সংক্ষিপ্ত
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যাঁদের দমিয়ে রাখতে পারেনি, তাঁদেরই একজন পলক কোহলি। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে লড়াইয়ের কথা জানালেন ভারতের অন্যতম সেরা প্যারা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় পলক।
'তোমার দ্বারা হবে না, তুমি ছেড়ে দাও।' ভারতে সুস্থ-সবল মানুষকেই জীবনের নানা ক্ষেত্রে এই কথা শুনতে হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে তো কথাই নেই। প্যারা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় পলক কোহলিকেও ছোটবেলা থেকে এই কথাই শুনে আসতে হয়েছে। প্রতি পদে তাঁকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছেন অনেকে। স্কুল থেকেও উৎসাহ পাননি তিনি। স্কুলের শিক্ষিকাই বলেছিলেন, ‘তুমি কিছু করতে পারবে না।’ ফলে শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধকতাই নয়, সমাজের কিছু বদ্ধমূল ধারণাকে ভুল প্রমাণ করার জন্যও লড়াই করতে হয়েছে পলককে। সাফল্যের মাধ্যমে তিনি সবাইকে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছেন।
জেদ ও মানসিক জোরই সাফল্য এনে দিয়েছে
এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে পলক জানিয়েছেন, 'ছোটবেলা থেকে আমি শুনে এসেছি, আমার দ্বারা কিছু হবে না। কিন্তু ২০১৭ সালে পরিবারের সবার সঙ্গে মালদ্বীপ যাওয়ার সময় একজনের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি আমার বাঁ হাতের কবজি থেকে বাকি অংশ না থাকার কারণ জানতে চান। তিনিই বলেন, আমি প্যারা ব্যাডমিন্টন খেলতে পারি। প্রথমবার কেউ আমাকে নতুন কিছু করার ব্যাপারে উৎসাহ দেন। এটা দেখে যেমন অবাক হয়েছিলাম, তেমনই ভালো লেগেছিল। পরে জানতে পেরেছিলাম, এই ব্যক্তি আমার বর্তমান কোচ গৌরব খান্না। এই ঘটনার ৮-৯ মাস পর আমাদের স্কুলে স্পোর্টস ছিল। আমি সবার সঙ্গে মাঠে গিয়ে নিয়ম-কানুন জেনে নিচ্ছিলাম। সেই সময় একজন শিক্ষিকা আমাকে ডেকে বলেন, পলক, তুমি পড়ায় মন দাও। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য খেলায় কোটা থাকে। চাকরি পাওয়া যায়। সে কথা শুনে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। বয়ঃসন্ধির সময় শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য নিরুৎসাহিত করার চেষ্টার প্রভাব পড়েছিল আমার উপর। আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। এরপরেই আমি প্যারা ব্যাডমিন্টন খেলার সিদ্ধান্ত নিই।'
খেলাই জীবনে ইতিবাচক বদল এনেছে
কোচের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর জলন্ধর থেকে লখনউয়ে চলে যান পলক। এরপরেই শুরু হয় প্যারা ব্যাডমিন্টন প্রশিক্ষণ। ধাপে ধাপে সাফল্য এসেছে। বাবা-মা, কোচ সবসময় পাশে আছেন। কিন্তু যাঁরা নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁরা কি জেদ বাড়িয়ে দিয়ে সাফল্যের পথে চালিত করেছেন? পলক জানালেন, 'ছোটবেলায় যাঁরা আমাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমাকে প্রতিশোধ নিতেই হত। নিজেকে প্রমাণ করতে হত। সেই সময় এ কথাই ভাবতাম। এখন অবশ্য সেই সময়ের কথা ভাবলে হাসি পায়।' এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে ৩ বার পদক জিতেছেন। এবার প্যারালিম্পিক্সে পদক জয়ই পলকের লক্ষ্য।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
প্যারালিম্পিক্স আরও দুটি সোনা জয়ের হাতছানি, ব্যাডমিন্টনে পৃথক বিভাগের ফাইনালে ভারত