সংক্ষিপ্ত

  • নন্দীগ্রাম আসনে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ইলেকশন পিটিশন দায়ের মুখ্যমন্ত্রীর 
  • এবার আরও চারটি কেন্দ্রের গণনায় কারচুপির অভিযোগ
  • বলরামপুর, বনগাঁ দক্ষিণ, গোঘাট এবং ময়না, এই চারটি কেন্দ্রের গণনায় কারচুপি
  • ওই চারটি আসনেই খুব কম ভোটে তৃণমূলকে হারিয়ে জিতেছে বিজেপি

নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আদালতে সেই মামলার শুনানি থাকলেও তা স্থগিত হয়ে গিয়েছে। আর এবার আরও চারটি কেন্দ্রে গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল তৃণমূল। বলরামপুর, বনগাঁ দক্ষিণ, গোঘাট এবং ময়না, এই চারটি কেন্দ্রের গণনায় কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর ওই চারটি আসনেই খুব কম ভোটে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে জিতেছে বিজেপি।

আরও পড়ুন- ' হাতির পিঠ থেকে দু-তিনটে পিঁপড়ে নামলে যায় আসে না', মুকুল ইস্যুতে বিস্ফোরক সায়ন্তন

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হয়েছিল ২ মে। রাজ্যে বিপুল ভোট পেয়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তারপর এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। আর এখন ভোটের গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলল রাজ্যের শাসকদল। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে হেভিওয়েট আসনগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল নন্দীগ্রাম। রাজ্যের পাশাপাশি ওই কেন্দ্রের দিকে নজর ছিল গোটা দেশের। কারণ সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁর একদা ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী। ফল ঘোষণার দিনও এই আসন নিয়ে উত্তেজনার পাদরদ ক্রমশ চড়ছিল। ভোটের ফল প্রকাশের দিন দেখা যায়, তুল্যমূল্য লড়াই হচ্ছে দু'জনের মধ্যে। কখনও মমতা এগিয়ে যান তো কখনও শুভেন্দু। একের পর এক কেন্দ্রের ফলাফল সামনে আসতে শুরু করলেও রাত পর্যন্ত নন্দীগ্রাম নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছিল না। সেখানে মমতা হেরেছেন না জিতেছেন তা বোঝা যাচ্ছিল না। এক সময় জানা যায় শুভেন্দুকে হারিয়ে নন্দীগ্রামে জিতেছেন মমতা। ভোটের ব্যবধান ১২০০। আরও কিছুটা সময় কাটার পর জানা যায় সেই আসনে মমতা হেরে গিয়েছেন। ১৯০০-র বেশি ভোট পেয়ে জিতেছেন শুভেন্দু। 

আরও পড়ুন- মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি, স্পিকারের কাছে আবেদন শুভেন্দুর

যদিও সেই ফলাফল মেনে নিতে পারেননি মমতা। নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার দাবিতে নির্বাচন কমিশনকেও চিঠি দিয়েছিল তৃণমূল। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ভোটগণনা চলাকালীন তা থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ফাঁকেই ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে। ভুয়ো ও বাতিল ভোটও বিজেপির হয়ে গোনা হয়েছে। ব্যালট বাক্স এবং ভোটগণনায় কারচুপি রয়েছে। পোস্টাল ব্যালটও ভুলভাবে গোনা হয়েছিল। যদিও পুনর্গণনার দাবি মানেনি নির্বাচন কমিশন। এরপরই সেই গণনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যান মমতা। 

আরও পড়ুন- মমতা বনাম শুভেন্দু হাইকোর্ট পর্ব, স্থগিত মহাগুরুত্বপূর্ণ নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি
 
এবারের নির্বাচনে পুরুলিয়ার বলরামপুরে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন শান্তিরাম মাহাত। যদিও সেখানে বিজেপি প্রার্থী বাণেশ্বর মাহাতর কাছে ৪২৩ ভোটে হেরে যান তিনি। এত কম ব্যবধানে হারার নেপথ্যে কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতের দারস্থ হন তিনি। এই কেন্দ্রে পুর্গণনার দাবি জানিয়েছেন। ১৫ জুলাই এই মামলার শুনানি। এছাড়া, বনগাঁ দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারের কাছে ২ হাজার ৪ ভোটে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী আলোরানি সরকার। গোঘাটে বিজেপি-র বিশ্বনাথ কারকের কাছে ৪ হাজার ১৪৭ ভোটে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী মানস মজুমদার। ময়নায় বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক ডিন্ডা তৃণমূলের সংগ্রামকুমার দলুইকে ১ হাজার ২৬০ ভোটে পরাজিত করেন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে রাজ্যে ভোট করানোর ফলে কারচুপি আটকানো গিয়েছে বলে আগে দাবি করেছিল বিজেপি। কিন্তু, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে মমতা হাইকোর্টে যাওয়ার পরই বিজেপির তরফে ২৯২টি আসনে ফের গণনার দাবি জানানো হয়েছে। তাদের দাবি, বেছে বেছে কয়েকটি আসনে নয় ২৯২টি আসনেই ফের ভোট গণনা করা হোক।