বালুরঘাট প্রাচ্য ভারতী স্কুলে পুরনো অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার, বিপ্লবীদের ব্যবহৃত অস্ত্র না পপস, শুরু তরজা

পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট শহরের প্রাচ্য ভারতী, সুপ্রাচীন স্কুল বলে এলাকায় এর সুনাম যথেষ্ট। তবে, এই স্কুলেরই ভাঁড়ার ঘর থেকে এমন কিছু পুরনো অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে যা নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে, স্কুলের কিছু শিক্ষকের দাবি এগুলি অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের ব্যবহৃত জিনিস, আবার কারও দাবি এগুলি আসলে নাটকে ব্যবহৃত পপস।

/ Updated: Aug 13 2022, 11:47 PM IST

Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর ২০২২-এ আজ দেশ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে। এই সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে উদ্যোগী হয়েছে সমস্ত স্কুল। এমনই এক স্কুল পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট শহরের প্রাচ্য ভারতি, সুপ্রাচীন স্কুল বলে এলাকায় এর সুনাম যথেষ্ট। তবে, এই স্কুলেরই ভাঁড়ার ঘর থেকে এমন কিছু পুরনো অস্ত্র-শস্ত্র মিলেছে যাতে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। স্কুলের কিছু শিক্ষক এবং স্থানীয় ইতিহাসবিদদের দাবি এগুলি আসলে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের ব্যবহৃত অস্ত্র-শস্ত্র। কিন্তু, আর একদল মানুষের দাবি, এগুলি নাটকে ব্যবহৃত পপস। 

স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাজীব দাস জানিয়েছেন,  স্কুলের ভাড়ার ঘর পরিষ্কার করার সময় এই অস্ত্র-শস্ত্রগুলি সামনে আসে। ৭৫ তম স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্কুলের ভাড়ার ঘর পরিষ্কার করা হচ্ছিল। এমনিতেই স্কুলের সঙ্গে বিপ্লবীদের একটা ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল। তাই  তারা এই অস্ত্রশস্ত্রগুলিকে বিপ্লবীদের বলে ধরে নিয়েই সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেছে যে বালুরঘাট মিউজিয়ামে এই অস্ত্রশস্ত্রগুলি দান করে দেওয়া হবে। স্থানীয় ইতিহাসবিদ সুমিত দাস জানিয়েছন, ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে বালুরঘাটও একটি অসামান্য অবদান রাখে। দেশের পঞ্চম স্থান হিসেবে স্বাধীনতার লাভের আগেই বালুরঘাটে একদিন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ইংরেজদের ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতের তিরাঙ্গা পতাকা। আর সেই সমস্ত ইতিহাস তৈরীর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল যুগান্তর, অনুশীলন সমিতির মতো বিপ্লবী সংগঠনগুলির। এই স্কুলের অন্দরেই শরীর চর্চা করতেন বিপ্লবীরা। তাঁদের বিভিন্ন গোপন মিটিং-ও হত এখানে। তবে এই অস্ত্রশস্ত্রগুলির প্রত্নতাত্তিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কারণ, আদৌ এই অস্ত্রগুলো বিপ্লবীদের ব্যবহার করা কি না তা নিয়ে কেউ অকাঠ্য প্রমাণ বা তথ্য দিতে পারেননি। কোনও বিশেষজ্ঞ বা ইতিহাসবিদ এই নিয়েও সরাসরি দাবি করেননি যে এগুলি সত্যি সত্যি বিপ্লবীদের ব্যবহার করা অস্ত্র কিনা!   

প্রাচ্য ভারতী প্রতিষ্ঠান, যা বর্তমানে একটি ক্লাব সংগঠনের পাশাপাশি  একটি বিদ্যালয়ের রূপ পেয়েছে, সেই স্কুলের ভিতরেই ছিল অনুশীলন সমিতির মতো গোপন বৈপ্লবিক সংগঠনের চর্চাক্ষেত্র। বিপ্লবীদের অনেক অস্ত্র লুকোনো থাকতো এই ডেরার আনাচে কানাচে। সেই অস্ত্রশস্ত্রের কিছু অংশ কি এতদিন ভাড়ার ঘরে পড়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই পাওয়াটা দরকার। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত যে তথ্যের পক্ষে সবচেয়ে বেশি দাবি দাওয়া উঠছে, তা হল এই অস্ত্রগুলো আসলে নাটকে ব্যবহৃত পপস। এই দাবিও এক্কেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, কারণ বালুরঘাটের নাট্য চর্চার অন্যতম একটা কেন্দ্র ছিল এই প্রাচ্যভারতী স্কুল।