সংক্ষিপ্ত
শনিবার বিশালাকৃতি বিরল প্রকৃতির বিষধর 'জোড়া' চন্দ্রবোড়া সাপ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মুর্শিদাবাদের কাঞ্চনতলা এলাকার জে ডি জে ইনস্টিটিউশন চত্বরে। সাপ উদ্ধারে খবর চাউর হতেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়।
শীত পড়লেও গ্রাম বাংলায় এখনও কমেনি সাপের উপদ্রব। এবার সেই নজিরই দেখা গেল মুর্শিদাবাদে। শনিবার বিশালাকৃতি বিরল প্রকৃতির বিষধর 'জোড়া' চন্দ্রবোড়া সাপ উদ্ধারের(Snakes rescued from school) ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মুর্শিদাবাদের(Murshidabad) কাঞ্চনতলা এলাকার জে ডি জে ইনস্টিটিউশন চত্বরে। সাপ উদ্ধারে খবর চাউর হতেই ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়। এমনকী সাপ দেখে হুড়োহুড়িও পড়ে যায়। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে(Forest Department)। বনকর্মীরা গিয়ে একটি নয়, জোড়া সাপ উদ্ধার করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনাপ ফাঁসে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল রাজ্যের সমস্ত স্কুল। তাই নতুন নির্দেশিকা মেনে স্কুল খোলার আগে প্রশাসনের তরফ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই পরিষ্কার করা হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। মুর্শিদাবাদেও দেখা যায় একই চিত্র। কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুল প্রাঙ্গনেই বাসা বেঁধেছে বিষধর সরীসৃপেরা। সেই দৃষ্টান্তই দেখা গেল কাঞ্চনতলা জে ডি জে ইনস্টিটিউশনে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুরাতন ভবনের পিছনে প্রথমে একটি বিশালাকৃতি বিষধর সাপ দেখতে পায় পড়ুয়ারা। ভয়ে আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে দেয় অনেকে। ছুটে আসেন স্কুলের কর্তাব্যক্তিরা। মুহূর্তেই জড়ো হয়ে যায় এলাকার লোকজনও।
আরও পড়ুন- লটারির টাকায় রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেল রাজমিস্ত্রী, প্রাণভয়ে আশ্রয় থানায়
এদিকে সাপটি যে কোনও বিশেষ প্রজাতির তা তার আকার আকৃতি দেখে প্রথমেই আন্দাজ করেছিল স্থানীয়রা। আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরে। খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বন দপ্তরের কর্মীরা। একটি নয়, পরপর দুটি বিশালাকৃতি বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ উদ্ধার করেন তারা। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বনদপ্তরের আধিকারিক ইরফান আলি বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি জীবিত সাপ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিক পরীক্ষা নীরিক্ষার পর সাপ দুটিকে বাগদাবড়া ফরেস্টে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন- কৃষক আন্দোলনে তৃণমূলের ‘কৃতিত্ব’ নিয়ে প্রশ্ন, মমতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তোপ অধীরের
বাগদাবড়া ফরেস্টের আধিকারিক প্রভাসচন্দ্র মণ্ডল জানান, উদ্ধার হওয়া দুটি চন্দ্রবোড়া সাপই পূর্ণবয়স্ক। একটি লম্বায় চার ফুট। অপরটি পাঁচ ফুট। স্কুল চত্বরে আরও কোনও চন্দ্রবোড়া বাসা বেঁধে রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বনদপ্তর সূত্রে খবর। কাঞ্চনতলা জে ডি জে ইনস্টিটিউশনের প্ৰধান শিক্ষক আবদুল হাই মাসুদ রানা রহমানের কথায়, “আমাদের অনুমান দীর্ঘদিন ধরেই এখানেই সাপ দুটি এখানে ছিল। স্কুল বন্ধ থাকায় এতদিন নজরে পড়েনি। বন দপ্তরের পাশাপাশি আমরাও নিজেদের উদ্যোগে আগামী দিনে পুরো নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করব"। অন্যদিকে বিষধর উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল শেখ, বাবর আলীরা বলেন,"সচরাচর শীতের মধ্যে সাপ তার বাসস্থান থেকে খুব একটা বাইরে বের হয় না, এদিন হঠাৎই বের হতেই সকলের নজরে আসে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই বিড়ল প্রজাতির চন্দ্রবোড়া সাপ দুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হওয়ায় আমাদের সঙ্কট অনেকখানি কেটে গেল"। এদিকে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এই জাতীয় বিরল প্রজাতির সাপ সহ অন্যান্য সাপের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা একই সাথে প্রকৃতির স্বার্থে সাপের প্রজাতিকেও টিকিয়ে রাখার জন্য ওই এলাকাতে 'ক্রেট করিডোর ফেন্সিং' ব্যবহার করা শুরু করেছে বন দপ্তর।