সংক্ষিপ্ত

 

  •  ২০১১ সালে ব্রাত্য বসু ভোটে দাঁড়ালেন 
  • ব্রাত্যর পুরো নাম ব্রাত্যব্রত বসু রায়চৌধুরী 
  •  থিয়েটার পরিচালনা, নাটক- সবেতেই দক্ষ 
  •  শুধু পোক্তই নয়, পেয়েছেন প্রচুর স্বীকৃতিও 

তাপস দাশঃ- অশালীন, অরণ্যদেব - এসব ছিল সাড়া জাগানো নাটক, বাংলা গ্রুপ থিয়েটারের ইতিহাসে। তারপরও সাড়া জাগাবেন তিনি রঙ্গমঞ্চে, সিনেমার পর্দায়। অভিনয়ে, পরিচালনায়। সক্রিয় রাজনীতিতে যে তারই মধ্যে যোগদান করে ফেলবেন, সে কথা অনেকেই ভাবতে পারেননি। তিনি বামমনস্ক হিসেবেই ছিলেন পরিচিত, একইসঙ্গে ছিলেন সিপিএম বিরোধী। ফলে ব্রাত্য বসু ভোটে দাঁড়াবেন, এবং মন্ত্রী হবেন, এরকম ভাবনা খুব বেশি আমল পায়নি এক সময়ে। কিন্তু তেমনটাই হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্বের সংখ্যা হাতে গোণাই বলা যায়। সেই বিরল প্রজাতির মধ্যে ব্রাত্য বসু উজ্জ্বলতম। 

 

আরও পড়ুন, রাসবিহারী কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বালাকোট হামলার নেপথ্য নায়ক সুব্রত সাহা 

 

ব্রাত্যর পুরো নাম ব্রাত্যব্রত বসু রায়চৌধুরী। নিজেকে কেটেছেঁটে সহজ করে নিয়েছেন, ব্রাত্য বসু নামে পরিচিত হয়েছেন সর্বত্র। এবং তাঁর পরিচিতির গণ্ডি কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আটকে নেই। মঞ্চে অভিনয়, থিয়েটার পরিচালনা, নাটক লেখা তো ছিলই, ক্রমে সিনেমায় অভিনয় ও সিনেমা পরিচালনাতেও পোক্ত হয়ে উঠেছেন সিটি কলেজের এই বাংলার অধ্যাপক। শুধু পোক্তই নয়, স্বীকৃতিও পেয়েছেন। 

আরও পড়ুন, পয়লা বৈশাখের সকালে বর্ণাঢ্য 'মঙ্গল শোভা যাত্রা', শহরবাসীর সঙ্গে সামিল টালিগঞ্জের অভিনেতারাও 

 

নন্দীগ্রাম পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু মানুষ সিপিএম বিরোধিতার অবস্থান থেকে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন সংসদীয় রাজনীতিতে। পরিবর্তনের পোস্টারে তাঁদের মুখ দেখা যেত। ব্রাত্য বসু তাঁদের অন্যতম। ২০১১ সালে লেকটাউন কালিন্দির বাসিন্দা ব্রাত্য ভোটে দাঁড়ালেন। তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে। তাঁর বিরুদ্ধে নামলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা, নিউটাউন উপনগরীস্রষ্টা ও বিনা বাধায় জমি অধিগ্রহণের জন্য পরিচিত মন্ত্রী গৌতম দেব। বসিরহাট কেন্দ্র বদলে তিনি চলে এলেন দমদমে। প্রতিদিন তখন টেলিভিশনে প্রতিপক্ষকে তুড়ে দিচ্ছেন গৌতম। তাঁর সাংবাদিক সম্মেলন মানেই টিআরপি, ফলে লাইভ দেখানো হচ্ছে সে সব। 

আরও পড়ুন, পয়লা বৈশাখে কোভিডে ভয়াবহ সংক্রমণ বাংলায়, একদিনে আক্রান্ত প্রায় ৬ হাজার 

 

কিন্তু জনতা জনার্দন সে সব মানে নি। ভোটের ফলে দেখা গেল, চুটিয়ে হেরেছেন গৌতম। রাজনীতিতে নবাগত ব্রাত্য তাঁকে হারালেন ৩১ হাজারেরও বেশি ভোটে। ২০১১ সালের ভোটে রাজ্যের ২৬ জন মন্ত্রী হেরেছিলেন। গৌতম দেব তাঁদের অন্যতম। তারপর আর ভোটে লড়েননি তিনি। ব্রাত্য বসু জেতার পর মন্ত্রী হয়েছিলেন। গত ১০ বছরে তাঁর মত দফতর বদল সম্ভবত খুব মন্ত্রীরই হয়েছে। প্রথম মন্ত্রিসভাতেই তাঁকে স্কুলশিক্ষা দফতর দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সাল পর্যন্ত সে দায় সামলান ব্রাত্য। ২০১৪ সালে তাঁকে দেওয়া হয় পর্যটন দফতর। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সেই দফতরে থাকার পর, ২০১৬তে তাঁকে দেওয়া হয় তথ্য প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স দফতরের দায়িত্ব। ২০১৮ সালে ফের দফতর বদল হয় তাঁর। এবার পান বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও বায়ো টেকনলজির দায়িত্ব। 

 

২০১৬ সালে দমদম কেন্দ্রে কিন্তু অনেকটাই ব্যবধান কমেছিল ব্রাত্যের। সিপিএমের পলাশ দাসকে তিনি হারিয়েছিলেন ৯৩০০ ভোটে। এবারেও সেখানে ব্রাত্যর বিরুদ্ধে প্রার্থী সেই পলাশ দাস। আর অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির বিমলশংকর নন্দ, যিনি কিছুদিন আগে পর্যন্ত টেলিভিশনে তৃণমূলপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পলাশ ও বিমল- দুই কাঁটার বিরুদ্ধে তিনি যে জয়ী হবেন, সে ব্যাপারে ব্রাত্যর আত্মবিশ্বাসে অবশ্য ঘাটতি নেই। ১৭ এপ্রিল তাঁর পরীক্ষা।