সংক্ষিপ্ত

  • ভোটবঙ্গে ক্রমেই চড়ছে নির্বাচনের পারদ
  • মুর্শিদাবাদে বিধানসভার বাসিন্দারা সরব দুই দাবিতে
  • দীর্ঘ দিনের জোড়া সেতুর দাবি জানাচ্ছেন সকলেই
  • ভোটে জিতলে আশ্বাস দিচ্ছেন সব দলের প্রার্থীরাই
     

মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে  নির্বাচনের আগে ভাগীরথীর উপর আমানিগঞ্জ-খোসবাগ সেতু নির্মাণ ও নসিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালুর জোড়া দাবিতে সরব হয়েছেন হেরিটেজ শহরের বাসিন্দারা। তাদের দাবি, আর প্রতিশ্রুতি নয়, এবার মানুষের দীর্ঘদিনের এই দু’টি দাবি পূরণে সদর্থক ভূমিকা নিক রাজনৈতিক দলের নেতারা। যদিও প্রচারে বেরিয়ে ভোটারদের নিজেদের মতো করে আশ্বস্ত করছেন সকলেই। ভাগীরথীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে জুড়ে দিতে নবাবি মুলুকের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে ওই নদীর উপর প্রায় ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের আমানিগঞ্জ-খোসবাগ সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই দাবিতে মুর্শিদাবাদ নগর উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে এক দশকের দীর্ঘ আন্দোলনের মাঝে রাষ্ট্রপতি, দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়া দিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার ও মুর্শিদাবাদ উন্নয়ন কমিটির মধ্যে বেশ কয়েকবার চিঠির আদান-প্রদান হয়। রাজ্য সরকারের নির্দেশে ফুটব্রিজ তৈরির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে বার কয়েক সার্ভেও হয়। কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে সার্ভের পরে কাজ আর এগোয়নি। 

অন্যদিকে, রেলপথে মুর্শিদাবাদ স্টেশনকে আজিমগঞ্জের সঙ্গে জুড়ে দিতে ১৯৯১ সালে নসিপুর রেলসেতুর দাবি ওঠে। ছয় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন,বিক্ষোভ ও অবরোধ চলে। অবশেষে ২০০১ সালের ২১ জুলাই নসিপুর রেলসেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয় ভারতীয় রেল দফতর। ২০০৫ সালে মাটি পরীক্ষা পর্ব শেষে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। ২০১০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা রেখে ২০০৬ সালে নসিপুরে ভাগীরথী নদীর উপরে রেলসেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেলসেতু নির্মাণের কাজ শেষ করে রেলসেতুর উপরে রেললাইন পাতার কাজও শেষ হয়। রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ রেলষ্টেশন থেকে আজিমগঞ্জ জংশন সাড়ে ৬ কিলোমিটার। এরমধ্যে মুর্শিদাবাদ ষ্টেশন থেকে নসিপুর পাঁচ কিলোমিটার। এই পাঁচ কিলোমিটারে মাটি ফেলার কাজ শেষ। এখন ডাস্টিং করে স্লিপার বিছিয়ে রেললাইন পাতার কাজ বাকি। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর তারিখ থেকে শুরু হয় মাহিনগর থেকে মাহিনগর দিয়ারচর পর্যন্ত ১ কিলোমিটারে মাটি ফেলার কাজ এবং রেলওয়ে ওভার ব্রিজ নির্মাণের কাজ। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাটি ফেলার কাজ চলে। কিন্তু কয়েকজন জমিদাতা আবার আন্দোলনে নামার কারণে ৭ ফেব্রুয়ারি কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে একাধিকবার কাজ শুরু হওয়ার কথা শোনা গেলেও কাজ এগয়নি। ফলে হাওড়া বা শিয়ালদহে না গিয়ে সরাসরি উত্তর ভারতে যাওয়ার মুর্শিদাবাদবাসীর স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। 

জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন, নসিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালু হলে মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীর আর্থিক উন্নতি হবে। পূর্ব রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে মুর্শিদাবাদ। ফলে এবারের মুর্শিদাবাদ  কেন্দ্রের মানুষ কোন প্রতিশ্রুতি নয়-কাজ চাই" ।মুর্শিদাবাদ নগর উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক আব্দুল রওফ বলেন, মুর্শিদাবাদ শহরে ভাগীরথীর দুই পাড়কে সেতু দিয়ে জুড়ে দেওয়া হলে পর্যটনের উন্নতি হবে"। এই যাবতীয় বিষয়ে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শাওনি সিংহরায় বলেন, ভোটের পর মানুষের দাবি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানাব। চেষ্টা করব সমস্যা সমাধান করার"। পাল্টা লালবাগ শহর কংগ্রেস সভাপতি অর্ণব রায় বলেন,"অধীর চৌধুরী রেল প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন কাজ  এগিয়েছিল। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরেই কাজ থমকে যায়। আগামীতে মানুষের দাবি নিয়ে পথে নামব"। বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, রাজ্যের মানুষ এবং মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দারা যদি আমাদের আগামী দিনে জেতান তাহলে অতি অবশ্যই এই দুই জ্বলন্ত ইস্যুকে আমরা সমাধান করার জন্য সমস্ত রকমের চেষ্টা করব"।