সংক্ষিপ্ত

  • ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রটি জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত
  • ২০১১ সালে এই আসনে জিতলেন তৃণমূল কংগ্রেসের গৌতম দেব
  • ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলেও আগের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি
  • ১৭ এপ্রিল পঞ্চম দফা নির্বাচনের দিন চাপে পড়া গৌতম আর চাপে থাকা শিখার লড়াই

তাপস দাস:  ক্রান্তি বিধানসভা আসন ছিল ২০০৬-এর ভোট পর্যন্ত। ডিলিমিটেশন কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক, ক্রান্তি বিধানসভার বিলোপ ঘটে। তৈরি হয় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা। 

শিলিগুড়ি পুরসভার ৩১ থেকে ৪৪ নং ওয়ার্ড, ডাবগ্রাম ১ ও ২ নং পঞ্চায়েত, ফুলবাড়ির ১ ও ২ নং পঞ্চায়েত নিয়ে তৈরি এই বিধানসভা। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রটি জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনের অন্তর্ভুক্ত। 

ক্রান্তি বিধানসভা আসনে ১৯৭৭ সালের পর থেকে সিপিএম কখনও হারেনি। ২০০৬ পর্যন্ত, মোট ৭টি বিধানসভা নির্বাচনে সুধন রাহা জিতেছিলেন ৪ বার। ২০০৬ সালে জিতেছিলেন ফজলুল করিম। ক্রান্তি বিধানসভা হারিয়ে গেল, এলাকা থেকে তলিয়ে গেল সিপিএম-ও। 

২০১১ সালে এই আসনে জিতলেন তৃণমূল কংগ্রেসের গৌতম দেব। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলেও আগের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি। ১১ সালে গৌতম দেব নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের দিলীপ সিংকে হারিয়েছিলেন ১১ হাজারের বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে গৌতম অনেকটাই বাড়িয়ে নেন জয়ের ব্যবধান। প্রায় ২৪ হাজার ভোটে ওই দিলীপ সিংকেই হারান তিনি। কিন্তু উল্লেখযোগ্য হল, সেবার তৃণমূলের ভোট ও ব্যবধান বাড়লেও, কমেছিল ভোটশেয়ার। প্রায় ১ শতাংশ ভোট হারিয়েছিল ক্ষমতাসীন দল। 

২০১১ সালের নির্বাচনে বিজেপির দুলালকান্তি দাস ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা থেকে পেয়েছিলেন ১০ হাজার ৬২৩ ভোট। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী বদল করে এখানে। রথীন্দ্র বোস পেয়েছিলেন ২৬ হাজার ১৯৫ ভোট। বিজেপির ভোটশেয়ার বেড়েছিল প্রায় ৬ শতাংশ। 

২০১৭ সালে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে দল বদল করে বিজেপিতে চলে আসেন একদা গৌতম দেবের ডান হাত বলে পরিচিত শিখা চ্যাটার্জি। তিনি ছিলেন মুকুল ঘনিষ্ঠ। এবার বিজেপি ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি থেকে তাঁকে টিকিট দিয়েছে। এর পরেই আদি বনাম নব্য লড়াই সামনে চলে এসেছে পদ্মশিবিরে। শিখাকে প্রার্থী পদ দেওয়ার পরেই বিজেপির পুরনো নেতা অলোক সেন দল ছেড়ে দেন ও নির্দল হিসেবে প্রার্থী হবেন বলে জানিয়ে দেন। এর পরেই তাঁর বাড়িতে পৌঁছন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রাজু বিস্তা। অলোককে বোঝানোর পরেও তিনি রাজি হননি। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দিয়ে দেন তিনি। পরে অবশ্য সে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। শিখার সম্পর্কে প্রচার, পঞ্চায়েত ভোটে নিজের বুথেও জিততে পারেননি তিনি।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির লিড ছিল ৮৬ হাজার ভোটের। সে কথা মাথায় রেখে গৌতম দেবকে অন্য আসন দিতে চেয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। গৌতম ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ছাড়েননি। কিন্তু চাপ যে তাঁর উপর প্রবল, সে নিয়ে সন্দেহ নেই, ফলে প্রচারে বেরিয়ে মেজাজ হারাচ্ছেন, তার ভিডিও প্রচারিত হচ্ছে, আরও চাপে পড়ছেন তিনি ও তাঁর দল।