মেধাবী স্কুল পড়ুয়ার পরীক্ষা নিতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডাক খোদ শিক্ষকদের
শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীর পরীক্ষা নিল স্কুল। স্কুলের প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্রীর পরীক্ষা নিলেন স্কুলের শিক্ষকরা। মালদহের কমলাবাড়ী হাইস্কুলের ঘটনা। অভাবের কারণে মাধ্যমিকের আগেই বিয়ে হয়ে যায় এই ছাত্রীর।
মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার পথে কেন্দ্রীয় সরকার। তখনই অবাক কান্ড মালদহের এক স্কুলে। মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় অনুপস্থিত স্কুলের "ফার্স্ট গার্ল"। খোঁজ নিতে বাড়ি গিয়ে স্কুলের শিক্ষকরা জানলেন বিয়ের খবর। শেষে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে এনে পরীক্ষায় বসানো হলো এই ছাত্রীকে। করোনাকালে লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুল। এই পরিস্থিতিতে বেড়েছে স্কুলছুট আর নাবালিকা বিয়ের মতো ঘটনা। সম্প্রতি, স্কুল খোলার পর এমন বহু ঘটনাই সামনে এসেছে। অন্যদিকে, মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করার পথে কেন্দ্রীয় সরকার। এনিয়েও দেশজুড়ে শুরু হয়েছে চর্চাও। এরইমধ্যে মালদহের কমলাবাড়ী হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং স্কুলের ফাস্ট গার্লের বিয়ে। স্কুলের প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্রীর বিয়ের খবর এতদিন অজানাই ছিল সকলের। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় মেধাবী ছাত্রীর অনুপস্থিতিতে। আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষায় যাকে ঘিরে স্কুলের আশা-আকাঙ্ক্ষা আর স্বপ্ন পূরণের ভাবনা, সেই কী না টেস্ট পরীক্ষায় গরহাজির ? প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকরা তাই খোঁজ করে পৌঁছে যান ছাত্রীর বাড়িতে। এরপর জানা যায়, স্কুল বন্ধ থাকায় কয়েক মাস আগে সম্বন্ধ করে গ্রামেই এক সহপাঠীর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রীর। খবর জেনে থেমে থাকতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপরই ছাত্রীর শশুর বাড়িতে পৌঁছে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। নতুন ছেলে- বউকে স্কুলে পাঠাতে আপত্তি জানায়নি পরিবার। শেষে স্কুলে নিয়ে গিয়ে আলাদা করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় ছাত্রীর। বিয়ের পরেও স্কুলে এসে পরীক্ষায় বসে খুশি মেধাবী ছাত্রী। শিক্ষকরা বাড়িতে গিয়ে পড়াশোনার কথা বলায় এখন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী সে। আর্থিক অনটনের জেরে পরিবার বিয়ে দিয়ে দেওয়াই আপত্তি করতে পারেনি এই স্কুল পড়ুয়া। তবে এখন শ্বশুরবাড়ির উৎসাহ পেলে পড়াশোনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় স্কুলের ফার্স্ট গার্ল এই পড়ুয়া। তাঁর চোখে ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন।