সংক্ষিপ্ত
- আদালতের রক্ষাকবচেও নিস্তার নেই
- গ্রেফতার হলেন আরামবাগ টিভির সম্পাদক
- নিঃশর্তের মুক্তির দাবি এ রাজ্যের বিশিষ্টজনেদের
- পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা
'নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে আরামবাগ টিভি-এর সম্পাদককে।' এ রাজ্যে সাংবাদিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবার সরব হলেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, অপর্ণা সেন, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টজনেরা। বাদ গেলেন না পরিচালক অরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অশোকনাথ বসু, কার্টুনিস্ট অম্বিকেশ মহাপাত্রও। তাঁদের সাফ কথা, সফিকুল ইসলাম ও আরামবাগ টিভির আরেক এক সাংবাদিক সুরজ আলিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সংবিধান ও গণতন্ত্রের পক্ষে অশনি সংকেত।
ঘটনা ঠিক কী? এপ্রিল মাসে ইউটিউব চ্যানেল আরামবাগ টিভিতে ভিডিও ফুটেজ-সহ দেখানো হয়, লকডাউনের সময়েও থানা থেকে ক্লাবগুলিকে চেক বিলি করা হচ্ছে। বস্তুত, চাপের মুখে পড়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেয় পুলিশও। চ্যানেলের সম্পাদক সফিকুলের অভিযোগ ছিল, মানুষের সামনে পুকুর চুরি হওয়ার ঘটনা তুলে ধরায় পুলিশকে তাঁকে জেলে পাঠাতে চাইছে। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক নির্দেশ দিয়েছিলেন, আরামবাগ টিভির সম্পাদক শেখ সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু ঘটনা হল, অন্য একটি মামলায় রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্ত্রী আলিমা বিবি ও আরামবাগ টিভির সাংবাদিক সুরজ আলি খানকে।
কেন? জানা গিয়েছে, গাছ কাটা নিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সফিকুল ও সাংবাদিক সুরজের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন এক ব্যক্তি। অভিযোগকারীর দাবি, সুরজ তাঁকে হুমকি দেন, ৩০ হাজার টাকা না দিলে গাছ কাটার খবর ফাঁস করে দেবেন! তাঁর বক্তব্য, তিনি সুরজকে বলেছিলেন পঞ্চায়েতের নির্দেশে গাছ কাটছেন। তাও টাকা চাওয়া হয়। আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ধৃতদের আইনজীবী। সফিকুল, তাঁর স্ত্রী ও সাংবাদিক সুরজকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই ঘটনা নিয়ে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, 'সরকারি টাকা ভুয়ো ক্লাবগুলির মধ্যে বিলি করা তুলে ধরাতে সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার হয়েছে।'
এবার সেই পথেই হাঁটলেন এ রাজ্যের বিশিষ্ট জনেরাও। কী বলছেন তাঁরা? সব্যসাচী চক্রবর্তী, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনদের বার্তা, চুরি, ডাকাতি বা ধর্ষণের মতো কোনও গুরুতর অভিযোগ নেই। স্রেফ সরকারের কাজের সমালোচনার করার জন্য পুলিশ যে আচরণ করেছে, তা সংবিধান ও গণতন্ত্রের পক্ষে অশনিসংকেত। আগাম নোটিশ, এমনকী গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে সফিকুল, তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে। ওই দম্পতি ও আরেক সাংবাদিক সুরজ আলি খানকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে।