সংক্ষিপ্ত
এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে পূর্ব রেল জানায় লোকাল ট্রেন রাত দশটার পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরই মাঝে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে একই চিঠি দেওয়া হয়েছে কিনা তা এখনো নবান্ন ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয়নি।
লোকাল ট্রেন (Local Train) চালানোর সময়সীমা (Train Timing) পরিবর্তন করল পূর্ব রেল (Eastern Railways)। এক চিঠি মারফত জানানো হয়েছে সন্ধে সাতটা নয়, লোকাল ট্রেন চলবে রাত দশটা(10 PM) পর্যন্ত। নবান্ন থেকে পূর্ব রেলকে চিঠি দিয়ে রাত ১০টা অবধি ট্রেন চালানোর কথা জানানো হয়।
এর আগে সেই চিঠি পূর্ব রেলের হাতে এসে পৌঁছায়নি বলেই দাবি করেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগকারী আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী। তিনি জানান তার হাতে চিঠি এসে পৌঁছলে রাত ১০টা অব্দি পূর্ব রেলের সমস্ত লোকাল ট্রেন তারা চালাবেন। পরে এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে পূর্ব রেল জানায় লোকাল ট্রেন রাত দশটার পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরই মাঝে দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে একই চিঠি দেওয়া হয়েছে কিনা তা এখনো নবান্ন ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফ থেকে জানানো হয় নি।
জানানো হয়েছে যে কোনও প্রান্তিক স্টেশন থেকে রাত ১০টায় শেষ ট্রেন ছাড়বে। তারপর শেষ স্টেশনে পৌঁছাতে যেমন সময় লাগবে, সেই স্টেশনে পৌঁছাবে। এদিকে, সোমবার ট্রেন না পাওয়ায় যাত্রী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে হাওড়া স্টেশন চত্বর। সন্ধে সাতটায় শেষ লোকাল চলার ঘোষণা নবান্ন করলেও হাওড়ার দক্ষিণ পূর্ব রেলের হাওড়া খড়্গপুর শাখায় বিকেল পাঁচটার আগে থেকেই দেখা মেলেনি লোকাল ট্রেনের। কার্যত দিশেহারা হয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে নিত্যযাত্রীরা। নিউ কমপ্লেক্সের স্টেশন ম্যানেজার ঘর ও ডিআরএম অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগকারী আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
যাত্রীদের অভিযোগ নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চলছে না দক্ষিণ-পূর্ব শাখায়। পাশাপাশি ট্রেনের সংখ্যাও কম। ওই শাখাতে ট্রেনের যাত্রাপথের সময় সীমাও বদল করেনি রেল। স্বভাবতই হাওড়া স্টেশনে ভিড় জড়ো হতে থাকে। বাড়ি ফেরার উদ্বিগ্ন বাড়তে থাকে যাত্রীদের মধ্যে। সন্ধ্যা ৭টা অবধি ট্রেন চলার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না থাকায় যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সোমবার সকাল থেকেই হাওড়া, আন্দুল স্টেশনেও ভিড়ে ঠাসাঠাসি অবস্থায় যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। ৫০% যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন পরিষেবা দেওয়ার যে কথা নবান্ন থেকে বলা হয়েছিল। কার্যত বিশেষ কোভিড বিধির প্রথম দিনেই তা মুখ থুবড়ে পড়ে।
তাহলে কি যাত্রী বিক্ষোভের পরেই সিদ্ধান্ত বদলের ভাবনা এল রাজ্যের? নিত্যযাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন ? তাহলে আগে কেন তা ভাবা হল না। সোমবার বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রী অসন্তোষের ছবি চিন্তা বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। বেশ হয়রানিতেই পড়তে হয়ে নিত্যযাত্রীদের এদিন। ভাবনা চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফল কার্যত ভুগতে হল সেই সাধারণ মানুষকে।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের উপর ভরসা করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর অনেকদিন এই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার ট্রেন চালু করা হয়। আর রাজ্যে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে আবার ট্রেন চলাচলের উপর বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। সোমবার সন্ধে ৭টার পর থেকে আর কোনও লোকাল ট্রেন চালানো যাবে না বলে জানানো হয়।