সংক্ষিপ্ত

  • একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র অন্যতম তারকা প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
  • বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
  • পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নতুন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছে বিজেপি 
  • বিজেপি এখানে রাজনীতির কোনও মুখ আনেনি

তাপস দাস: বেহালার অতি পরিচিত এক রাস্তার নাম বীরেন রায় রোড। বীরেন রায় ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটে বেহালা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি ছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রতিনিধি। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত বেহালা ছিল অবিভক্ত বিধানসভা কেন্দ্র। ১৯৬৭ সালের ভোটের সময়ে বেহালা পূর্ব ও বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র বিভক্ত হয়। 

আরও পড়ুন-'বক্ষ বিভাজিকা-নিতম্ব'-এর শরীরী উষ্ণতায় নয়, 'আম্মা'র ৯০-এ স্মৃতিতে নস্ট্যালজিক রাইমা...

অবিভক্ত বেহালা ও বেহালা পশ্চিম, এই দুই কেন্দ্রই ১৯৫১ থেকে শুরু করে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ছিল বাম দুর্গ। ১৯৭১-৭২ সালের ভোটেও এখান থেকে সিপিএম প্রার্থী জয়লাভ করেন। ২০০১ সাল এখানে পট পরিবর্তন হয়। বর্তমান মমতা সরকারের মন্ত্রিসভার দু নম্বর বলে পরিচিত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওই বছর প্রথম এ কেন্দ্রে তৃণমূলকে জেতান। সেই ট্র্যাডিশন ২০১৬ সাল পর্যন্ত অক্ষুণ্ণ থেকেছে। 

 

 

২০১১ সালে, সিপিএম পতন ও প্রথম তৃণমূল সরকার গঠনের বছরে এখানে সিপিএম প্রার্থী অনুপম দেবসরকারকে প্রায় গোহারান হারিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছিলেন পার্থ, সিপিএমের প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬৮, ৮৪৯ ভোট। সিপিএমের ভোটশেয়ার আগের ভোটের চেয়ে কমেছিল ১১.৫৪ শতাংশ, তৃণমূলের বৃদ্ধির হার ১০.৫৭ শতাংশ। 

তৃণমূল সরকারের ৫ বছরের শাসনকাল অতিক্রান্ত হবার পর ২০১৬ সালের ভোটে পার্থ চ্যাটার্জি জিতলেন বটে, কিন্তু তাঁর জয়ের ব্যবধান কমল অনেকটাই। সেবার তিনি পেলেন ১,০২,১১৪ ভোট। সিপিএমের কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায় পেলেন ৯৩ হাজার ২১৮ ভোট। ২০১১ সালের ভোটে যে সিপিএম এখানে ৩৩ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিল, ২০১৬ সালে তারাই পেল ৪০ শতাংশের বেশি ভোট। 

 

 

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময়ে কিন্তু বেহালা পশ্চিম বিধানসভার ভোটাররা একইরকম ছবি দেখালেন না। এই বিধানসভা কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেখানে প্রার্থী ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মালা রায়, বিজেপির চন্দ্রকুমার বোস, এবং সিপিএমের নন্দিনী মুখার্জি। বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তাঁদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা যথাক্রমে ৯১২১৬, ৭৫০৫১ এবং ৩২৭৯৪। অর্থাৎ, যে কেন্দ্রের ভোটাররা তিন বছর আগে সিপিএমকে ৯০ হাজারের বেশি ভোট দিলেন, তিন বছর পর লোকসভা ভোটে তাঁরা সেই সিপিএমের প্রার্থীকে দিলেন তার এক তৃতীয়াংশের কম ভোট। 

২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের সময়ে বিজেপি এখানে পেয়েছিল ৪ হাজারের কিছু বেশি ভোট। মোট ভোটের ২.০৯ শতাংশ। ২০১৬ সালে তারা পায় ১৭ হাজার ৯৬২ ভোট। ২০১৯ এর লোকসভা আসনে, আগেই দেখানো হয়েছে, এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি পায় ৭৫ হাজারের বেশি ভোট। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজেপি এখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নতুন স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছে, যা তৃণমূলেরই দেখানো। বিজেপি এখানে রাজনীতির কোনও মুখ আনেনি, তারা দাঁড় করিয়েছে চ্যাম্পিয়ন, গয়নার বাক্স খ্যাত অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী সিপিএমের নীহার ভক্ত। এই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ চতুর্থ দফায়, ১০ এপ্রিল।