অদূর ভবিষ্যতে আর কেউ ট্রেন বা বিমানে চড়বেন নাআসছে হাইপারল্যুপ সুপার হাই স্পিড লেভিটেটিং পড সিস্টেমজেট বিমানের থেকে দ্বিগুণ জোরে যায়সোমবারই হয়ে গেল প্রথম যাত্রী পরিবহণ

বিপ্লব ঘটতে চলেছে পরিবহন ব্যবস্থায়। চাকা আবিষ্কারের পরই মানব সভ্যতার দারুণভাবে বিকশিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। তবে এবার সেই আবিষ্কারের কয়েক যুগ পর পরিবহন থেকে হারিয়ে যেতে চলেছে চাকা। তার পরিবর্তে আসছে আরও বিমানের থেকেও দ্রুতগামী অথচ অনেক বেশি শক্তি সাশ্রয়ী হাইপারল্যুপ। এই হাইপারল্যুপ-এর কথা গত কয়েক বছর ধরেই শোনা গেলেও, এবার এই কল্পবিজ্ঞানের গল্পের মতো যান আসতে চলেছে বাস্তব পৃথিবীতে। সোমবার ভার্জিন হাইপারল্যুপ সংস্থা তাদের 'সুপার হাই স্পিড লেভিটেটিং পড সিস্টেমে' প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রী পরিবহন করল।

বিশ্বে প্রথম হাইপারল্যুপ সুপার হাই স্পিড লেভিটেটিং পড সিস্টেমে-এর যাত্রী হলেন ভার্জিন হাইপারল্যুপ সংস্থার দুই শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা। এঁরা হলেন সংস্থার চিফ টেকনোলজি অফিসার, জশ জিগেল এবং যাত্রী পরিবহণ অভিজ্ঞতা পরিচালক, সারা লুশিয়ান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা প্রদেশের লাস ভেগাস শহরে ভার্জিন হাইপারল্যুপ সংস্থার 'ডেভলুপ' নামে এক পরীক্ষাকেন্দ্রে এই পরীক্ষামূলক যাত্রী পরিবহণের আয়োজন করা হয়েছিল। সংস্থা জানিয়েছে এই পরীক্ষার সময় সুপারস্পিড লেভিটেটিং পড-টি ঘন্টা প্রতি ১৭৭ কিলোমিটার গতি তুলেছিল। তবে যখন এটি সত্য়ি সত্যি কাজ করা শুরু করবে তখন পডগুলির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টা প্রতি ৯৬৬ কিলোমিটার হতে পারে বলে দাবি করেছে ভার্জিন হাইপারলুপ।

Scroll to load tweet…

সোমবার প্রথম যাত্রী পরিবহণের সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন ভার্জিন হাইপারল্যুপ এবং ডিপি ওয়ার্ল্ডস গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান তথা সিইও সুলতান আহমেদ বিন সুলায়ম। তিনি জানান, ভবিষ্যতের পরিবহণের জন্য এই দিনটি জন্য স্মরণীয়। চোখের সামনে ইতিহাস তৈরি হতে দেখে তিনি সত্যিই আনন্দিত।

কীভাবে কাজ করে এই হাইপারল্যুপ সিস্টেম? এই ভবিষ্যতের পরিবহণ ব্যবস্থায় কোনওরকম ঘর্ষণ-জনিত বাধা থাকে না। ঘর্ষণজনিত বাধা দূর করার জন্য এটিকে একটি টিউব বা নলের মধ্য দিয়ে চালানো হয়। টিউবের মধ্যে পডটি প্রবেশ করার পর টিউবের দেওয়াল ও পডের গাত্রে বিপরীতমুখী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করা হয়। ফলে পডটি টিউবের কোনও অংশ স্পর্শ না করে বাতাসে ভেসে ওঠে। সেই অবস্থায় এটি অত্যন্ত দ্রুত ও কোনও শব্দ ছাড়াই এগিয়ে যায় সামনের দিকে। বর্তমানে যে বাণিজ্যিক জেট বিমান চলে তার থেকে হাইপারল্যুপ পরিবহণ ব্যবস্থা দ্বিগুণ দ্রুত। আর যে হাই-স্পিড ট্রেনগুলি রয়েছে সেগুলি থেকে এর গতি চারগুণ বেশি।

Scroll to load tweet…

ভার্জিন হাইপারল্যুপ তাদের পড পরিবহণ ব্যবস্থার এর আগে ৪০০-রও বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই মানুষ যাত্রী ব্যবহার করা হয়নি। আগামী দিনে বিশ্বের পরিবহণ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনবে হাইপারল্যুপ, এমনটাই বিজ্ঞানীদের অনুমান। কারণ বাস, গাড়ি, হাইস্পিড ট্রেন, জেট বিমান, ইলেকট্রিক গাড়ি - বর্তমানে চালু সব দ্রুত পরিবহণ মাধ্যমের থেকে এটি দ্রুতগামী, এবং সেইসঙ্গে শক্তি ব জ্বালানীও লাগে সব থেকে কম। আর প্রথম মানব পরীক্ষার পর সংস্থার কর্মীরা মনে করছেন, অন্তত আমেরিকায় এই ব্যবস্থা চালু হতে আর বেশি দেরী নেই।

Scroll to load tweet…

ভারতের বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর এখনই ভার্জিন হাইপারল্যুপ সংস্থার সঙ্গে এই শহরে একটি হাইপারল্যুপ হাইস্পিড লেভিটেটিং পড সিস্টেম তৈরির বিষয়ে চুক্তি করেছে। তৈরি হয়ে গেলে, যানজটের জন্য কুখ্যাত এই শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্র থেকে মিনিট দশেকেই যাত্রীরা বিমানবন্দরে পৌঁছে যেতে পারবেন।

Scroll to load tweet…