সংক্ষিপ্ত

হেমতাবাদের বিধায়কের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে চলছে ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ

বিজেপির ডাকা এই বনধে একেবারে শুনসান উত্তর দিনাজপুর

কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বনধ সমর্থকদের

তবে মালদা-জলপাইগুড়িতে ববনধের প্রভাব পড়েনি বললেই চলে

 

হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায়, খুনের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধ ডেকেছে বিজেপি। এদিন উত্তর দিনাজপুর-জেলাসহ গোটা উত্তরবঙ্গজুড়েই বনধ পালিত হচ্ছে। তবে বিজেপির ডাকা বনধে এই বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গে। উত্তর দিনাজপুর কোচবিহারের মতো কিছু জেলায় বনধ অনেকটাই সফল হলেও মালদা, জলপাইগুরির মতো অনেক জেলায় আবার বনধের বিশেষ প্রভাব দেখা যায়নি। দু-একটি ছাড়া অপ্রীতিকর কোনও ঘটনার খবর এখনও নেই।

সোমবার সকালে উত্তরদিনাজপুরের হেমতাবাদের বালিয়ামোড় এলাকায় বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক বন্ধ দোকানের সামনে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃতদেহ। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। নিহত বিধায়কের পকেট থেকে সুইসাইড নোট মিললেও, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়ককে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এই 'খুনের' ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতেই মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।

উত্তর দিনাজপুরে বিজেপির ডাকা সেই বনধের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে। রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ সহ সমগ্র জেলাতেই পরিবেশ থমথমে। জেলায় কোথাও  খোলেনি কোনও দোকানপাট-হাটবাজার। রাস্তায় চলেনি বেসরকারি কোনও বাস-গাড়ি। সরকারি বাস চালানোর চেষ্টা করেছিল প্রশাসন, কিন্তু বনধ সমর্থকেরা সেই বাস আটকে দেয়। বিজেপির দাবি হেমতাবাদের বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে না পারায় স্বতঃস্ফূর্তভাবেই মানুষ উত্তরবঙ্গে বনধ পালন করছে। তাঁর অভিযোগ,  তৃনমূল কংগ্রেস সরকারই পুলিশ দিয়ে সরকারি বাস চালিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে।

সরকারি বাস চালানো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বনধ কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারেও। কোচবিহারের ঘুঘুমারিতে বনধ সমর্থকরা তিনটি সরকারি বাস ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। বেশ কিছু বনধ সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। লাঠিচার্জ করে বনধ সমর্থকদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। একই ছবি দেখা গিয়েছে আলিপুরদুয়ারেও। সেখানেও সরকারি বাস ও পণ্যবাহী গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা।

অন্যদিকে প্রায় বনধের প্রভাবহীন জলপাইগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালদা, বালুরঘাট। পুরাতন মালদার মঙ্গলবাড়ি এলাকায় বনধ সমর্থকরা পিকেটিং শিরি করেছিল। কিন্তু পুলিশ পরে সেই এলাকা থেকে বনধ সমর্থকদের সরিয়ে দেয়। একইভাবে জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, ধূপগুড়ি - কোথাওই বনধের সেইরকম প্রভাব পড়েনি। সরকারি বাস তো চলেইছে, দেখা গিয়েছে বেশ কিছু বেসরকারি যানবাহন-ও। দোকান-বাজারের ছবিটাও স্বাভাবিক।