কোটশিলায় নিখোঁজ একের পর এক গবাদি পশু, অবশেষে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ল আসল রহস্য

মাঝে মধ্যেই নিখোঁজ হতে তাকে গবাদি পশু বা হাঁসা-মুরগি। কখনও সখনও হাঁস-মুরগির পালক আর রক্ত মেলে। জঙ্গলে রয়েছে একাধিক বন্য প্রাণী- ভালুক থেকে শুরু করে হায়েনা, নেকড়ে, হাতি। কখনও সখনও মেলে বড় গবাদি পশুর হাড়-গোড়-কঙ্কাল। এভাবেই জঙ্গল ও জঙ্গলের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়েই সহবাস করে কোটশিলার মানুষ।

/ Updated: Mar 13 2022, 08:26 PM IST
Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

মাঝে মধ্যেই নিখোঁজ হতে তাকে গবাদি পশু বা হাঁসা-মুরগি। কখনও সখনও হাঁস-মুরগির পালক আর রক্ত মেলে। জঙ্গলে রয়েছে একাধিক বন্য প্রাণী- ভালুক থেকে শুরু করে হায়েনা, নেকড়ে, হাতি। কখনও সখনও মেলে বড় গবাদি পশুর হাড়-গোড়-কঙ্কাল। এভাবেই জঙ্গল ও জঙ্গলের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়েই সহবাস করে কোটশিলার মানুষ। তারা ধরেই নিয়েছে জঙ্গলের লাগোয়া এলাকায় এমন ঘটনা ঘটবেই। কিন্তু, চিন্তা বাড়িয়ে দেয় সম্প্রতি দ্রুত হারে বেড়ে চলা গবাদি পশুর নিখোঁজের ঘটনা। একটি মোষের খোবলানো দেহ দেখে গ্রামবাসীরা আর স্থীর থাকতে পারেনি। খবর যায় বনদফতরে। তাদের লাগানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় সামনে আসে ভয়ঙ্কর ছবি। এই সব গবাদি পশুর শিকারি আর কেউ নয়, একটি আস্ত চিতাবাঘ। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা পুরুলিয়ার কোটশিলার জঙ্গল এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করেছে। কাজ-কর্ম বন্ধ করে কার্যত ঘরে বসে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। পুরুলিয়ার কোটশিলায় ২০১৫ সালের ২০ জুন টাটুয়াড়া গ্রামে ঢুকে পড়ছিল একটি চিতাবাঘ। লোকালয়ে চলে আসায়  আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা ওই  চিতাবাঘটিকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর সাময়িক একটা বিরাম ছিল। কিন্তু বিগত দু'বছর ধরে কোটশিলা বনাঞ্চলের সিমনি বিটের সিমনি, জাবর, হরতান, কাঁড়িয়র বনাঞ্চল লাগোয়া গ্রামে একের পর এক গবাদি পশু হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে থাকে। ছাগল গাভীর এমনকি মহিষেরও হাড়-কঙ্কাল সহ দেহাবশেষ মিলেছে জঙ্গলের একাধিক জায়গায়। তবে এবার এই ঘটনার হার বেড়ে যাওয়াতেই সন্দেহটা বেড়ে গিয়েছিল। জেলা বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা জানিয়েছেন, চিতাবাঘটিকে ধরার চেষ্টা চলছে। রাজ্য  বন দফতরকেও বলা হয়েছে। চিতাবাঘটি ধরা পড়লে উত্তরবঙ্গের কোনও জঙ্গলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়েও কথা চলছে। যেখানে এই ঘটনা তার পাশেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড। অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে সিমনি জাবর নামে পরিচিত এই জঙ্গল ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত বিস্তৃত। কোটশিলা অঞ্চলও এই জঙ্গলের অধীনে। কিন্তু বেড়ে চলা জনবসতি এখানে জঙ্গলকে অনেকটাই ধ্বংস করেছে। এর জন্য অবশ্য বন্যপ্রাণের উৎপাত বেড়েছে এলাকায়।চিতাবাঘের ছবি-সহ অরণ্য ভবনে রাজ্য বন দফতরের অফিসেও রিপোর্ট করা হয়েছে। এখন চিতাবাঘটিকে খুঁজে পেতে ট্র্যাকস অ্যান্ড টেল অর্থাৎ ওই চিতাবাঘের পায়ের ছাপ, বিষ্ঠা, গতিবিধি, যাতায়াত, জল পান করার জায়গাকে সামনে রেখে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে বন দফতর। এর পুঙ্খনাপুঙ্খ রিপোর্ট চেয়ে পাঠাচ্ছে জেলা পুরুলিয়া বনদফতর। বন দফতর থেকে মাইকিং করে গ্রামবাসীদের জঙ্গলে যেতেও বারণ করা হচ্ছে।