সংক্ষিপ্ত
আনারুল হোসেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা। বাগটুই হত্যাকাণ্ডের পরই তাকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে আনারুল। এই অবস্থায় তাকে নিয়ে লেখা একটি চিঠি জেলার রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়িয়ে দিয়েছে।
বীরভূম হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিধায়কের লেখা চিঠিই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে বীরভূমের রাজ্যরাজনীতিতেও তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার সামনে এসেছে বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও রামপুহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বন্দ্ব। চিঠি সামনে আসার পরই বীরভূম হত্যাকাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে চেয়েছেন। তবে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারও তিনিও জানিয়েছেন দলের সিদ্ধান্তই কার্যকর হয়েছে।
যাইহোক আনারুল হোসেনের গ্রেফতারের পরেই একটি চিঠি সামনে আসে। সেই চিঠিতে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সই রয়েছে। লেখা রয়েছে, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত যেন পদ থেকে না সরানো হয় আনারুল হোসেনকে। আনারুল হোসেন রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের সভাপতি। তাঁকে সেই পদেই রেখে দেওয়ার আর্জি ছিল আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। কিন্তু অনুব্রত জানিয়েছেন আনারুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তিনি পেয়েছিলেন। তাই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধেই পদে বাহাল রাখা হয়েছিল আনারুলকে। অন্যদিকে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি দল চেয়েছিল তাই এই সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার একটি চিঠি ভাইরাল হয়। গত বছরের ১০ জুন ওই চিঠিটি জেলা সভাপতিকে লিখেছেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে আনারুলকে পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত ব্লক সভাপতি পদে রাখার জন্য অনুব্রত মণ্ডলের কাছে লিখিত অনুরোধ করেছেন আশিসবাবু। এব্যাপারে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, "কিছু একটা খবর পেয়েছিলাম বলেই তাকে সরাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আশিসবাবুর অনুরোধে তাকে রেখে দিতে হয়। তাছাড়া বিধানসভা এলাকাটা আশিসবাবুই কন্ট্রোল করতেন। ফলে বিষয়টি তিনিই বলতে পারবেন"। অভিযোগ উড়িয়ে আশিসবাবু বলেন, "বিধানসভা নির্বাচনের পর একটা সাধারণ সব হয়েছিল। সেখানেই আনারুলকে সরানোর কথা বলে অনুব্রত। কিন্তু অঞ্চল সভাপতিরা অনুরোধ করেন এখনই কাউকে সরাবেন না। সেই জন্যই আমি চিঠি লিখেছিলাম। তবে আনারুল দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল কিনা বলতে পারব না"।
২১ মার্চ রাত্রে রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে খুন হন তৃণমূলের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখ। খুনের বদলা নিতে পুড়িয়ে মারা হয় এক শিশু সহ নয় জনকে। পুড়িয়ে মারার ঘটনায় নাম জড়ায় তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের। ২৪ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বগটুই গ্রামে গিয়ে আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ ওইদিনই তারাপীঠ থেকে আনারুলকে গ্রেফতার করে। তিনি এখন সিবিআই হেফাজতে।