সংক্ষিপ্ত

অগ্নিপথ বিক্ষোভে উত্তাল বিহার, মধ্যপ্রদেশ। এরমধ্যে বিহারে জম্মু-তওয়াই এক্সপ্রেসের দুটো কামরাতে বৃহস্পতিবার আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিক্ষোভ রয়েছে যুবকদের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিপথ নিয়োগ প্রকল্পে বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও বাড়ানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। 

 

অগ্নিপথ নিয়ে বিক্ষোভ এবার আঁছড়ে পড়ল পশ্চিমবঙ্গেও। যার জেরে শুক্রবার সকাল থেকে শিয়ালদহ উত্তর শাখায় রেল অবরোধের ঘটনা। বনগাঁর কাছে ঠাকুরনগরে রেল অবরোধ করে স্থানীয় যুবকরা। এর ফলে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় রেল চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সকাল ৭টা ৪৯ নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। অবরোধের জেরে আটকে পড়ে ডাউন বনগাঁ-মাঝেরহাট লোকাল। আপ লাইনেও গোবড়ডাঙা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল চালু রাখা হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। 

অবরোধকারীদের অভিযোগ, অগ্নিপথ প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে কৌশলে আসলে তাদের চাকরির মেয়াদ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এমনিতে সেনাবাহিনীতে সরাসরি নিয়োগ পেলে একজন অন্তত ১৫ বছর কাজ করার সুযোগ পায়। অথচ এই প্রকল্পে মাত্র ৪ বছরের কাজের সুযোগ মিলবে। এরপর এককালীন একটি অর্থ দিয়ে বিদায় জানানো হবে। কিছু সংখ্যক অগ্নিবীর এরপর সরাসরি বাহিনীতে কাজের সুযোগ পাবেন। বিক্ষোভকারীদের মতে এই প্রকল্প কোনওভাবেই মানা সম্ভব নয়। দিনের পর দিন তাঁরা ট্রেনিং করছেন সেনাবাহিনীতে নাম লেখাবেন বলে। অতিমারির জেরে তিন বছর হয়ে এল সেনাবাহিনীতে সরাসরি জওয়ান নিয়োগ হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মাত্র ৪ বছরের জন্য নিয়োগ পেলে কীভাবে তাঁরা ভবিষ্যত জীবনের আশা পাবেন, এমন প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা। 

জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারী যুবকদের অধিকাংশই বাহিনীতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন গত কয়েক বছর ধরে। নাসিরুদ্দিন নামে এক বিক্ষোভকারীর দাবি, অবিলম্বে অগ্নিপথ প্রকল্পের পিওডি বাতিল করতে হবে। এতদিন ধরে ট্রেনিং করে ৪ বছরের চাকরি তারা নেবেন না। তাঁর মতে, তাঁদের মতো ছেলেরা কেউ দুবাই বা অন্য কোথাও চাকরি করতে যাচ্ছে না, তাঁরা এক স্থায়ী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের সেবা করতে চাইছেন। সেখানে কীভাবে ৪ বছরের জন্য চাকরির মেয়াদ মেনে নেওয়া যায়। 

সাদ্দাম শেখ নামে এক যুবক জানিয়েছেন, তিনি ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে ট্রেনিং করছেন। সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়াই লক্ষ্য। কিন্তু, গত কয়েক বছর নিচুতলায় সেভাবে নিয়োগ হয়নি। এবার যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছিল, নিয়োগ শুরুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তখন অগ্নিপথ প্রকল্প আনা হল। ইতিমধ্যেই তাঁর বয়স বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সাদ্দাম। যেখানে বাহিনীতে সুযোগ পেলে ১৫ বছর সবেতন অন্তত কাজ করার সুযোগ রয়েছে সেখানে কেন এই সুযোগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রথম বছরে ৩০ হাজার টাকার মাইনে, দ্বিতীয় বছরে ৩৩ হাজার টাকা, চতুর্থ বছরে ৩৬ হাজার টাকা মাইনে এবং তারপরে ১১লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিয়ে বাইবাই করে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে। এমন প্রস্তাব মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। গরিবের ছেলেদের কাছে সেনাবাহিনীর চাকরি একটা আশার আলো। সেখানেও যদি এমন বৈষম্য হয় তাহলে তাঁরা কীভাবে নিজেদের পরিবারকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখাবেন। এমন প্রশ্নও করেছেন সাদ্দাম।