সংক্ষিপ্ত

  • আসানসোলের একটি স্কুলে অপরিচিত মহিলাকে দেখে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের
  • ছেলেধরা সন্দেহে ওই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করেন তাঁরা
  • আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করতে গিয়ে হিমশিম খান পুলিশকর্মীরা
  • ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের

কখন তো চোর, আর তো কখন আবার  ছেলেধরা। রাজ্যে স্রেফ সন্দেহের বশে নিরীহ মানুষদের গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে। এমনকী, দিন কয়েক আগে স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার গণপিটুনির শিকার হতে হয় এক গৃহবধূকেও।  ছেলেধরা সন্দেহে ফের এক মহিলাকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটল আসানসোলে।  এমনকী, পুলিশ যখন ওই মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশে। পুলিশের গাড়ি ঢুকে ওই মহিলাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে।  আসানসোল শহরের গড়াই রোডে রামসায়ের এলাকায় একটি বাচ্চাদের স্কুল চলে। স্কুলটি বেসরকারি, পড়ুয়া সংখ্যাও নেহাত কম নয়। রোজকার মতোই সকালে যথারীতি বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে এসেছিলেন অভিভাবকরা। তখন অভিভাবকদের কেউ কেউ লাল সালোয়ার পরে এক অপরিচিত মহিলাকে স্কুল চত্বরে ঘোরাফেরা করতে দেখেন বলে জানা গিয়েছে। প্রথমে অবশ্য বিষয়টি তেমন আমল দেননি কেউই। ভেবেছিলেন, ওই মহিলাও হয়তো কোনও শিশুকে স্কুলে পৌঁছে দিতে এসেছেন।  কিন্তু বেলার দিকেও ওই মহিলাকে স্কুল চত্বরে দেখে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। অনেকে আবার দাবি, অপরিচিত ওই মহিলার নাকি স্কুলে চত্বরে শিশুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, চকোলেট দিচ্ছিলেন। তাতে সন্দেহ আরও বাড়ে। মুখে মুখে খবর ছড়িয়ে পড়তেও সময় লাগেনি।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন অভিভাবকরা। তখন তিনি নিজেকে অভিভাবক বলেই পরিচয় দেন।  কিন্তু তাতে সন্দেহ তো যায়ইনি, উল্টে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ওই মহিলা  আদৌও অভিভাবক নন।  এরপরই ছেলেধরা সন্দেহে ওই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন আসানসোলের ওই বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা।  
ওও
এদিকে এই ঘটনার পেয়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। কিন্ত ততক্ষণে পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকর্মীদেরও। এমনকী, পুলিশের হেফাজত থেকে ওই মহিলাকে অভিভাবকদের একাংশ ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। কোনওমতে আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।  সূত্রের খবর,  তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারীদের ধারণা,  ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন।  তাঁর বাড়ির সম্ভবত রানিগঞ্জের কোলিয়াড়ি এলাকায়। কোনওভাবে সেখান থেকে আসানসোলে চলে এসেছেন তিনি। দিন কয়েক আগে মালদহে চোর সন্দেহে একটি যুবককে রাস্তায় ফেলে রীতিমতো গণধোলাই দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।  আসানসোলের কুলটিতেও  মোবাইল চোর সন্দেহে রাস্তায় গণপিটুনির শিকার  হতে হয় এক যুবককে।  ওই যুবককে উদ্ধারকে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।