সংক্ষিপ্ত
ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার ঢল নেমেছিল
এদিনই পুরোনো দলে ফিরতে চেয়েছেন সোনালী গুহ
আরও অনেক দলবদলুই নাকি ফিরতে চাইছেন
কিন্তু তৃণমূল কি ফিরিয়ে নেবে 'গদ্দার'দের
শনিবার সোশ্য়াল মিডিয়ায় চিঠি লিখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সোনালী গুহ। গত কয়েকদিন ধরে গ্রেফতার হওয়া নেতাদের নাম বলতে গিয়ে তৃণমূল নেতারা বাকিদের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়-এর নামও নিয়েছেন। তাতে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তবে কি ফের কাননের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে ঘাসফুস শিবিরের? তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এদিনই রাখ-ঢাক না রেখে বলেন, দলত্যাগী অনেকেই এখন ফিরতে চাইছেন। তবে এই বিষয়ে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তবে তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, 'গদ্দার' বা 'বিশ্বাসঘাতক', অর্থাৎ, ভোটের আগে টিকিট না পেয়ে বা ভুল করে বিজেপির জয়ের গন্ধ পেয়ে শিবির বদল করেছিল, তাদের মধ্য়ে যারা ফিরতে চান, তাদের বিষয়ে ২টি নীতি গ্রহণ করা হবে। যারা দলত্যাগ করেছেন, অথচ দলের বিরুদ্ধে বিশেষ কিছু বলেননি, বিজেপিতে গিয়েও চুপচাপ ছিলেন, তাদের দলে ফেরানো হতে পারে। আর যারা দ্রুত বিজেপি নেতাদের মন জয়ের লোভে একের পর এক প্রচার মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন তাদের কোনওভাবেই দলে ফেরানো হবে না। এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও এরকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সোনালী গুহ এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উদাহরণ দিয়েই বিষয়টা বোঝানো যায়। এবার তৃণমূলের টিকিট দেওযা হয়নি সাতগাছিয়ার ৬ বারের বিধায়ক সোনালী গুহকে। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর অভিমান করে তিনি দল ত্যাগ করেছিলেন এবং মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকী দিলীপ ঘোষকে প্রণাম করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে, তারপর থেকে বিজেপি তাঁকে প্রচারে বিশেষ ব্যবহার করেনি। সেটাই শাপে বর হয়েছে তাঁর পক্ষে। শনিবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, বিজেপি তাঁকে মমতার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে বলেছিল, তাতে রাজি হননি তিনি। এই ধরণের দলবদলু 'গদ্দার'দের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি।
অন্যদিকে শোভন চট্টোপাধ্য়ায় কিন্তু, বিজেপির কলকাতা জেলার পর্যবেক্ষক হওয়ার পর থেকে দারুণভাবে সক্রিয় ছিলেন পদ্ম শিবিরের কর্মসূচিতে। একইভাবে, গেরুয়া শিবিরের কর্মসূচিতে সদেখা যেত তাঁর বান্ধবী বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও। বৈশাখিকে প্রার্থী না করা এবং তাঁকে পছন্দের কেন্দ্র থেকে প্রার্থী না করার পর তাঁরা দুজনেই একসঙ্গে পদ্ম শিবিরও ছেড়েছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগণার একের পর এক সভা থেকে তাঁরা যুগবলে মমতার সমালোচনা করেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন, দুর্নীতি নিয়ে বিধেছেন তৃণমূলকে। গত কয়েকদিনে যাই ঘটুক, শনিবার, তাঁকে রাজ্য সরকারের নির্দেশে জোর করে এসএসকেএম হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বৈশাখি। অভিযোগ সত্যি-মিথ্যা যাই হোক, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের মতো 'গদ্দার'দের তৃণমূলে যে ঠাঁই হবে না, তা বোঝাই যাচ্ছে। তবে রাজনীতিতে সবই সম্ভব।