরাধীন ভারতে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে আইএফএ শিল্ড জেতার পর স্বাধীনতার বছরের আইএফএ শিল্ডও চ্যাম্পিয়ন হয়ে নতুন ইতিহাস গড়ে মোহনবাগান। এর আগে ১৯২৩, ১৯৪০, ১৯৪৫ সালের আইএফএ শিল্ড ফাইনালে পৌঁছেও হেরে যায় মোহনবাগান। জয় আসে স্বাধীনতার বছরেই।
১৯৪৭ সালের আইএফএ শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগানের হয়ে খেলেন বকাই সেন, শরৎ দাস, শৈলেন মান্না, অনিল দে, টি আও, মহাবীর প্রসাদ, দীনানাথ রায়, সেলিম, বি বসু, নায়ার ও অরুণ (ঝন্টু) দাসগুপ্ত।
শনিবার আরও একটি কলকাতা ডার্বির স্বাদ পেতে চলেছে বাঙালি। ডুরান্ড কাপের গ্রুপের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হচ্ছে মোহনবাগান। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সেনা দল ও পাঞ্জাব এফসি-কে হারিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়া কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছে মোহনবাগান। তবে শনিবারের ম্যাচে অন্য লড়াই। এই ম্যাচের সঙ্গে অন্য কোনও ম্যাচের তুলনা চলে না। বাঙালির বড় ম্যাচ সবসময় সম্মানের লড়াই। পরপর কয়েকটি কলকাতা ডার্বিতে সহজ জয় পেয়েছে মোহনবাগান। ফলে শনিবারও জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী সবুজ-মেরুন শিবির। এবারের ডুরান্ড কাপে এখনও পর্যন্ত একটিই ম্যাচ খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচে ২-০ এগিয়ে থেকেও বাংলাদেশ সেনা দলের সঙ্গে ২-২ ড্র করেছে লাল-হলুদ। ফলে এগিয়ে থেকেই কলকাতা ডার্বি খেলতে নামছে মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলকে উড়িয়ে দেওয়াই লক্ষ্য।
আরও পড়ুন-
কলকাতা লিগের ম্যাচে এফসিআই-এর বিরুদ্ধে ৫-০ জয়, ডার্বির জন্য তৈরি মোহনবাগান
টিকিটের জন্য ভোর ৫টা থেকে লাইন, কলকাতা ডার্বি ঘিরে গড়ের মাঠে পুরনো উন্মাদনা
অভিনব উদ্বোধন! ডুরান্ড কাপের ট্রফি নিয়ে ৬৫ তলা থেকে ঝাঁপ দুই সেনাকর্তার