সংক্ষিপ্ত
- ২০১১ সালে রাজনীতির আঙিনায় এসে ভোটে দাঁড়ান চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী
- ২০১১ সালে বারাসাত কেন্দ্র থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন চিরঞ্জিৎ
- ফেব্রুয়ারিতে ভোটে না দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলেও মমতা তাকে ছাড়েননি
- চিরঞ্জিতের ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১৭ এপ্রিল
তাপস দাস:'...,মা হারালে মা পাওয়া যায় না রে পাগলা'! ভোটের ডঙ্কা যখন বাজো বাজো, তখনই বলেছিলেন, আর নয়, এবার মুক্তি চান তিনি। আর প্রার্থী হতে চান না। মুক্তি মেলেনি। সভা-সমিতিতে, পাড়ার প্রচারে, শুরুর সংলাপটা এবারও বলে যেতে হচ্ছে চিরঞ্জিতকে। বাংলা বাণিজ্যিক ছবির নায়ক হিসেবে তিনি সর্বাধিক পরিচিত। সংবাদ পাঠক হিসেবে তাঁকে কম হলেও কিছু মানুষ চেনেন। তিনি যে একটি নামি পত্রিকায় চাকরি করেছেন, সে কথা অবশ্য হাতে গোনা মানুষজন জানেন। মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করার পর ভর্তি হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। আর্কিটেকচার পড়তেন। ফাইনাল পরীক্ষা দেননি। শেষ মেশ হয়ে গেলেন বাণিজ্যিক বাংলা সিনেমার নায়ক। অভিনয় করলেন বেদের মেয়ে জোসনা, পাপপুণ্যের মত ছবিতে। যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র পরে নিজের পরিচালক হয়ে গিয়ে বানাবেন বসতির মেয়ে রাধা, কেঁচো খুঁড়তে কেউটের মত সিনেমা।
১৯৮১ সালে প্রথম সিনেমার পর থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিক ছবির জগতেই ছিলেন তিনি। নতুন সহস্রাব্দে তাঁকে ব্রেক দিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। বাড়িওয়ালি ছবিতে। ২০১১ সালে তিনি যখন রাজনীতির আঙিনায় এসে ভোটে দাঁড়ালেন, সে সময়ে এত রুপোলি পর্দার ভিড় ছিল না এ জগতে। ১০ বছর পর পরিস্থিতি এতটাই পাল্টে গিয়েছে যে এখন পাড়ায় পাড়ায় টলিউডের প্রার্থী। গত মাসেই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন চিরঞ্জিৎ। বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ নেই বলেই টলিপাড়ার লোকজন দ্বিতীয় পেশা হিসেবে রাজনীতিতে পা রাখছেন। এক ধাপ এগিয়ে আরও বলেছেন, বলিউডের জন্য বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন এক দল, আর বাকিরা তৃণমূলে।
আরও পড়ুন-শহুরে ভোট ধরতে কৌশল বদল, কোন হাতিয়ার ভদ্র বাঙালীর মন জিততে চাইছে বিজেপি...
২০১১ সালে বারাসাত কেন্দ্র থেকে চিরঞ্জিৎ জিতেছিলেন ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে তাঁর জয়ের ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে। নিকটতম ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে তিনি হারিয়েছিলেন ২৫ হাজার ভোটে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোটে না দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু মমতা তাঁকে ছাড়েননি। হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুসারে চিরঞ্জিতের বয়স হল ৭০। বারাসাতে তাঁকে বহিরাগতই বলা চলে। তিনি রাসবিহারী কেন্দ্রের ভোটার। নিবাস সাদার্ন অ্যাভিনিউ। ওই হলফনামা থেকেই জানা যাচ্ছে তিনি সস্ত্রীক ৫ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার ধনসম্পদের মালিক। ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে সাড়ে ৪ কোটির বেশি টাকা। দুজনের সোনাদানা যা রয়েছে, তার বাজারদাম ২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৮৪৫ টাকা। ২০১৯ সালে একটি স্করপিও গাড়ি কিনেছিলেন এই নায়ক, যার এখন দাম ১৩ লক্ষ টাকার বেশি। ১৯৯২ সালে মেঘনাদ সাহা সরণিতে চিরঞ্জিৎ যে ফ্ল্যাট ৯ লক্ষ টাকায় কিনেছিলেন, তার দাম এখন ৫০ লক্ষ টাকা। চিরঞ্জিতের ভাগ্য নির্ধারণ হবে ১৭ এপ্রিল, শনিবার, রাজ্যের পঞ্চম দফা ভোটের দিন।