সোশ্যাল মিডিয়ার নয়া সেনসেশন চাঁদমণি হেমব্রম, বিষ্ময়কর গলার জাদুতে মোহিত করছে সে

  • গান শুনে  গানকে হৃদয়ে ধারণ করেছে চাঁদমণি
  • নেই কোনও প্রথাগত শিক্ষা, কিন্তু গলায় যেন সরস্বতী
  • এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলেছে চাঁদমণি
  • বান্ধবীর মোবাইল ফোনে গান শুনেই গুণগুণ করে ওঠা
/ Updated: Jul 12 2020, 06:05 PM IST
Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

চাঁদমণি হেমব্রম। বাড়ি- হুগলির ইটাচূনার মেঠোয়ালি পথ বেয়ে চলে যেতে হয়। সেখানেই রয়েছে একটি গ্রাম। নাম মুলতি। থানা পাণ্ডুয়া। ম্যাপ দেখে খুঁজতে বসলে হদিশ পাওয়া কঠিন চাঁদমণির বাড়ির। বলতে গেলে ঠিকানা থেকেও ঠিকানাহীন। মাত্র ৫ বছর বয়সেই বাবা-কে হারায় চাঁদমণি। তারপর...। ওই যা ঘটে দিন-আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলির। আত্মীয়-স্বজন থেকেও নেই। অগত্যা চাঁদমণি এবং তার দুই বোনের হাত ধরে মালতি হেমব্রম-এর পাড়ি দেওয়া বাপের বাড়ির উদ্দেশে। মালতি মানে চাঁদমণির মা। মালতির কোনও ছবি আমাদের কাছে নেই। তবে চাঁদমণির এই অবাক করা গলার ভিডিও এবং কিছু ছবি আমাদের কাছে পৌঁছেছে। এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে চাঁদমণির কন্ঠ। তার গাওয়া একের পর এক গান এখন ইউটিউব থেকে ফেসবুকে ট্রেন্ড করে বেড়াচ্ছে। প্রথাগত গানের শিক্ষা কোনও দিনই পায়নি। পড়শি বান্ধবীর মোবাইল ফোনে গান শুনে গান করার অভ্যাসটা রপ্ত হয়েছে। আর এই অভ্যাসটাকে এতটাই সহজভাবে চাঁদমণি রপ্ত করেছে, যে তার গলার জাদু মোহিত করে দিয়েছে সকলকে। বলিউডের বিখ্যাত গায়িকা নেহা কক্কর পর্যন্ত চাঁদমণির গানকে টুইটারে পোস্ট করেছে। এমনকী নেহার ভাই টনি কক্করের সঙ্গে একটি ভিডিও অ্যালবামে গান গাওয়ার ডাক পেয়েছে চাঁদমণি। তবে, গানের কেরিয়ারে প্রাথমিকভাবে তাকে এগিয়ে যাওয়ার সাহসটা যিনি জুগিয়ে চলেছেন তাঁর নাম সন্দীপন মুখোপাধ্যায়। সন্দীপন নিজেও বাংলা গানের দুনিয়ায় এক পরিচিত গায়ক এবং সুরকার। চাঁদমণি-র সঙ্গে ডুয়েটে একটি গান প্রকাশ করতে চলেছেন সন্দীপন। গানের নাম- ভালোবেসেছি তাই হেরেছি। সুর দিয়েছেন খোদ সন্দীপন। গানের কথা লিখেছেন পদ্মাপারের বিখ্যাত গীতিকার এম এ আলম শুভ। সম্প্রতি সেই গানের একটি টিজারও প্রকাশ পেয়েছে। লকডাউনের সময় চাঁদমণিদের গ্রামে ত্রাণ দিতে গিয়েছিলেন সমাজকর্মী শ্যাম হাঁসদা। সেখানে চাঁদমণির গানের প্রতিভার সন্ধান পান তিনি। এরপর শ্যামের উদ্যোগেই চাঁদমণির এক জীবনের পথ চলা। শ্যামের উদ্যোগেই চাঁদমণির গানের একের পর এক ভিডিও প্রকাশ পায় ইউটিউব এবং ফেসবুকে। নিদারুণ দারিদ্র-ই সঙ্গী চাঁদমণি এবং তার পরিবারের। মা-এর ওর বাড়িতে জন খেটে আয় করেন। কাজ থাকলে দিনে আয় ১৩০ টাকা। যে দিন কাজ নেই সেদিন আয়ও নেই। সংসারে চাঁদমণি ছাড়াও আরও দুই বোন এবং এক দাদু। ইটাচূণার সারদা কন্যা বিদ্যাপীঠের ক্লাস টেনের ছাত্রী চাঁদমণি। পড়াশোনা শিখে বড় চাকরি করতে চায়। সেই সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় তার গানকেও। কিন্তু, গরিবির যে হাহাকার তার জীবনকে আস্টেপৃষ্টে রেখেছে সেখান থেকে সে এগোতে পারবে তো! চাঁদমণির আজ সাহায্য চাই। যদিও কেউ চাঁদমণির পথ চলায় তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে চান তাহলে হয়তো এক অসামান্য প্রতিভায় ভরপুর অঙ্কুর আগামীর খোঁজে বুকে বল পেতে পারে। চাঁদমণি-কে আমাদের শুভেচ্ছা।