পাথর বুকে ফুলে-ফেঁপে উঠছে জলহীন জয়ন্তী নদী, সমাধিস্থ হওয়ার পথে একটা সময়ের বাংলার গৌরব
হারিয়ে যাচ্ছে জয়ন্তী। আর সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে লাখ খানেক মানুষের সহায় সম্বল। প্রকৃতি রক্ষার নামে যে কর্মকাণ্ড এখন জয়ন্তীতে শুরু হয়েছে, তাতে সঙ্কটে শুধু মনুষ্য সমাজ নয়, এলাকার জীবজন্তু থেকে শুরু করে বনজ সম্পদ এবং হিমালয়।
জল নেই। নদীর গর্ভ নুড়ি-পাথর-বালি নিয়ে এতটাই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে যে নদী তীরবর্তী জনপদের সমান হয়ে গিয়েছে তার লেভেল। জল নেই, চারিদিকে শুধুই ডলোমাইটের স্তুপ আর রুক্ষ মরু প্রান্তর- জয়ন্তী নদীর এটাই এখন বৈশিষ্ঠ্য। ভুটান থেকে আসা জয়ন্তী নদীর এমনিতে জল ছিল একটা বড় সমস্যা। কারণ, ভুটান তাদের অংশে জয়ন্তী নদীর জলকে বহু বছর ধরে আটকে দিয়েছে। এমনকী শিবালিক রেঞ্জের এই অঞ্চলে বড় সমস্যা হল লাগাতার ধস এবং তাতে নদী গর্ভে এসে পড়া ডলোমাইট এবং পাথর। ভুটান নিয়মিতভাবে তাদের অংশে থাকা জয়ন্তী এবং তার উৎসস্থলে ডলোমাইটকে মাইনিং-এর মাধ্যে সরিয়ে গেলেও ভারতের অংশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাইনিং। ফলে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের অংশে থাকা জয়ন্তী নদীতে ডলোমাইট উত্তোলন বন্ধ। এতে নদী গর্ভের নাব্যতা কমতে কমতে এখন সমতল ভুমির উচ্চতায় চলে এসেছে, তেমনি ভুটানের থেকে ভারতের অংশে থাকা জয়ন্তীর নদী গর্ভ অনেক বেশি উঁচু হয়ে গিয়েছে। এর ফলে, বর্ষা ছাড়া অন্য কোনও সময় জল আসছে না জয়ন্তীতে। জোড়া পাহাড়ের ভিতর দিয়ে যে জল জয়ন্তী বয়ে নিয়ে আসছে তা নাব্যতার অভাবে গোড়ালি ডোবার মতো একটা সরু নালা হয়ে বয়ে যাচ্ছে। জয়ন্তীতে বসবাসকারীদের দাবি, জয়ন্তীতে জলের অভাবে পাহাড়ে ধসের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে জল না পেয়ে জীব-জন্তু থেকে পাখি, বনজ সম্পদ সব সঙ্কটে পড়েছে।