অযোধ্যার রাম-সীতা-লক্ষণ, অভাব-অনটনের দুনিয়ায় মালতি স্কুলে স্বপ্ন দেখছে জিলিংসেলিং

  • অভাব-অনাহার এখানে নিত্যসঙ্গী 
  • তবু এখন মনের জোরে এগিয়ে চলেছে জিলিংসেলিং
  • জিলিংসেলিং-কে এখন পথ দেখাচ্ছে মালতি-বাঙ্কা-ভরত
  • অযোধ্যা পাহাড়ে এরাই এখন যেন রাম-সীতা-লক্ষণ

/ Updated: Mar 16 2021, 09:11 AM IST

Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

বছর কুড়ির গৃহবধূ মালতি জিলিংসেলিং গ্রামের এই মুহূর্তে আত্মা। কারণ, উচ্চমাধ্যমিক পাশ মালতির হাত ধরেই এখন নিয়মিত প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে গ্রামের ১৩৫ জন শিশু। মালতির সঙ্গে এই স্কুল সমানভাবে চালাতে হাত লাগিয়েছে তাঁর স্বামী বাঙ্কা মূর্মূ এবং দেওর ভরত মূর্মূ। উচ্চমাধ্যমিক পাশ মালতি বিয়ের পর জিলিংসেলিং-এ এসে দেখেন এলাকার মানুষ শিক্ষার আলো থেকে কতটা দূরে পড়ে রয়েছে। কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দ্বারা পরিচালিত কিছু প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র আশপাশের গ্রামে থাকলেও তাতে গ্রামের শিশুদের কোনও লাভ হচ্ছে না। কারণ, গ্রামের অধিকাংশ শিশু নিজের নামটাও ঠিক করে বলতে পারে না। এমনকী, বড়দেরও একই সমস্যা। নিজের সন্তানের নাম খেয়াল করতেও তাঁদের অনেকবার ভাবতে হয়। যার ফলে জিলিংসেলিং গ্রামের মানুষ ঠিক করে এলাকার বাইরের কোনও মানুষের সঙ্গে ঠিক করে কথাও বলতে ভয় পায়। প্রবল লজ্জায় হয় তারা মুখ নামিয়ে নেয়, নাহলে পুরো বেবাক বোবা বনে যায়। নিজেদের অভাব-অনাহার-অভিযোগ ঠিকভাবে মেলেই ধরতে পারে না মানুষগুলো। অথচ জিলিংসেলিং-এর মানুষ দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে দু-পেট খাবারের জন্য। মালতির মনে জিলিংসেলিং-এর শিক্ষার এই অভাব খুব জোরেই আঘাত করেছিল। মালতি-র মতে, তাঁদের গ্রামেও গরিবি রয়েছে, অনুন্নয়ন রয়েছে, কিন্তু জিলিংসেলিং-এর গ্রামবাসীদের মতো তাঁদের মুখের ভাষা হারিয়ে যায়নি। লকডাউনে পরিস্থিতি চরম আকার নিয়েছিল। প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই স্বামী বাঙ্কা-র সঙ্গে পরামর্শ করে বাড়ির পিছনে টিলার উপরে স্কুল খোলে মালতি। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে স্বামী বাঙ্কা ও দেওর ভরত। বলতে গেলে অযোধ্যা পাহাড়ে এরাই এখন রাম-সীতা-লক্ষণ। আর রামায়ণের কাহিনির সঙ্গে জুড়ে থাকা অযোধ্যার নাম যেন এখানে সমার্থক হয়ে গিয়েছে।