সংক্ষিপ্ত

  • প্রকৃতি অকৃপণ ভাবে সাজিয়েছে সুন্দরী পুরুলিয়াকে
  • করোনাহীন পুরুলিয়া পর্যটকের অপেক্ষায়
  • পয়লা জুলাই থেকে খুলে যাচ্ছে হোটেল-হোম স্টে
  • নতুন করে জীবনে ফিরতে চাইছেন মানুষ 

বর্ষার সময় এক অন্য সাজে যখন সেজে উঠছে রাঙামাটি পুরুলিয়ার প্রকৃতি। তখন চলছে লকডাউন। বন্ধ হোটেল রিসোর্ট থেকে হোম স্টে।অযোধ্যা থেকে গড়পঞ্চকোট জয়চন্ডী থেকে মুরগুমা কিম্বা দুয়ারসিনি এক অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। অযোধ্যা ওঠার পাকদন্ডি রাস্তা যেন নতুন করে করা হয়েছে রঙ। বাগমুন্ডি বলরামপুর কোটশিলা ঝালদা যেকোন প্রান্ত থেকে বিস্তীর্ণ অংশে যতদূর দেখা যাচ্ছে নীল আকাশের ফাঁকে পেঁজা তুলার মত মেঘ আর চারপাশে সবুজ আর সবুজ। জলে ভেজা আঁকা বাঁকা পিচ রাস্তা আর গাছ গাছালি যেন ক্যানভাসে রং তুলি দিয়ে আঁকা ছবি। 

জঙ্গলের রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ নেই। পাখির কল কাকলি অনেক দূর থেকেও কানে ভেসে আসছে। কিন্তু এরকম একটি সময়ে যখন চারিদিকে সাজো সাজো রব। তখন চারিদিক সুনসান। কোন পর্যটক নেই। বাগমুন্ডির রাস্তার হোটেল, লোয়ার ড্যামের হোম স্টে, সব যেন চুপচাপ, নীরব। এমন সময় যেন অযোধ্যা পাহাড় পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষায়। 

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের প্রকোপ ক্রমশ নিম্নমুখী পুরুলিয়ায়। অযোধ্যা পাহাড়ে নেই সংক্রমণ। আগামী ১লা জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে পুরুলিয়ায় হোটেল হোম স্টের বুকিং। পুজোকে সামনে রেখে পর্যটন ব্যাবসা চাঙ্গা করতে মরিয়া পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পর্যটন কেন্দ্র চালু করার এখনো সরকারিভাবে আসেনি কোন নির্দেশিকা। তবু জুলাই মাস থেকেই চালু হবে এই আশায় বুক বাঁধছে পর্যটন শিল্পের সাথে যুক্ত বহু মানুষ। করোনার প্রথম তরঙ্গ কাটিয়ে পর্যটন ব্যাবসা পথচলা শুরু করতেই আবার দ্বিতীয় তরঙ্গ থাবা বসায় জেলায়। এপ্রিল মাসের শেষ দিক থেকে আবার লক ডাউন শুরু হয়।ঝাঁপ বন্ধ হয় পর্যটন ব্যাবসার।

 দ্বিতীয় তরঙ্গের প্রকোপে বেশ কাবু হয়েছিল পুরুলিয়া জেলা। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত এই দুই মাসে হু হু করে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। পুরুলিয়া সদর শহর থেকে কুড়িটি ব্লকেই সেই সময় যেন করোনার গ্রাফ বাড়ার প্রতিযোগিতা চলছিল। প্রতিদিন আসছিল মৃত্যুর খবর। অবশেষে মে মাসের শেষ থেকে স্বাভাবিক হয় এই জেলার করোনার গ্রাফ। 

প্রতিদিন যেখানে শতাধিক করোনা সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছিল মে মাসের শেষের দিকে তা দাঁড়ায় দুই অঙ্কে। জুন মাসে তা আরো তলানিতে। এখন করোনা সংক্রমনের সংখ্যা প্রতিদিন তিন থেকে চার বা বড় জোর দশে ঠেকেছে। যা বেশ খুশির খবর। পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান সত্যিই খুশির খবর যে পুরুলিয়া জেলায় করোনাগ্রাফ একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। কিন্তু আমাদেরকে আরো সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এমন কিছু করবো না যার জন্য আবার সেই যেন এপ্রিল মাসের চিত্র ঘুরে দেখতে হয়। 

অযোধ্যা পাহাড় কোলের লোয়ার ড্যাম এর কাছে আরণ্যক হোম স্টের কর্ণধার জনার্দন মাহাতো জানান, করোনার জন্য প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবু চাই সব কিছু নতুন করে শুরু হোক। অযোধ্যা পাহাড় সহ রাঙা মাটির প্রকৃতি বর্ষায় সেজে উঠেছে। সামনেই পুজো। পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে রাঙামাটি। আমরা দূরদূরান্তের পর্যটকদের স্বাগত জানাই। বর্ষার সময় এক অন্যরূপে অযোধ্যাকে অনুভব করুক পর্যটকরা। 

পুরুলিয়া হোটেল ওনার্স সংগঠনের প্রেসিডেন্ট তথা রাজ্য পর্যটন দপ্তরের সদস্য মোহিত লাটা জানান, করোনার কারণে পর্যটন ব্যবসার যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা বলে বোঝানোর নয়। এই ব্যবসার সাথে ড্রাইভার কুকার সহ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বহু লোক নিযুক্ত। আজ তাদের কাজ নেই।চরম আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে। আবার নতুন করে হোটেল-রিসোর্ট শুরু হচ্ছে।বর্ষার সময় পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এক অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে পর্যটকরা পুরুলিয়া এলে যেমন এক অন্য রকম অনুভূতি পাবেন।সে রকম চাঙ্গা হবে পুরুলিয়ার পর্যটন শিল্পও।