করোনা আবহে দিব্যি মেজাজে রয়েছে পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ের বাসিন্দারা, পুরুলিয়ার এই গ্রাম এখনও করোনামুক্ত

  • বিশ্বের অধিকাংশ স্থান এখন করোনাভাইরাসের প্রকোপে দিশেহারা
  • ঠিক তখন দিব্যি মেজাজে রয়েছে পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ের বাসিন্দারা
  • এখনও সেখানে নাকি করোনা দাঁতই ফোটাতে পারেনি
  • অযোধ্যা পাহাড়ে রয়েছে মোট ৮০টি গ্রাম
  • এর একটিতে এখনও পর্যন্ত করোনা প্রকোপের খবর মেলেনি

/ Updated: Jun 15 2021, 09:53 PM IST

Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

এখান থেকে অযোধ্যা এখন এক কিলোমিটার। করোনা অতিমারির মধ্য়ে আমাদের এখন গন্তব্যস্থল অযোধ্যা পাহাড়। পাহাড়ি রাস্তার আঁকা-বাঁকা পথ বয়ে উপরে ওঠা। মাঝে মাঝে শাল-পিয়ালের বন। সে সবকে রেখে আমরা পৌঁছলাম অযোধ্যার হিলটপে। বিশ্বের অধিকাংশ স্থান যখন করোনাভাইরাসের অতিমারির প্রকোপে দিশেহারা, ঠিক তখন দিব্যি মেজাজে রয়েছে পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ের বাসিন্দারা। এখনও সেখানে নাকি করোনা দাঁতই ফোটাতে পারেনি। কথা হচ্ছিল জেলিংসেলিং গ্রামের বাঙ্কা মূর্মূর সঙ্গে। তিনি জানালেন, অযোধ্যাবাসী বেশ সতর্কতার সঙ্গেই অতিমারির সক্রমণকে মোকাবিলা করছে। অযোধ্যা পাহাড়ে রয়েছে মোট ৮০টি গ্রাম। এর কোনও একটিতে এখনও পর্যন্ত করোনা প্রকোপের খবর মেলেনি। বলরামপুর থেকে ঝালদা। বাঘমুণ্ডী থেকে আড়শা, কোটশিলা--  মোট পাঁচটি ব্লক জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অযোধ্যা পাহাড়। অযোধ্যা পাহাড়ের  ওপরে ৮০টি গ্রাম-সহ অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েত নামে একটা গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে পাহাড়ের ওপরে। এছাড়াও ছোট ছোট ডুঙরি পাহাড়ের কোলে রয়েছে আরও ছোট ছোট কিছু গ্রাম। ঘন  অরণ্যের মধ্যে থাকা গ্রামগুলির প্রায় সবই আদিবাসী অধ্যুষিত। এক বছর ধরে এই এলাকায় নিরন্তর কোভিড নিয়ে সচতনতার প্রচার চালানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্য দফতর ক্যাম্প করে কোভিড পরীক্ষার ব্যাবস্থা করে। বিপুল সংখ্যায় পর্যটক এই পাহাড়ে বেড়াতে আসেন। তাদেরও কোভিড পরীক্ষা করা হয়। আদিবাসী জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং পরিচ্ছন্নতা এখানে করোনাকে জয়ী হতে দেয়নি বলে মত অযোধ্যা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ জয়ন্ত মাণ্ডী সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের। অযোধ্যা পাহাড়ের বাসিন্দা তথা জামঘুটু প্রাথমিক বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক কেদার সিং মুড়া-র মতে, সরকারি নির্দেশ মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার জন্যই করোনার প্রথম তরঙ্গ কাটিয়ে দ্বিতীয় তরঙ্গও কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। বাইরের লোক পাহাড়ে এলেও আমরা দূরে দূরে থেকেছি তার জন্যই এই অসাধ্য সাধন হয়েছে। উসুল ডুঙরি থেকে জিলিং সেরেঙ  ধান চাটানি, হেদেল বেড়া থেকে ছাতরা জেরা,সোনা হারা,সাপারাম বেড়া কিম্বা ডাকাই পাহাড়ের নীচে বহু দুর্গম গ্রাম এবং মাঠা পাহাড় থেকে অযোধ্যা কোলের দুয়ার সিনি সহ বহু প্রত্যন্ত গ্রাম আজও করোনা মুক্ত।যা সারা দেশ সহ পৃথিবীর কাছে মডেল।তাই তো অভিনেতা থেকে ভ্রমণ পিপাসু মানুষরা সুযোগ পেলেই এই ফাঁকে কাটিয়ে যাচ্ছে অযোধ্যা পাহাড়ে। আর লক ডাউন উঠে গেলে যখন ট্রেন পরিষেবা বা পরিবহন সম্পূর্ণ সচল হয়ে যাবে তখন যে অযোধ্যা পাহাড়ে তিল ধরার জায়গা থাকবে না সেটা মেনে নিচ্ছেন অনেক হোটেল এবং ট্যুর ট্রাভেলস সংস্থার মালিকরা।